খেলা
সিঙ্গাপুরকে এবার ৮ গোলের লজ্জা দিলো সাবিনারা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৫ ডিসেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার
প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চেয়েছিল সিঙ্গাপুর। কিন্তু চ্যালেঞ্জ তো দূরের কথা, ন্যূনতম লড়াইও করতে পারেনি তারা। ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুনদের ছন্দময় ও আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে স্রেফ আত্মসমর্পণ করে সফরকারীরা। গতকাল কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে একপেশে লড়াইয়ে সিঙ্গাপুরকে ৮-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। প্রথমার্ধে তিন গোল করা মেয়েরা দ্বিতীয়ার্ধে জালের দেখা পায় আরও পাঁচবার। ঋতুপর্ণা ও তহুরা করেন জোড়া গোল। আর একটি করে গোল আসে সানজিদা খাতুন, সাবিনা খাতুন, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের পা থেকে।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবার সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। জালান বেসার স্টেডিয়ামে সেই প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে টানা দুই ম্যাচে হারালো সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। মেয়েদের ফুটবলে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। এর আগে ২০১০ সালের ১৫ই ডিসেম্বর ভুটানকে ৯-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে সাবিনার ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে বুটের টোকায় বক্সে বল বাড়ান আফিদ। এরপর মাসুরা পারভীনের হেড পাস থেকে হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন তহুরা। এই গোলের পরই যেন নিজেদের ছন্দ ফিরে পায় বাংলাদেশ।
এই গোলের রেশ থাকতে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। সাবিনার কর্নার থেকে ১৮তম মিনিটে বক্সে জটলার ভেতর আলতো টোকায় জাল খুঁজে নেন ঋতুপর্ণা। এর ৬ মিনিটের ব্যবধানে আবারও গোলের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। নিজের জোড়া গোলের সঙ্গে দলকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন তহুরা। ২৪তম মিনিটে দারুণ এক শট নেন ঋতুপর্ণা, কিন্তু প্রথম দফায় সেটা প্রতিহত করেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। ফিরতি বলে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন তহুরা। একটু পরই গোলের হালি পূরণ করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু ঋতুপর্ণার ক্রসে অনেকটা লাফিয়ে তহুরা পা ছোঁয়ালেও বল লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তখন আর সেটা হয়নি। সিঙ্গাপুরের ডানিয়েল জার্মানির বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলেন। আগের ম্যাচে তিনি ছিলেন না। তাই এই ম্যাচে তাকে নিয়ে কিছুটা ভয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের সামনে পুরো ম্যাচেই ডানিয়েল ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
৩-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরেও আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে কোনাকুনি শটে দারুণ এক গোল করেন সানজিদা। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটা বাতিল হয়ে যায়। তবে চতুর্থ গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৫৬তম মিনিটেই গোল হালি পূরণ করেন সেই সানজিদাই। মারিয়া মান্দার থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে কাটব্যাক করেন ঋতুপর্ণা। সেই বলে পেয়ে শট নেন তহুরা, সেটা গোলরক্ষক আটকানোর পর ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন সানজিদা। ৬ মিনিট পর আবারও গোল পায় বাংলাদেশ।
সানজিদার পাস থেকে ঋতুপর্ণার বাম পায়ের দারুণ উঁচু শট খুঁজে নেয় সিঙ্গাপুরের গোলপোস্ট। ৭৫তম মিনিটে ব্যবধান ৬-০ করেন অধিনায়ক সাবিনা। সানজিদা ও তহুরার বদলি নেমে ঝলক দেখান মাতসুশিমা সুমাইয়া ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। সুমাইয়ার পাস শামসুন্নাহার বক্সে কাটব্যাক করলে সেই বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন সাবিনা। ৮৭তম মিনিটে আরও একবার গোলের উল্লাসে মাতে কমলাপুরের গ্যালারি। সাবিনার ফ্রি কিক কয়েক পা ঘুরে যায় সুমাইয়ার কাছে, দৃষ্টিনন্দন ভলিতে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ে সর্বশেষ গোলটা আসে শামসুন্নাহার জুনিয়ররের পা থেকে। ঋতুপর্ণার কাটব্যাকে গোলমুখ থেকে টোকায় গোল করেন তিনি।