বাংলারজমিন
ফুলগাজীতে বন্যায় ভেঙে গেছে গ্রামীণ সড়ক, ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ
ফেনী প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২২, শুক্রবারফেনীর ফুলগাজীতে নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যার পানি নামতে শুরু করলে ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হচ্ছে। তীব্র পানির স্রোতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে গ্রামীণ সড়ক। ব্যাহত হচ্ছে দু’চাকা থেকে শুরু করে চার চাকার ছোট যানবাহন চলাচল। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে উপজেলার অন্তত আড়াইশ’ পুকুরের কোটি টাকার মাছ। সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণের শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ না পাওয়ার আক্ষেপ জানিয়েছেন। গতকাল সকালে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফুলগাজীর প্রধান সড়ক থেকে সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামে যাওয়ার সড়কটির কয়েকটি স্থানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে তীব্র পানির স্রোতে পাকা সড়কের তিনটি স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এ সড়কে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা গাছের গুঁড়ি ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শাঁকো বানিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করেছে।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দেড়পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ফুলগাজী বাজার থেকে দেড়পাড়া সড়কটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ ঘরিয়া ও দরবারপুর রাস্তার পিচঢালাই উঠে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়কের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ফুলগাজী উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ আসিফ মুহাম্মদ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত না করায় বন্যার পানি এখনো সড়ক থেকে পুরোপুরি নেমে যায়নি। বন্যাকবলিত এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তার উপর দিয়ে এখনো পানি প্রবাহিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফুলগাজী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উজ্জল বণিক বলেন, ‘ফুলগাজীতে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত আড়াইশ’ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এসব পুকুরে পারিবারিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে মাছ চাষ করা হতো। বন্যার ডুবে যাওয়া পুকুর থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে তিনি ধারণা করছেন।
এদিকে বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণের শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও অনেকেই ৩ দিনেও ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। উত্তর দৌলতপুর গ্রামের সুমিতা সাহা বলেন, সোমবারের আকস্মিক বন্যার পানি ঘরের মেঝে পর্যন্ত উঠেছিল। গত বুধবার উঠান থেকে পানি নিমে গেলেও চারিদিকে পানি থাকায় তারা হাট-বাজারে যেতে পারছেন না। বন্যার পানি ডিঙ্গিয়ে তাদের কেউ ত্রাণও দিতে আসেনি।