ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

ঈদকেন্দ্রিক পণ্যের বাজার চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৯ জুন ২০২২, বুধবার
mzamin

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন দেশে চলমান বন্যার অজুহাতে কয়েক দফায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এবার ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক সরবরাহ সংকটসহ বিভিন্ন অজুহাতে খুচরা ও পাইকারি বাজারে বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। উৎসবকে কেন্দ্র করে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট চক্র। এরইমধ্যে কারসাজি করে বাড়িয়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম। এতে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চাল, ভোজ্য তেল, আদা-পিয়াজসহ মসলাজাতীয় পণ্য ও মাংসের দাম বেড়েছে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে ভোক্তাদের। বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির ঈদকে ঘিরে হঠাৎ করেই বেড়েছে সব ধরনের মসলার দাম। বাজার মনিটরিং জোরদার না হলে সামনের দিনগুলোতে মসলা পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন তারা। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে ১৬ পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি চাল খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ১৪.২৯ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

পাশাপাশি প্রতি কেজি আটা ৭.১৪ শতাংশ, ময়দা ৩.৮৫ শতাংশ, প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন তেল ২.৫৩ শতাংশ, প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল ৩.৯২ ও মসুর ডাল ৪ শতাংশ, আলু ২৭.৯১ শতাংশ, দেশি ও আমদানি করা পিয়াজ ১৮.৭৫ ও ২১ শতাংশ, শুকনা মরিচ ১০.৬৪ শতাংশ, হলুদ ২৭.৭৮, আদা ৮.৩৩ শতাংশ, তেজপাতা ১২.৯০ শতাংশ, দেশি মুরগি ১.৯০ শতাংশ, গুঁড়া দুধ ৬.৪৩ শতাংশ, চিনি ৩.৮০ শতাংশ ও ফার্মের ডিম ১.২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে। মালিবাগ কাঁচাবাজারের চাল বিক্রেতা দিদার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকা, যা এক মাস আগে ৪৫-৪৮ টাকা ছিল। বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা, যা আগে ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৭০-৭২ টাকা, যা আগে ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা, যা এক মাস আগে ৭৫ টাকা ছিল। এছাড়া পোলাওয়ের চালের দাম বেড়েছে। 

মাসের ব্যবধানে ১৫ টাকা বেড়ে ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, এবার ঈদ ঘিরে মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে।  কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পণ্যের দাম কমানোর হিড়িক পড়ে। কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন। এখানে ভোক্তাকে জিম্মি করে বাড়তি মুনাফা করতে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এছাড়া অসাধুদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। তাই বারবার অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই তারা সাহস পাচ্ছে।  এদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতল ও খোলা সয়াবিন নির্ধারিত দরে বিক্রির কথা থাকলেও কেউ ওই দামে তেল বিক্রি করছেন না। খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকা, যা আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।  মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্যাকেটজাত আটা ৫৫ টাকা এবং কেজিতে দুই টাকা বেড়ে প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল ৭০, কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ছোট দানা মসুর ডাল ১৩৫, কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পিয়াজ ৫০ এবং কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে আমদানি করা পিয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে শুকনা মরিচ ৩০০, ৪০ টাকা বেড়ে হলুদ ২৪০, আদা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০, তেজপাতা কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ২০০, দেশি মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ৫৫০-৫৭০ এবং চিনি কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়ে ৮৪-৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ২০ টাকা বেড়ে আমদানিকৃত আদার কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০-১২৫ টাকায়। এছাড়া কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে জিরা ও দারুচিনির দাম বিক্রি হয়েছে ৪০০-৫০০ টাকার মধ্যে। কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা শাকিল বলেন, ঈদ ঘিরে নতুন করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status