শেষের পাতা
বিএনপি’র নিখোঁজ ২ নেতার সন্ধান মিললেও রহস্য কাটেনি
প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, শনিবারবগুড়া বিএনপি’র দুই নেতা ‘গুম’ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর সন্ধান মিললেও রহস্য কাটেনি এখনো। কারও সঙ্গেই বিস্তারিত কথা বলছেন না তারা। কে তাদের তুলে নিয়েছিল, কোথায় ছিলেন, কেমন ছিলেন কিছুই বলছেন না। তাদের মধ্যে অস্বাভাবিক ভয় কাজ করছে। একজন বাড়িতে অবস্থান করলেও অপরজন স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা করে আবার গা ঢাকা দিয়েছেন। দুই নেতার একজন কাহালু উপজেলা বিএনপি’র সহ-দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। তিনি উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের ভোলতা দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত আজিজার রহমানের ছেলে ও সাবেক ইউপি সদস্য। এছাড়া আনোয়ার আরডিএ’র একটি প্রকল্পের ফিল্ড অফিসারের দায়িত্বে আছেন। অপরজন দেলোয়ার হোসেন। তিনি উপজেলা বিএনপি’র ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক।
গত ১৪ই ডিসেম্বর বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখান থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আনোয়ারকে তুলে নেয়া হয়।
প্রায় দুই সপ্তাহ পর দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেনের সন্ধান মিললো। তবে নিরাপত্তার কারণে লোকসমাগমে আসছেন না তারা। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে আনোয়ার হোসেন নিজ বাড়িতে ফেরেন। আর দেলোয়ার হোসেন গতকাল রাতে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আবার গা ঢাকা দিয়েছেন।
আনোয়ারের ভাতিজা নূরনবী বলেন, চাচা মুখ খুলছেন না। কোনো কিছুই বলছেন না। অনেকটা বোবার মতো হয়ে আছেন। কারও কথাতেই সায় দিচ্ছেন না। তবে তিনি সুস্থ আছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর ৫টার দিকে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। তারপর থেকে তিনি ঘুমাচ্ছেন। ঘর থেকেও বের হচ্ছেন না। অপরদিকে, দেলোয়ারের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বুধবার রাত ৯টার দিকে বাবা আমার মায়ের মোবাইলে কল দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, চিন্তার কিছু নেই। পরে বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় এসে শুধু মায়ের সঙ্গে দেখা করে শীতের পোশাক নিয়ে যান। তিনি পুলিশের ভয়ে এখনো বাসায় আসছেন না।
বগুড়ার কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, নিখোঁজ দুই ব্যক্তির মধ্যে আনোয়ার তার বাড়িতে ফিরেছেন বলে অবগত হয়েছি। তবে দেলোয়ারের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, আনোয়ারের পরিবারের লোকজন যেমন বলছে, আনোয়ার বাড়িতে ফিরেছেন। কিন্তু দেলোয়ারের পরিবার থেকে বলা হয়েছে তারা তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছে। দু’টা তো দুই জিনিস।
দুই নেতা গুম হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত ২০শে ডিসেম্বর। ওইদিন দুই পরিবারের স্বজনরা বগুড়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি সাংবাদিকদের অবগত করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, ১৪ই ডিসেম্বর বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখান থেকে ডিবি পরিচয়ে আনোয়ারসহ কয়েকজনকে তুলে নেয়া হয়। পরে তাদেরকে দুপচাঁচিয়া সদরে নিয়ে এসে ফোনে দেলোয়ারকে তুলে নেয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। আদালত রুল জারি করেন এবং তাদের অবস্থান জানানোর নির্দেশ দেন।
যখন বুঝবে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে তখন মরন কামড়ে তারা ১৪ ডিসেম্বর ঘটাবে ।