শেষের পাতা
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শিশুপুত্রের জানাজায় বিএনপি নেতা
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবারকিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শিশুসন্তানের নামাজে জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছেন মো. আশরাফুল আলম (৪৭) নামে এক বিএনপি নেতা। তিনি করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক, ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং সাইটুটা গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে। মো. তামিম নামে তার ২০ মাস বয়সী শিশুসন্তান মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। সন্তানের মৃত্যুর সময় বিএনপি নেতা মো. আশরাফুল আলম কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সময়ের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি তার শিশুপুত্রের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। বাড়িসংলগ্ন সাইটুটা হোছাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে বাদ আছর মো. আশরাফুল আলমের শিশুসন্তানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাড়ির পাশের পারিবারিক কবরস্থানে শিশু তামিমের লাশ দাফন করা হয়।
গত ২৯শে অক্টোবর করিমগঞ্জ থানা পুলিশ বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. আশরাফুল আলমকে একটি নাশকতার মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার শিশুপুত্র মো. তামিম বাড়ির উঠান সংলগ্ন পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়। শিশুপুত্রের মৃত্যুর পর তার আইনজীবী জেলা জজ কোর্টের এডভোকেট মো. শফীউজ্জামান ভূঞা শফি সন্তানের মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে সন্তানকে মানবিক কারণে শেষবারের মতো দেখার জন্য কিশোরগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মো. আশরাফুল আলমের প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানান।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা মো. আশরাফুল আলমের প্যারোলে মুক্তি মঞ্জুর করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান মো. আশরাফুল আলম। সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরায় তাকে সাইটুটা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিকাল ৪টা ১০মিনিটে অনুষ্ঠিত শিশুপুত্রের নামাজে জানাজায় অংশ নেন মো. আশরাফুল আলম। এ সময় জানাজায় উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে শিশুপুত্রের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। নামাজে জানাজায় মো. আশরাফুল আলমের আইনজীবী এডভোকেট মো. শফীউজ্জামান ভূঞা শফি ছাড়াও এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে শিশুপুত্রের দাফনে অংশ নেন তিনি। পরে পুলিশ প্রহরায় আবারো তাকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।