খেলা
দিনটা আরও সুন্দর হতে পারতো
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবারনিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। দিনের শুরুটা দারুণ হলেও পুরো দিনটা কেটেছে নানা আক্ষেপে। শেষ মুহূর্তে দুই বোলার তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম প্রতিরোধ না গড়লে অলআউটই হয়ে যেতো বাংলাদেশ। এরা দু’জন শেষ উইকেটে ২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে তিনশ’ পার করে বাংলাদেশ। এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে টিকে গিয়েও বড় ইনিংস গড়তে ব্যর্থ হয়েছে। সর্বোচ্চ ৮৬ রানের ইনিংস খেলেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। দলের পক্ষে এটি একমাত্র ফিফটিও। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুমিনুল হক খেলেছেন সমান ৩৭ রানের ইনিংস।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রও শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। ইনজুরি ও ব্যক্তিগত ছুটির কারণে নিয়মিত দলের পাঁচ ক্রিকেটারকে পাচ্ছে না স্বাগতিকরা। ফলে এক রকম আনকোড়া টেস্ট দল নিয়েই খেলতে নামে বাংলাদেশ। বিপরীতে নিউজিল্যান্ড এসেছে পূর্ণশক্তির দল নিয়ে। তাই দেশের মাঠে হলেও চ্যালেঞ্জ সহজ ছিল না। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দিতে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সাবধানে খেলতে শুরু করেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জাকিরের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের লেগ বিফোরের রিভিউ ব্যর্থ হয়। প্রথম ১০ ওভারে ২৭ রান তুলে উইকেটে সেট হয়ে যান দু’জন। অবশ্য দিনের ১৩তম ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন নিউজিল্যান্ড স্পিনার এজাজ প্যাটেল। ভুল টাইমিংয়ে বোল্ড হন জাকির। ৪১ বল খেলে ১টি চারে ১২ রান করেন তিনি।
জয়ের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৭৫ বলে ৩৯ রান যোগ করেন জাকির। এরপর ক্রিজে এসে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হন শান্ত। প্যাটেলকে ছক্কা মেরে রানের খাতা খুলেন টাইগার দলনেতা। এরপর প্যাটেলকে আরও ২টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকা শান্ত আউট হন তখনই। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমবারের মতো বল করতে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই শান্তকে শিকার করেন ফিলিপস। অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ক্রিজ ছেড়ে বের হয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড অনে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৭ রান করেন তিনি।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭১ বলে ৫৩ রান যোগ করেন জয়-শান্ত। মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ প্রথম সেশনে ২ উইকেটে ১০৪ রান তোলে স্কোর বোর্ডে। তখন জয়ের নামের পাশে ৪২ রান বিরতির পর টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূর্ণ করতে ৯৩ বল খেলেন জয়। চার নম্বরে নামা মমিনুল হককে নিয়ে রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন জয়। ৪১তম ওভারে প্যাটেলের বলে মিচেলের হাতে জীবন পান ৬৪ রানে থাকা জয়। কিন্তু ইনিংসের ৫৩তম ওভারে ফিলিপসের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দেন ৪টি চারে ৭৮ বলে ৩৭ রান করা মমিনুল। জয়ের সঙ্গে ১৭১ বলে ৮৮ রানের জুটি থামে। তখনও দলের ভরসা টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথে থাকা জয়। কিন্তু স্পিনার ইশ সোধির বলে স্লিপে ড্যারিল মিচেলকে ক্যাচ দিয়ে ঘটান সম্ভাবনার অপমৃত্যু। ১১টি চারে ১৬৬ বলে ৮৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। চা-বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ৫ বল ও ৪ রানের ব্যবধানে বিদায় নেন মমিনুল-জয়। সেখান থেকে ব্যাটিং বিপর্যয়। একে একে ফিরে যান অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীমসহ দীপু, মিরাজ, সোহান। দিন শেষে ৮ রানে তাইজুল ও ১৩ রানে শরিফুর অপরাজিত আছেন। কিউইদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন ফিলিপস।