কলকাতা কথকতা
ভূমিকম্পে কতটা নিরাপদ ঢাকা, কলকাতার ভূ-বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(৬ দিন আগে) ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার, ১:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় রোববার দুপুরে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলের মাপে যা ধরা পড়েছে ৪.২ মাত্রার। এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল নিয়ে বিতণ্ডা শুরু হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা উৎসস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলে।
মার্কিন একটি সংস্থা জানাচ্ছে, রোববার ঢাকার ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল নরসিংদীর ঘোড়াশাল। কলকাতার অধিকাংশ ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অবশ্য ঢাকার সঙ্গে একমত যে, ভূমিকম্পের এপিসেন্টার ছিল টাঙ্গাইল। বাংলাদেশে অল্প ব্যবধানে তিন তিনটি ভূমিকম্পের ঘটনায় ঢাকার ভূবিজ্ঞানীদের সঙ্গে উৎকণ্ঠিত কলকাতার ভূ-বিজ্ঞানীরাও। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাকে এই ব্যাপারে বাইবেল মানছেন। বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভূ-বিজ্ঞানী হুমায়ুন আখতার ছিলেন এই গবেষক দলে। তিনি চেতাবনি দিয়েছেন যে, সিলেট এবং চট্টগ্রামের ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূকম্পনের ফলে রাজধানী ঢাকায় যদি রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে মহাবিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
কলকাতার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের ভূমিকম্পের উৎসস্থল পূর্ণ দিকে বিস্তৃত। এরমধ্যে মায়ানমার আছে, আছে ভারতের মনিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড। গত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহতে ভূমিকম্পের এপিসেন্টার দেখা গেছে।
২০১০ সালে নারায়ণগঞ্জে রিখটার স্কেলের মাপে ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ২০০৮ সালে টাঙ্গাইল এবং ২০১৪ সালে মির্জাপুরে ভূমিকম্প হয়, ফরিদপুরে মধ্যবর্তী সময়ে দু’বার ভূমিকম্প হওয়ার পর ২০২০ এর ২৫শে ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে একটি বড় মাপের ভূমিকম্প হয়।
রাজধানী ঢাকায় গত ৪ মে ভূমিকম্প হওয়ার পর ফের সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্প উদ্বেগে রাখছে ভূবিজ্ঞানীদের। কলকাতার ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভুপৃষ্ঠের সাতটি টেকটোনিক প্লেটের ওপর এই পৃথিবীর অবস্থান। এই প্লেটের ঘর্ষণ এবং একে অপরকে স্থানচুত্য করার চেষ্টার ফলেই ভূকম্প অনুভূত হয়। এটি বেশি দেখা যায় দুটি প্লেটের সংযোগস্থলে। কলকাতার ভূ-বিজ্ঞানীদের ধারণা বাংলাদেশের সিলেট-কক্সবাজার অঞ্চলে ভুপৃষ্ঠে এই সংযোগস্থল আছে। এই অঞ্চলে ইন্ডিয়া প্লেট তলিয়ে যাচ্ছে বর্মা প্লেটের নিচে। তাই বাংলাদেশে এতবেশি ভূমিকম্প। হুমায়ুন আখতারের গবেষণা বলছে, একদা পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশের ওপর বড় ভূমিকম্প এসেছে ১৫৪৮, ১৬৪২, ১৬৬৩, ১৭৬২, ১৭৬৫, ১৮১২, ১৮১৫ এবং ১৮৬৯ সালে। এছাড়া আধুনিক ভূমিকম্পগুলোতো আছেই। ঢাকা এবং কলকাতার ভূ-বিজ্ঞনীদের আগাম সতর্কবার্তা বাংলাদেশ যেন ভূমিকম্প প্রতিরোধে এখন থেকেই তৈরি হয়। না হলে বড় বিপর্যয় ঘটে যাবে।
পাঠকের মতামত
বাংলাদেশের সতর্ক থাকার যথেষ্ট কারণ, পৃথিবীর হল বিশ্বের অন্যান্য দেশ তুরস্ক ও মরক্কোর বর্তমান ভূমিকম্প ও ভয়াবহতা । এগুলোর বিপর্যয় থেকেই বাংলাদেশের উদ্বেগ থাকা ও সময় থাকতে প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকার প্রয়োজন। প্রতি শত বর্ষ পর পর বড় মাত্রার ভূমিকম্পের ইতিহাস আছে ।