প্রথম পাতা
কঠোর অবস্থানে ইরান, থেমে নেই ইসরাইলও
মানবজমিন ডেস্ক
২২ জুন ২০২৫, রবিবার
যুদ্ধ অব্যাহত। কঠোর অবস্থানে ইরান। ইউরোপে সমঝোতা প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইরান যুদ্ধে যদি যুক্তরাষ্ট্র জড়িত হয় তাহলে পরিণতি হবে খুবই ভয়াবহ। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো চায় ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্যতে নামিয়ে আনুক। কিন্তু তাতেও রাজি নয় ইরান। তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমিয়ে আনতে চায়। তাই বলে শূন্য নয়। ফলে ইরানকে এতদিন যতটা দুর্বল ভাবা হয়েছিল, সে ততটা নয়। পরিষ্কারভাবে তার কঠোরতার কথা জানান দিয়েছে বিশ্ববাসীর সামনে। ওদিকে শিশু হত্যার কারণে জাতিসংঘের কালো তালিকায় নাম উঠেছে ইসরাইলের। এমন অবস্থায় উভয়পক্ষই হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ইরান প্রশ্নে নিজের জাতীয় গোয়েন্দা বিষয়ক মহাপরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে মতের অমিল দেখা দিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। গত মে মাসে কংগ্রেসের শুনানিতে তুলসি বলেছিলেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির অধীনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। কিন্তু ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বা করেছে এমন অভিযোগ তুলে দেশটিতে সামরিক আগ্রাসন চালায় ইসরাইল। এতে ট্রাম্পের সম্মতি আছে। তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যের সঙ্গে ট্রাম্পের অবস্থান বিপরীতমুখী হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার পাচ্ছে বিষয়টি। এর প্রেক্ষিতে তুলসি গ্যাবার্ডকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।
তুলসিও তার মন্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে মুখরক্ষার চেষ্টা করছেন। এখন তিনি ইউটার্ন করে বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ায় ইসরাইল সবচেয়ে বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান। ইস্তান্বুলে তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ইরানে ইসরাইলের হামলাকে ‘সমঝোতায় স্যাবোটাজ’ বলে আখ্যায়িত করেন এরদোগান। ইস্তান্বু্বুলে কূটনৈতিক এক সম্মেলনে এরদোগান ইসরাইলি কর্মকাণ্ডকে ডাকাতির সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, তারা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সমঝোতা প্রক্রিয়াকে প্রকৃতপক্ষে হেয় করার চেষ্টা করছে নেতানিয়াহুর সরকার। এর আগের দিন শুক্রবার জেনেভায় ইউরোপিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরাঘচি। সেখান থেকে শনিবার ইস্তান্বুলে অব্যাহত কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেন তিনি। সেখানে যোগ দেন আরব ও মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিরা। তাদের সঙ্গে উদ্ভূত সংকট নিয়ে কথা বলেন তারা। ওদিকে ইসরাইল অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরানে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানও। এবারো ইসরাইলের আকাশসীমা ভেদ করে ইরানের ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইলে। ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) দাবি করেছে তারা ইরানের আরও দু’জন কমান্ডারকে হত্যা করেছে। ওদিকে তেহরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে ইউরোপ। কিন্তু শুক্রবার ইরান সাফ জানিয়ে দেয়, ইসরাইল যদি হামলা অব্যাহত রাখে তাহলে তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ভবিষ্যত নিয়ে কোনোই আলোচনা করবে না।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এমন অবস্থান নিলেও তিনি শুক্রবার বিলম্বে পৌঁছান জেনেভায়। সেখানে কূটনীতিকে একটা সুযোগ দেয়ার জন্য ইউরোপিয়ান নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে ইরানে ইসরাইলি হামলা বন্ধের যে দাবি জানানো হয়েছে তা ট্রাম্প বন্ধ করতে বলবেন বলে মনে হয় না। তিনি বলেছেন, (ইসরাইলকে) এমন অনুরোধ করা আমার জন্য খুবই কঠিন বিষয় হবে। তিনি আরও বলেন, ইউরোপের সঙ্গে কথা বলতে চায় না ইরান। তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। এ বিষয়ে ইউরোপ কোনো সাহায্য করতে পারবে না। ট্রাম্প আরও জানান, তিনি ইরানে স্থলবাহিনী ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করবেন না। তবে অনেক নিরাশার মধ্যে আশার বাণী শুনিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি বলেছেন, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না। ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এ নিয়ে তার ফোনে কথা হয়েছে। তাতে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে ইরানের সমঝোতা প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। এক্সে দেয়া এক পোস্টে ম্যাক্রন লিখেছেন- আমি দাবি করেছি ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। এই প্রক্রিয়া যে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এটা নিশ্চিত হবে তাদেরকে। ম্যাক্রন বিশ্বাস করেন যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার এবং আরও বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। এটা অর্জন করার জন্য তিনি বলেন, ফ্রান্সের নেতৃত্বে এবং তার ইউরোপিয়ান অংশীদারদের নেতৃত্বে সমঝোতা দ্রুত এগিয়ে নিতে চায় ইরান। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ১৩ই জুন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৪৩০ ইরানিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। অন্যদিকে ইসরাইলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে তারা ইরানের দু’জন কমান্ডারকে হত্যা করেছে। তারা হলেন হামাসের সমন্বয়ক সাঈদ ইজাদি এবং কুদস ফোর্স কমান্ডার বেনহ্যাম শাহরিয়ারি। তারা আরও বলেছে, শনিবার সকালে এক ঘণ্টা ইসরাইলে প্রবেশ করে ইরানের ৮টি ড্রোন। ইসরাইল বলেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তাদের দেশে নিহত হয়েছে ২৫ জন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে হার্ট অ্যাটাকে। আহত হয়েছে ২৫১৭ জন।
ইসরাইলের কেন্দ্রস্থলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, হোলোনে অগ্নিকাণ্ড
একদিকে ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। ঠিক সেই সময়ে দুই দেশই পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল ভোরে ইসরাইলের কেন্দ্রস্থলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এর ফলে হোলোন শহরে অগ্নিকাণ্ড হয়। একই সময় ইসরাইলও ইরানের ইসফাহান অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে। সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত। তাতেই হামলা করা হয়েছে বলে দাবি ইসরাইলি সেনাদের। তারা ইরানের আরও একজন কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল-জাজিরা বলছে, দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইলের সেনাপ্রধান এয়াল জামির। তিনি বলেছেন, দেশটিকে এখন ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেছেন। গ্যাবার্ড বলেছিলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে- এমন কোনো প্রমাণ নেই। ট্রাম্প এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। ওদিকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সতর্ক করে বলেছে, ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলি হামলার পর তেজস্ক্রিয় ও রাসায়নিক দূষণের আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ওই স্থাপনার বাইরের এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়েনি। ওদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ বলেছেন, এই যুদ্ধ উপসাগরীয় অঞ্চলের অগ্রগতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে এটি তত বিপজ্জনক হয়ে ওঠবে। ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘ যুদ্ধ এই অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি আঞ্চলিক ব্যবস্থা গড়তে চাই যা উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু এই যুদ্ধ আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে- শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতই নয়, গোটা অঞ্চলকে।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোহরে খারাজমি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানেন যে- ইরানের হাজারো প্রকারের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ইরানের মিত্ররা এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোতে ‘প্রচুর আগুন’ আনতে পারে। তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, ট্রাম্প নিজেই দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন, সরাসরি যুদ্ধে নামবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় আছেন। তিনি আরও বলেন, এমনকি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন মার্কিন নাগরিক চায় কূটনৈতিক সমাধান। তারা চায় না যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক। আমার মনে হয়, যদি পশ্চিমা বিশ্ব, চীন, রাশিয়া এবং আরব রাষ্ট্রগুলো দায়িত্বশীল আচরণ করে, তাহলে এখনো কূটনৈতিক সমাধান পাওয়া সম্ভব।
একাট্টা চীন ও রাশিয়া: ট্রাম্পকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা যখন সরাসরি যুদ্ধে পরিণত হওয়ার পথে, তখন বিশ্বরাজনীতিতে একটি ভিন্ন দৃশ্যপট তৈরি করছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপে দুই নেতা এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন করেছেন যেন তারা এই সংঘাত নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে উঠে আসতে চান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন ইসরাইলের সঙ্গে একত্রে ইরানে হামলা চালানোর কথা ভাবছেন, তখন এই ক্রমবর্ধমান সংঘাতকে ‘নির্বোধ আগ্রাসন’ হিসেবে তুলে ধরছে বেইজিং ও মস্কো। এ খবর দিয়ে বিশ্লেষণধর্মী একটি প্রতিবেদন সিএনএনে লিখেছেন নেকটার জান। তিনি আরও লিখেছেন ক্রেমলিন জানায়, ফোনালাপে পুতিন ও শি ইসরাইলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণও এক ধরনের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, যা নিয়ে চীন বরাবরই নীরব থেকেছে। চীনের পাঠানো বিবৃতিতে অবশ্য শি জিনপিং একটু নরম ভাষায় কথা বলেন। তিনি বিশেষ করে ইসরাইলকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান এবং বলেন, বড় শক্তিগুলোকে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করতে হবে, উস্কানিতে নয়। এটা মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে একটি পরোক্ষ সতর্কবার্তা। চীনের সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ লিউ ঝোংমিন বলেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যে নীতিগত অনিশ্চয়তা ও লেনদেনভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাচ্ছে, তা এই সংকটের মূল কারণ। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তারা নিজের মিত্রদের আস্থাও হারাচ্ছে এবং শত্রুদের ভীত করার ক্ষমতাও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে।
চীন ও রাশিয়া এখন নিজেদের ‘শান্তির বার্তাবাহক’ হিসেবে তুলে ধরছে। চীন কেবল যুদ্ধবিরতির আহ্বানই জানাচ্ছে না, বরং তারা চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে। তা হলো- যুদ্ধ বন্ধ ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, পারমাণবিক ইস্যুতে সংলাপ, আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমন ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইতিমধ্যেই ইরান, ইসরাইল, মিশর ও ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে একাধিক ফোনালাপ করেছেন।
চীন এর আগেও গাজা যুদ্ধের শুরুতে শান্তি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই অঞ্চলে বাস্তব রাজনৈতিক বা সামরিক প্রভাব নেই। তাই তারা যতই শান্তির দূত হওয়ার চেষ্টা করুক, বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারা কঠিন। তবে চীন-ইরান সম্পর্ক ক্রমাগত গভীর হচ্ছে। চীন ইরানের অন্যতম প্রধান তেল ক্রেতা এবং উভয় দেশ যৌথ সামরিক মহড়া পর্যন্ত করেছে। ইরান এখন চীনের নেতৃত্বাধীন ব্রিকস ও সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সদস্য। এ ছাড়া চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে ইরান একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র- বিশেষত, গোয়েদার বন্দর ও হরমুজ প্রণালীর কাছে অবস্থানের কারণে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নেতৃত্ব নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন বেইজিং ও মস্কোর এই কৌশল তাদের জন্য কূটনৈতিকভাবে এক প্রতীকী জয় এনে দিতে পারে- বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল বিশ্বের চোখে।