শেষের পাতা
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়ে কৌতূহল
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
২৭ নভেম্বর ২০২৩, সোমবার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও বাকি রাখা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনটি। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে চলছে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও নবাগত তৃণমূল বিএনপি’র নেতাকর্মীরা নানা হিসাব কষছেন আসনটি নিয়ে। কেউ বলছেন, আসনটি জাতীয় পার্টিকেই দেয়া হবে, কেউ বলছেন তৃণমূল বিএনপিকে, কেউ বলছেন আওয়ামী লীগকে।
সূত্রমতে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এই আসনে এমপি হয়। বরাবরই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবি জানিয়ে বিগত নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়নপত্র কিনলেও তাতে সায় দেয়নি দলের হাইকমান্ড। ফলে পর পর তিনবার নির্বাচিত হয়ে আসনটি জাতীয় পার্টি পাকাপোক্ত করে নেয়। এখন তৃণমূল বিএনপিকে আসনটি ছেড়ে দিলে জাতীয় পার্টির অবস্থান কী হবে, এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শেষ পর্যন্ত আসনটি জাতীয় পার্টি ধরে রাখলে তৃণমূল বিএনপি তথা তৈমূর আলম কী করবেন। আবার কেউ বলছেন, আসনটি তৃণমূল বিএনপিকে ছেড়ে দিলে জাতীয় পার্টি তথা প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার ওসমান পরিবারের ভূমিকা কী হবে। যেহেতু নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর সেলিম ওসমান এই আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি। তারা কি তৈমূরকে ছাড় দিবেন? আবার কেউ বলছেন এমন পরিস্থিতিতে হয়তো আওয়ামী লীগের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন।
এদিকে তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার তার পৈতৃক নিবাস নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) থেকে তার দলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এবং শুক্রবার বিকালে রূপগঞ্জে এক নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় তিনি বলেছেন, আমি আমাদের মার্কা সোনালী আঁশ ‘পাট’ প্রতীক নিয়ে এই আসনে নির্বাচন করবো। কিন্তু রোববারের ঘোষণায় আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর নাম ঘোষণা করেছেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে তৈমূর আলম এখন কী করবেন? তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন যেহেতু আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে তাদের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেয়নি সেহেতু সেখানে তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব তৈমূর আলমকে আসনটি ছেড়ে দিবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা বরাবরই দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করে আসছিলাম। অবশেষে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে আমাদের দলীয় লোককে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তার জন্য আমরা নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
তবে নারায়ণগঞ্জ-৫ (নারায়ণগঞ্জ সদর-বন্দর) আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি আওয়ামী লীগ। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিষয়ে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের জোট রয়েছে বিদায় আসনটি জাতীয় পার্টিকে দেয়া হয়েছে। এবং গত তিনটি নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টির এমপি নির্বাচিত হয়েছে। এবার নতুন করে তৃণমূল বিএনপি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল বিএনপি আসনটি চাইতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) থেকে তাদের দলীয় মনোনয়ন কিনেছে। সে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আসবে কেন? তার আসন তো রূপগঞ্জ। আর যদি মহাজোটের মাধ্যমে নির্বাচন হয় তাহলে ২০১৮ সালের মতো আমাদেরকে ছাড় দিতে হবে। তবে শেষ পর্যন্ত আসনটি কাকে দেয়া হবে তার এখতিয়ার এককভাবে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) ওপর।