শেষের পাতা
বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই- বাণিজ্য সচিব
স্টাফ রিপোর্টার
১ ডিসেম্বর ২০২৩, শুক্রবারবাংলাদেশকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো কিছুই দেখছি না। বাংলাদেশে সে পরিস্থিতিও নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সব কিছু হয়। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সচিবের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তপন কান্তি ঘোষ এ কথা বলেন।
সচিব বলেন, আমেরিকা থেকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে নির্বাচনের সঙ্গে এই চিঠির সম্পর্ক নেই। এ চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো চাপ অনুভব করছে না। আমরা প্রতিনিয়ত এসব নিয়ে কাজ করছি। সামনে দেশের শ্রমিকদের অধিকার কীভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেদিকে জোর দিচ্ছি। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ওয়াশিংটন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কিছু অবজারভেশনের কথা রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আইএলও’র বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে কিছু কথা আছে। আমরা সেটা উন্নত করার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি এ চিঠি নতুন কিছু না। আমেরিকান এ নীতি সব দেশের জন্যই।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এটা কেবল বাংলাদেশের জন্যই না। আমেরিকার প্রশাসন দেখতে চায়, বিভিন্ন দেশের শ্রম অধিকার পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে কি না। বাংলাদেশ যেমন আইএলও’র সদস্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশও সদস্য। আমেরিকাও আইএলও’র সদস্য। কাজেই মান নির্ধারণের সংস্থা হচ্ছে আইএলও। তারা যদি বলে, শ্রম অধিকার এভাবে থাকতে হবে বা দেশের আইন-কানুনও আইএলও’র কনভেনশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে, আমরা সেটা নিয়েও সব দেশ কাজ করছি। এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সহযোগিতা করে আসছে।
কল্পনা আক্তারকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা শ্রম মন্ত্রণালয়ের বিষয়। এটা নিয়ে তারা কাজ করবেন। যারা ট্রেড ইউনিয়ন করে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কাজ না করেন- এটাই তাদের আর্জি। এখন অনেক শ্রম সংগঠন। আমরাও চাই, শ্রম সংগঠনগুলো যাতে অব্যাহতভাবে কাজ করতে পারে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা উদ্বেগ কাজ করছে। এ বিষয়টি পরিষ্কার ব্যাখ্যা দাবি করলে সচিব বলেন, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে আছে বলে আমি মনে করি না। আর বাণিজ্যক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ বিশেষ কোনো সুবিধা পায় না। যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই। পনেরো শতাংশের বেশি শুল্ক দিয়ে আমেরিকাতে আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে হয়। কাজেই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। বরং অনেক দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য করে, যেখানে গণতন্ত্র নেই। যেখানে একদলীয় শাসন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নেই। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা অনেক উন্মুক্ত, এখানে গণতন্ত্রের চর্চা আছে। সেখানে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো পরিস্থিতি আছে বলে মনে করি না। তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি অনেক কমেছে, এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সচিব বলেন, রপ্তানি আদেশ কমেছে বৈশ্বিক অন্য পরিস্থিতির কারণে। রপ্তানিটা হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। তার মানে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় গত দেড়-দুই বছরে অনেক মুদ্রাস্ফীতি ছিল। যখন মুদ্রাস্ফীতি থাকে, তখন পোশাক কেনার চাহিদাও কমে যায়। এজন্য রপ্তানি কমেছে।