শরীর ও মন
চুলের প্রতিস্থাপন করার আগে যে বিষয়সমূহ জানা প্রয়োজন
অধ্যাপক ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, বুধবারচুল পড়ার কারণসমূহ
সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় হয়নি।
তবে
* জেনেটিক বা পারিবারিক ইতিহাস।
* অনুপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস।
* মানসিক চাপ।
* দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা।
* হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
* ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে দায়ী করা হয়।
কাদের জন্য হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট
* সাধারণত যেসব পুরুষের পুরুষ প্যাটার্ন টাক আছে।
* যেসব নারীর অতিরিক্ত চুল পড়া বা চুল পাতলা হওয়ার সমস্যা রয়েছে।
* মাথার ত্বকে আঘাতের কারণে চুল পড়ে গেছে এমন ব্যক্তিরা।
* যারা স্থায়ী টাকের অধিকারী।
* যারা চুল না থাকার কারণে ভীষণ মানসিক টেনশনে আছেন।
* যারা বাজার থেকে কেনা চুল আঠার মাধ্যমে লাগিয়ে ত্বকে ইনফেকশন করে ফেলেছেন।
যেসব ব্যক্তির চুল প্রতিস্থাপন বা ট্রান্সপ্লান্ট করতে মানা
* যাদের দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের কারণে চুল পড়ে গেছে বা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন।
* যে মহিলাদের চুল পড়ার ধরনে রয়েছে যা পুরো মাথা বা মাথার ত্বকে বিস্তৃত।
* ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতির জন্য যাদের মাথার পেছনের সাইটে বা অন্য জায়গায় পর্যাপ্ত চুল নাই।
* আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরে মাথার ত্বকে পুরু ফাইব্রাস কেলয়ডের দাগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের আগে পদক্ষেপসমূহ বা করণীয়
* হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন রোগীর প্রত্যাশা এবং পছন্দ নিয়ে আলোচনা করবেন, তাদের সর্বোত্তম পরামর্শ দেবেন।
* ফলিস কপি পদ্ধতির আগে চুলের ঘনত্ব অ্যাক্সেস করতে এবং প্রতিস্থাপনের পরে পদ্ধতির ফলাফল জানার জন্য করা হয়।
* চুল প্রতিস্থাপনের ফলাফল উন্নত করার পদ্ধতির আগে রোগীদের ট্রপিক্যাল মিনোক্সিডিল এবং ভিটামিন বা পিআরপি থেরাপি দেয়া যেতে পারে।
* ট্রান্সপ্লান্ট ব্যর্থতা রোধ করতে অ্যালকোহল এবং ধূমপান বন্ধ করতে হবে।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের আগে যা করণীয়
মাথার ত্বক জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।
মাথার যে অংশে চুল প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াটি করা হবে সেটিকে অসাড় করার জন্য স্থানীয় অ্যানেস্থেসিয়া দেয়া হয়।
চুল প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিসমূহ
(১) ফলিকুলার ইউনিট ট্রান্সপ্লান্টেশন (FUT)
এই পদ্ধতিতে, সার্জন মাথার পেছন থেকে চুলসহ মাথার ত্বকের একটি ফালা কেটে ফেলেন বা কেটে নিয়ে আসেন। সার্জন মাথার ত্বকের এই সরানো ছোট অংশটিকে টাক স্থানে প্রতিস্থাপন করে দেন।
(২) ফলিকুলার ইউনিট এক্সট্রাকশন (FUE)
এই পদ্ধতিতে মাথার পেছন থেকে চুলের ফলিকলগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে তুলে নিয়ে আসা হয় এবং পরে চুল প্রতিস্থাপনের জায়গায় চুলগুলো স্থাপন করা হয়। এক সেশনে শত শত থেকে হাজার হাজার চুল প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিস্থাপিত চুলগুলো নিরাময়ের জন্য ও রক্ত শোষণের জন্য কিছুদিনের জন্য মাথার ত্বকে ব্যান্ডেজ স্থাপন করা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ৪-৬ ঘণ্টা সময় নিতে পারে। অস্ত্রোপচারের বা চুল প্রতিস্থাপনের ১০ দিন পরে সেলাইগুলো সরানো হয় বা ব্যান্ডেজ খোলা হয়।
প্রতিস্থাপনের পর করণীয়
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করার পর চিকিৎসকরা কিছু ওষুধ দিয়ে থাকেন। মূলত ক্ষত শুকানো ও ব্যথা লাঘব করার জন্য।
চুলের পুনঃবৃদ্ধি করতে চিকিৎসক মিনোক্সিডিল, ফিনাস্টারাইড বা কিছুদিন পর থেকে পিআরপি থেরাপি দিয়ে থাকেন। আধা ভেদ যোগ্য ড্রেসিং স্থাপন করা হয়, যা রক্ত তরল সহজে নিঃসরণ হয়, যা প্রতিদিন পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিস্থাপিত স্থান অবশ্যই রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে এবং নিয়মিত শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। চুল প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচারের ৩-৪ দিন পরে সাধারণত স্বাভাবিক কাজ করা যায়।
লেখক: চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ (সাবেক) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার, ফার্মগেট, ঢাকা। প্রয়োজনে: ০১৭১১-৪৪০৫৫৮।