খেলা
ধার করা গুলি দিয়ে খেললো বাংলাদেশ!
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার
দেশে ডলারের সংকট, তার প্রভাব এসে পড়েছে হাংজু এশিয়ান গেমসের শুটিং রেঞ্জে। ডলার সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে গুলি আমদানি করতে এলসি খুলতে পারেনি বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশন। গুলির অভাবে ৫০ মিটার এয়ার রাইফেল থ্রি পজিশনে ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারেনি বাংলাদেশের শুটাররা। গতকাল ফুইয়াং ইনহু স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মূল ইভেন্টেও বাংলাদেশের শুটাররা অংশ নেয় ধার করা গুলি দিয়ে। এবং তার প্রভাব ভালো ভাবেই পড়ে শুটিং রেঞ্জে। কাল অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টে ১৪ দেশের মধ্যে ১৪তম হয়েছে বাংলাদেশ। এই ইভেন্টের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক আসরে ফিরেছেন কমনওয়েলথ গেমসে জোড়া রৌপ্য জয়ী শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকি। ২৭ মাস পর নিজের প্রিয় ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে বাদ দিয়ে, ৫০ মিটার রাইফেলে থ্রি পজিশনে ৪৫ শুটারের মধ্যে ৩৬তম হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের অন্য দুই শুটার রবিউল ইসলাম ৩৪ ও শোভন চৌধুরী ৪৪ তম হয়েছেন।
গত সেপ্টেম্বরে প্রায় কোটি টাকার উপরে খরচ করে ৪০ লাখ পিস গুলি ঢাকায় এনেছিল শুটিং স্পোর্ট ফেডারেশন। যা ছিল .১৭৭ বোরের। তখনই ৫০ মিটার এয়ার রাইফেলের .২২ বোরের গুলি আনার আমদানি পত্র (এলসি) খুলতে চেয়েছিল ফেডারেশন। তাই গুলির অভাবে ঠিকমতো অনুশীলনও করা হয়নি বাকীদের। বিষয়টি স্বীকার করে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদ অপু গতকাল হাংজুর ফুইয়াং ইনহু স্পোর্টস কমপ্লেক্সে বাকিদের খেলা চলাকালিন সময়ে বলেন, ‘আমাদের পুরনো গুলির মধ্য থেকে কিছু গুলি বাছাই করে আমাদের শুটাররা অনুশীলন করেছে। অন্যদের কাছ থেকে ধার করে রেঞ্জে নেমেছে। এমন অবস্থায় ওদের কাছে ভালো ফল আশা করি কিভাবে?’ এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন জানিয়ে ফেডারেশনের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গুলি আমদানি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলতে হয়। যা এখন অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এখন এলসি খুলতে তিন-চার মাস লেগে যায়। এরপর গুলি দেশে আসতে কার্যক্ষমতাও কমে যায়। তারপরেও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ পর্যাপ্ত অনুশীলনের অভাবও বাকীদের এমন ফলের অন্যতম কারণ বলেন ইন্তেখাবুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি গেমসের আগে অন্তত এক দেড় মাস বিদেশে অনুশীলনের প্রয়োজন। নইলে ভালো ফল প্রত্যাশা করা অর্বাচীন হবে। আগামী জানুয়ারীতে জাকার্তায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এপ্রিলে রিও ডি জেনেরিওতে প্যারিস অলিম্পিক বাছাইয়ের জন্য বিশ্বকাপ শুটিং হবে।
তার আগে এ বছরের ডিসেম্বরে আমরা চীনে অনুশীলন করতে চাই। চীনা শুটিং ফেডারেশনের সহসভাপতি ওয়াং লিয়ানের সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। এই অনুশীলন করতে পারলে অলিম্পিকে ভালো স্কোর করা সম্ভব হবে।’ এশিয়ান গেমসের এবারের আসরে শুটিং ডিসিপ্লিনে আটটি ইভেন্টে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় প্রতিটি ইভেন্টেই হতাশ করেছে বাংলদেশের শুটাররা। এর দায় অবশ্য শুটারদের ওপর চাপাতে চান না অপু। তিনি বলেন, ‘এশিয়ান গেমসে যে শুটাররা অংশ নেয়, তারাই অলিম্পিকে মেডেল জেতে। এখানে আমাদের পদক পেতে হলে যে ধরনের প্রস্তুতি বা পরিকল্পনা দরকার, তার ঘাটতি আছে আমাদের। তবে আমরা ২০২৪ ও ২০২৮ অলিম্পিককে সামনে রেখে পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। যদি সরকার এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন আমাদের সহযোগিতা করে, আমরা যদি আমাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে পদক জিততে না পারলেও ভালো কিছু হবে।’