অনলাইন
গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে ৩৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
স্টাফ রিপোর্টার
(১ বছর আগে) ৯ ডিসেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৫ অপরাহ্ন
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতৃবৃন্দ এবং শতাধিক শ্রমিকের নি:শর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছে বিবৃতি দিয়েছেন ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। শনিবার সন্ধ্যায় এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান তারা। বিবৃতিদাতারা বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাবুল হোসেনসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতৃবৃন্দ এবং শতাধিক শ্রমিকের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি ২০২৩ মজুরি আন্দোলনে চলাকালে পুলিশের গুলিতে ৩ জন এবং আগুনে পুড়ে ১ জনসহ মোট ৪ জন নিহতসহ এযাবৎকালে মজুরি আন্দোলনে সকল হত্যার ঘটনার তদন্ত এবং নিহতদের জন্য ন্যায় বিচার এবং এক জীবনের সমান ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবি উঠলেও মজুরি বোর্ড প্রথমে ১০ হাজার ৪০০ এবং সর্বশেষ ৭ নভেম্বর মজুরি ১২৫০০ টাকা চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়। যেটি শ্রমিকদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না। একই সঙ্গে এই বাজারে এই মজুরিতে চলা দুরূহ। এ অবস্থায় শ্রমিকরা টিকে থাকা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পরে মজুরি পুনর্বিবেচনা ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করে। অথচ তাদের গণতান্ত্রিক দাবি বিবেচনায় না এনে উল্টো তাদের উপর যে হত্যা-নির্যাতন, ১৩ (১) ধারা প্রয়োগে কারখানা বন্ধ রাখা ও শ্রমিকের বেতন না দেয়া, ছাঁটাইসহ দমন-পীড়ন নেমে আসে, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।
বিবৃতিদানকারীরা আরো বলেন, প্রায় ১৫০ বছর পুরনো বৃটিশ আমলে তৈরি আইন ১৮৬০ দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৯,৩০৭,৩২৫, ৪২৭, ৪৩৬ মোট ৭টি ধারায় ৩০ অক্টোবর গাজীপুরের ভোগড়ায় শ্রমিক আন্দোলনে ১১০০/১২০০ জন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে গাড়ী পোড়ানোর মিথ্যা মামলায় বাবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই ধারাগুলো মূলত শ্রমিক হয়রানির অস্ত্র হিসাবে বতর্মানে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগুন দিয়ে গাড়ী পোড়ানোর সঙ্গে হত্যার চেষ্টা, দাঙ্গা ও বেআইনি সমাবেশের সদস্য হওয়ার কথাও উল্লেখ আছে। মামলায় উল্লেখিত অপরাধে বাবুলের যুক্ততা ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে তারা মত দেন।
বিবৃতিদানকারীরা হলেন-শিক্ষক, লেখক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকার সংগঠক ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক হামিদা হোসেন, সমাজ সংগঠক খুশি কবির, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, ব্যারিস্টার জ্যোতিময় বড়ুয়া, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও কিউরেটর তানজিম ওয়াহাব, নারী পক্ষের সদস্য মাহীন সুলতান, নারী আন্দোলন সংগঠক ফরীদা আখতার, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. হারুনুর রশীদ, শিক্ষক লায়লা পারভীন, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীনা সিদ্দিকী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেউতি সাবুর, যুক্তরাষ্ট্রের উস্টার স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারডিসিপ্লিনারি স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক নাফিসা নিপুণ তানজীম, মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ড. সাঈদ ফেরদৌস, মানস চৌধুরী, সাংস্কৃতিক কর্মী অমল আকাশ, বিথী ঘোষ, শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান।
এছাড়া নাট্যশিল্পী বন্যা মির্জা, নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক ড. নাসরিন খন্দকার, নৃবিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. নাসরিন সিরাজ, লেখক ও গবেষক সায়েমা খাতুন, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. সাদাফ নূর, কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক হানা শামস আহমেদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিট্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মাইদুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামলী শীল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অপরাজিতা দেব, পারফর্মিং আর্টিস্ট ঋতু সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী সাদিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মির্জা, আলোকচিত্রী খন্দকার তানভীর মুরাদ তপু, জান্নাতুল মাওয়া এবং তাসলিমা আখতার।
পাঠকের মতামত
এদেশে পোশাক শিল্পের মালিকপক্ষ ব্যবসায়ী বা উদ্দোক্তা নয়,এঁরা মুলত মাফিয়াচক্র, একই পন্য উৎপাদন করে জর্ডান মরিশাস একই মার্কেট এ বিক্রি করে মুনাফা করে শ্রমিকদের লক্ষ টাকার উপর বেতন দিয়ে, আর বাংলাদেশে ২৫ হাজার টাকা বেতন দাবি করলে দলীয় সন্ত্রাসী দ্বারা শ্রমিকদের উপর হামলা মামলা গুলি চালিয়ে দমন করা হয়।
মজুরী কম দেয়া, মজুরী বকেয়া রাখা, মজুরী না দেয়া, নির্যাতনকারী ফ্যাক্টরি মালিকদের পক্ষে সরকার। অপরদিকে ভু্ক্তভোগীদের হত্যা, নির্যাতন, গ্রেপ্তারে সরকার সক্রিয়।
ধন্যবাদ সবাইকে বিবৃতি দেয়ার জন্য