ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বুধবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েই পরীক্ষার হলে

বিপর্যস্ত খাদিজা

মরিয়ম চম্পা
২১ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারmzamin

দীর্ঘ ১৪ মাস পর কারামুক্ত হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। গতকাল সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। কারাফটকে খাদিজা স্বজনদের দেখেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। ফটকের বাইরে এসেই বড় বোনকে জড়িয়ে ধরেন। কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে সেখান থেকে সরাসরি যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার হলে। বিকালে বাসায় ফিরে এই জবি শিক্ষার্থী কারাগার জীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন মানবজমিনের কাছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, গাজীপুর থেকে গাড়িতে যখন ঢাকায় ফিরছিলাম তখনও পরীক্ষা দেয়ার মানসিক প্রস্তুতি ছিল না। আমি তো জানি আজ পরীক্ষা দিতে পারবো না। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া গত রোববার বের হতে পারিনি। কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে পারিনি। পরীক্ষা শুরুর অনেক পরে হলে প্রবেশ করি। পরিসংখ্যান পরীক্ষা ছিল। একদমই প্রস্তুতি ছিল না। যতটুকু সম্ভব লেখার চেষ্টা করেছি। 

পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে খাদিজা বলেন, খুব বেশি ভালো হয়নি। তারপরও চারটি প্রশ্নের মধ্যে তিনটির উত্তর লিখেছি। তিনি বলেন, কারাগারে নামাজ পড়ে, রোজা রেখে আর লেখাপড়া করে সময় কাটতো। গতকাল অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা ছিল। আমার জীবন থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সময় হারিয়ে গেছে।

খাদিজা বলেন, বাসায় প্রবেশ করে মা’কে জড়িয়ে ধরে কান্না করি। কারাগারে থাকাকালীন মায়ের কাছে নিজের কষ্ট প্রকাশ করতাম না। এখন অনেকটাই হালকা হয়েছি। জামিনের খবর পেয়ে আনন্দিত ছিলাম। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থী বলেন, এখনো জানি না। কারণ মামলা কতোদিন চলবে। শেষ হবে কিনা এসব বিষয়ে এক ধরনের মানসিক দুশ্চিন্তা তো থাকবেই। কারাগারে থাকাকালীন উপলব্ধি করেছি জীবটা প্রকৃতপক্ষে কতোটা কঠিন। জেলখানায় থেকে একটা কথাই মনে হয়েছে, এমন কিছু করতে হবে যাতে মানুষ আমার কথা শোনেন। বাইরে আসার সময় কারাগারে থাকা সঙ্গীদের অনেকেই কান্না করেছেন। খাদিজা বলেন, সময় নিয়ে অনেক কিছুই বলার আছে। তবে সকলের উদ্দেশ্যে এখন আমার একটিই মেসেজ থাকবে, পরিবার হচ্ছে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সকল কিছুর ঊর্ধ্বে পরিবার। এর বাইরে কাউকে বিশ্বাস করা উচিত না। 

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, গত রোববার রাতে খাদিজার জামিনের কাগজপত্র কারা কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই করতে রাত বেশি হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী একজন আসামিকে রাতের বেলা মুক্তি দেয়ার সুযোগ নেই। তাই তাকে রোববার মুক্তি দেয়া সম্ভব হয়নি। পরে সোমবার ভোরে তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এত ভোরে আত্মীয়স্বজন না আসায় সকাল ৮টা ৫৭ মিনিটের দিকে খাদিজাতুল কুবরাকে কারাগার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেয়া হয়।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status