খেলা
রিংয়ে না নেমেই সুখবর জিনাতের
সামন হোসেন, হাংজু (চীন) থেকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার
এবার এশিয়ান গেমসে স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম বাজির ঘোড়া জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই বক্সার কালই হাংজু এসেছেন। ভোরে গেমস ভিলেজে উঠে সরাসরি চলে যান অনুশীলনে। এশিয়ান গেমসের মতো আসরে প্রথমবার খেলতে এলেও বাঘা বাঘা প্রতিপক্ষের কথা ভেবে তেমন বিচলিত নন জিনাত। জিংযাইংয়ে গেমস ভিলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘কে প্রতিপক্ষ হলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চাই। যা হবে অন রিংয়ে।’
কাল গেমসের বক্সিং ডিসিপ্লিনের নারীদের ৫০ কেজি লাইটওয়েট ইভেন্টের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিপক্ষ না থাকায় বাই পেয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেছেন জিনাত। না খেলেই প্রথম রাউন্ড পার। এ বিষয়ে জিনাত বলেন, ‘প্রতিপক্ষ কে ছিল আমি জানি না।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই বক্সারের সন্ধান মিলেছে কয়েক মাস আগেই। জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুনের ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমেই জিনাতের বাংলাদেশের হয়ে খেলার সুযোগ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ভালো ফলাফল করায় জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ না করেও সরাসরি এশিয়ান গেমসে খেলার সুযোগ পেয়েছেন জিনাত। এবার জিনাতের নিজেকে প্রমাণের পালা।
অম্ল-মধুর ১৯ ঘণ্টা
হাংজুুর বিমান ধরার দু’দিন আগে জানতে পারি কুনমিংয়ে দুই ঘণ্টার ট্রানজিট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ ঘন্টায়। তখন থেকেই একটা অজানা দুশ্চিন্তা ভর করেছিল, কী করে কাটবে কুনমিংয়ের এই ১১ ঘণ্টা। দুশ্চিন্তার কারণ ছিলো অতীত অভিজ্ঞতা। ২০১৪ সালে এশিয়ান গেমস কাভার করতে কুনমিং হয়েই ইনচন গিয়েছিলাম। রাতে ৮ ঘণ্টার ট্রানজিট ছিল কুনমিং চাংশুই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে। রাত ১১টায় পৌঁছে ভেবেছিলাম বাকি সময়টুকু সেখানে কাটিয়ে সকাল ৮টার দিকে ইনচনের বিমান ধরবো। সেটা আর সম্ভভ হয়নি, রাত ১২টা বাজতেই আমাদের এয়ারপোর্ট থেকে বের করে দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা। দিশেহারা হয়ে হোটেল খুঁজতে থাকি। পরে এক দালালের মাধ্যমে পাশের এক হোটেলে পাঁচ ঘণ্টা কাটিয়ে ভোরে বিমান ধরি। সর্তক থাকার কারণে এবার তেমন বিশ্রি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি। বরং চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের অতিথিয়েতায় অম্ল মধুর সময়ই কেটেছে বলা যায়।
চায়না ইস্টার্নে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে আমাদের কুনমিংয়ের ফ্লাইট ছিল দুপুর ২.৫৫ মিনিটে। সবশেষ যাত্রী হিসেবে আমার সঙ্গে বিমানে ওঠেন যুগান্তরের ওমর ফারুক রুবেল ও ফ্রিল্যান্সার বড় ভাই খাইরুল ইসলাম শাহীন। আমাদের নিয়ে যথাসময়ে বিমান ছাড়লেও সিগন্যাল না পাওয়ায় রানওয়েতে বসে থাকে পাক্কা ৩০ মিনিট। তবে দেরি করে বিমান উড়লেও আমরা কুনমিং পৌঁছাই যথাসময়ে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কুনমিংয়ে পৌঁছানোর পরই দেখতে পাই বাংলাদেশ থেকে আসা ৯ সাংবাদিকের সঙ্গে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের এক ডাক্তার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে বরণ করার জন্য অপেক্ষা করছেন তিন বিমানবালা। তারা আমাদেরর সেখান থেকে নিয়ে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করিয়ে নিয়ে যান এয়ারপোর্টের নিকটবর্তী চার তারকা মানের একটি হোটেলে। প্রত্যেককে আলাদা আলাদা রুমের ব্যবস্থা করে দেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। এখানেই শেষ না, আমাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয় হালাল খাবারের। ভোর ৭টায় ছিল আমাদের হাংজুর ফ্লাইট। রাত ৪টার সময় আমাদের হোটেল থেকে এয়ারপোর্টে নিতে গাড়ি নিয়ে হাজির হন চিংওয়াহি নামের এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা। দুপুরে ফ্লাইট থাকায় এই যাত্রায় আমাদের সঙ্গী হননি জ্যাকব। বাকি দশ জনের এয়ারপোর্টের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ভিআইপি লাউঞ্জের ব্যবস্থা করে দেন চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের ওই কর্মকর্তা। সেখানে এক ঘণ্টার মতো কাটিয়ে তিন ঘণ্টার বিমান জার্নিতে সকাল সাড়ে ৯টায় হাংজুর জিংসোহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে আমাদের বিমান। একে একে অন্য যাত্রীরা বিমান থেকে নামলেও আমাদের নামতে দেয়া হচ্ছিল না। পরে জানতে পারলাম আমাদের সঙ্গে ছবি তুলবেন বিমানবালারা। সেই ছবি আবার পাঠাতে হবে তাদের এয়ারলাইন্সের হেড অফিসে। আমরা নির্বিঘ্নে পৌঁছেছি, এটার প্রমাণ স্বরূপ এই ছবি পাঠাতে হবে তাদের বসদের কাছে। যে কথা সেই কাজ, আমাদের ( ৯ সাংবাদিক ও এক ডাক্তার) বিজনেস ক্লাসের সিটে বসিয়ে ছবি তোলা হলো। বিমানবন্দরে গেমসে আশা সাংবাদিকদের জন্য আলাদা বুথ তৈরি করে রেখেছেন আয়োজকরা। তবে গেমস আয়োজন নিয়ে কোনও প্রকার ত্রুটি চোখে না পরলেও আগ্রহের ঘাটতি দেখেছি এখানকার মানুষের মাঝে। কেমন জানি এক যন্ত্রের শহর এই হাংজু। এখানকার মানুষগুলোও যেন যান্ত্রিক। ভাষাগত সমস্যাতো আছেই। চাইনিজ ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার জ্ঞান তাদের সামান্য। তার ওপর হাংজুর পুরো শহর প্রযুক্তি নির্ভর। যেখানেই যাচ্ছি সেটা টের পাচ্ছি ভালো ভাবে।
মন্তব্য করুন
খেলা থেকে আরও পড়ুন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]