মত-মতান্তর
মির্জা ফখরুলের আটক ও চলমান রাজনীতি
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
(৪ সপ্তাহ আগে) ৩১ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১০ অপরাহ্ন
দেশের রাজনীতি বিপর্যয়ের দিকে এগুচ্ছে এটা সবাই বোঝে। আমি নিজে বইপত্র লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সচেতন নাগরিক হিসাবে চলমান পরিস্থিতির খবর না রেখে উপায় নেই, বিশেষত যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশের জন্য পৃথিবীব্যাপী ভূরাজনীতির নতুন মেরূকরণ কী তাৎপর্য বহন করছে তা নিয়ে কিছু গবেষণা করছি। তবে সেটা এ লেখার বিষয় নয়।
সুশীল সমাজের পক্ষ হয়ে কোন পর্যবেক্ষণ করার অবস্থানেও আমি নেই। তবে আমার মনে হয়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ সময়ে আটক করা আগামী নির্বাচন পূর্ববর্তী পরিস্থিতির জন্য সমীচীন হয়নি। উভয় প্রধান দলের নেতৃত্ব স্থানীয় রাজনীতিকদের মধ্যে তিনিই বোধহয় ক্রমাগত এককভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলে আসছেন এবং সংঘাত সৃষ্টির মত উস্কানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থেকেছেন। বাইরে থেকে ঘটনাপ্রবাহ দেখলে এবং তাঁর বক্তব্য শুনলে অন্তত আপাতদৃষ্টে মনে হবে তিনি কোনোরকম সংঘাত এড়িয়ে শুধু স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণের মাধ্যমেই তাঁর দলের লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছেন; সেটা সফল হবে কিনা তা ভিন্ন প্রশ্ন। তাঁর গোপন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থাকলেও তা নিয়ে তো আমাদের মন্তব্য করার সুযোগ নেই; যা দৃশ্যমান তা নিয়েই শুধু তাঁর রাজনীতিকে এ মুহূর্তে বিচার করতে পারি।
এর বিপরীতে উভয় দলের অন্যান্য অনেক নেতার গণমাধ্যমে প্রচারিত বক্তব্য থেকে এ ধরনের অহিংস আন্দোলনের বদলে যুদ্ধংদেহি মনোভাবের পরিচয়ই বেশী দেখা যায়। এ অবস্থায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেয়ার মানে হলো সংঘাতময় পরিস্থিতির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়া। অবশ্য তিনি তাঁর দলকে কতখানি সংযত রাখার ক্ষমতা রাখেন তা আমার মত রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ মানুষের জানার কথা নয়। নানা দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের খবরও আমদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।
চলমান রাজনীতির সমাধান অহিংস পথে হবে না সংঘাতের মাধ্যমে ফয়সলা হবে তার উপর নির্ভর করবে দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ : মূল্যস্ফীতির চাপ নির্দিষ্ট বা বাঁধা আয়ের মানুষের উপর আরও কত দুর্বিষহ হয়ে উঠবে, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি কতখানি ধরে রাখা যাবে এবং আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে আদৌ এগোতে পারবো কিনা। এই বড় প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুলের আটকের ঘটনাকে হয়তো অতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও হতে পারে, কিন্তু এটা বড় কিছুর অনুঘটক হিসেবে কাজ করলেও আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তাঁকে আবার তাঁর অহিংস রাজনীতির ধারা ধরে রাখার প্রচেষ্টায় ফিরে যেতে দেয়াই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য হয়ত মঙ্গলকর হবে।
লেখক-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। লেখাটি তার ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া।
পাঠকের মতামত
সহমত পোষন করলাম.....
গান্ধীইজম এদেশে চলবেনা।রাষ্ট্র নিজেই এখন শান্তির অবস্থান থেকে সরে গেছে।
সহমত পোষন করলাম.....
স্যার বর্তমান সময়ে রাজনীতির জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম স্যার মোটেও পিট নয়। তিনি যে অহিংস আন্দোলনের কথা প্রতিদিন বলতেন তার অপজিশন সাধারণ সম্পাদক এর প্রতিবাদ কত নগ্ন ভাবে বলতেন এটা দেখে দেশের সুস্থ রাজনীতি যে হারিয়ে গেছে তা বলবার অপেক্ষা রাখে না। এই সরকারের সময় আমার মনে হয় জনাব আলমগীর স্যার আর বের হতে পারবেন না। দেশে সুস্থ রাজনীতি ও আর হবে না।
right sir
মন্তব্য করুন
মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন
মত-মতান্তর সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]