ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

খেলা

নিজেদের স্পিন ফাঁদেই হার বাংলাদেশের

ইশতিয়াক পারভেজ
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার
mzamin

সামনে ছিল সিরিজ জয়ের হাতছানি! সেই সঙ্গে ইতিহাস গড়া ও বদলে দেয়ার সুযোগ। কিন্তু কোনোটাই হলো না। নিজেদের শিকলেই বাঁধা রইলো বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে আরও একবার হাতছাড়া হলো টেস্টে নিজেদের ধারাবাহিক প্রমাণ করার সুযোগ। সিলেটে জিতে এগিয়ে থেকেই মিরপুর টেস্ট শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিপক্ষকে যে স্পিনে ঘায়েল করতে বানানো হয়েছিল উইকেট। সেই স্পিনের মায়াবী আঘাতে নিজেরাই ব্যর্থ স্বাগতিকরা। যদিও লড়াই হয়েছে, শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে সফরকারীরা। বোলাররা নিজেদের কাজটা সঠিক ভাবে করলেও বরাবরের মতো ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ। ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে  ১৪৪ রানে হারায় সবকটি উইকেট। জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্য পায় কিউইরা। কিন্তু টাইগার বোলাররা স্বল্প পুঁজি নিয়েও দারুণ ভাবে চেপে ধরে সফরকারীদের। তবে দলীয় ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারালেও প্রথম ইনিংসের মতোই কিউইদের উদ্ধার করেন গ্লেন ফিলিপস। ৪৮ বলে ৪০ রান করে দলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন মিচেল স্যান্টনার । তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস। ২০১৬ তে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে  প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু একইভাবে সে সুযোগ হাতছাড়া করেছিল টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত ১-১ এ ড্রতে সেই হয়েছিল সিরিজ। লক্ষ্য মাত্র ১৩৭ রান। কিন্তু মিরপুরের স্পিন উইকেটে এই রান তোলাও যে বড় কঠিন। একে একে যখন কিউইদের উইকেট পড়ছিল গ্যালারিতে আসা দর্শকদের উল্লসিত চিকিৎকারও বাড়ছিল। প্রথম ধাক্কা দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। তিনি ডেভন কনওয়েকে ফেরান ২ রানে। এরপরই বল হাতে জ্বলে ওঠে তাইজুল-মিরাজ জুটি। 

কেন উইলিয়ামসনকে ৩ রানে ফেরান তাইজুল, ২ রান করে হ্যানরি নিকোলস শিকার হন মিরাজের। এরপর মিরাজের বলে আউট হন টম ল্যাথাম। ৬০ বলে ২৬ রান করেন তিনি। পরের ওভারেই টম ব্লান্ডেলকে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান তাইজুল। ৫১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন কোণঠাসা নিউজিল্যান্ড। আর জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে টাইগাররা। উইকেট সংখ্যাটা খুব দ্রুতই ৬ হতে পারতো। কিন্তু হয়নি। আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে ম্যাচ হাতছাড়া হতে শুরু করে। দলীয় ৫২ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ম্যাচের নায়ক গ্লেন ফিলিপস। স্লিপে শান্ত মিস করেন প্রথম ইনিংসে ৮৭ রান করা ফিলিপসের ক্যাচ। এরপর ২৭তম ওভারে ১৯ রান করা ড্যারিয়েল মিচেলকে  নাজমুলের তালুবন্দী করান মিরাজ। ৬৯ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারায় কিউইরা। আবারো বাড়ে আশা। কিন্ত ক্রিকেটে একটা কথা আছে- ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। শেষ পর্যন্ত যেন সেটাই সত্যি হলো। ফিলিপসকে জীবন দেয়ার খেসারতটা পরজয় দিয়ে শেষ হলো। ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার দুজন মিলে ৭৭ বলে ৭০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডকে ইনিংসের ৪০তম ওভারে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা ফিলিপসের হাতেই।

এর আগে গতকাল ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের শুরুটা ভালো হলেও ছন্দ ধরে রাখা যায়নি বেশিদূর। এজাজ প্যাটেল আর স্যান্টনার মিলে ভেঙে দেন ইনিংসের মেরুদণ্ড। দলের স্কোর বোর্ড একশ ছোঁয়ার  আগেই হারায় ৭ উইকেট! আগ্রাসন ধরে রেখে ব্যাট করার চেষ্টা করেন জাকির হাসান ও মুমিনুল হক। ৪২ বলে যোগ হয় ৩৩ রান। এরপরেই শুরু হয় ধস। ১০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন মুমিনুল। দ্রুত ফেরেন মুশফিকুর রহীম, ৯ রান করে। এরপর  স্যান্টনার ফেরান শাহাদাত হোসেন দিপুকেও। ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। এরই মাঝে একই ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন এজাজ। মিরাজের পর নুরুল হাসানকেও সাজঘরে ফেরান তিনি। ৯৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখা জাকির হাসান নাইম হাসানকে নিয়ে পাড়ি দেন তিন অংকের গণ্ডি। কিন্তু ইনিংসটা আর বড় করতে পারেননি। ৫৯ রান করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম। ৫৭ রানে ৬ উইকেট নেন এজাজ প্যাটেল, ৩ উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার। অপর উইকেট টিম সাউদির।

খেলা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status