দেশ বিদেশ
মেডিকেলের প্রশ্নফাঁস, আইডিয়ালের শিক্ষিকাসহ গ্রেপ্তার ৭
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবারমেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য এবং সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষিকাসহ ৬ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে (সিআইডি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাকসুদা আক্তার মালা (৫২), ডা. কে এম বশিরুল হক (৪৮), ডা. অনিমেষ কুমার কুণ্ডু (৩৩), জাকিয়া ফারইভা ইভানা (৩৫), সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী (২৫), জাকারিয়া আশরাফ (২৬) ও মৈত্রী সাহা (২৭)। গতকাল অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩০শে জুলাই থেকে ২০শে আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ১২ চিকিৎসকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি সাইবার টিম। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১০ জন মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাছ থেকে মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্য সদস্য ও মেডিকেল প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি অসংখ্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়। এ ছাড়াও এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরি থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূল হোতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি সাইবার টিম।
আজাদ রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মাকসুদা আক্তার মালা ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা। ২০১৫ সালে নিজের মেয়ে ইকরাসহ আরও ৭ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। ডা. কে এম বশিরুল হক থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক। দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃত একাধিক আসামির সিআরপিসি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ডা. বশিরুল হকের নাম রয়েছে। এ ছাড়াও প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম এর গোপন ডায়েরিতে নাম রয়েছে। ডা. অনিমেষ কুমার কুণ্ডু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার। ২০১৫ সালে ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁসকৃত প্রশ্ন পড়িয়েছেন। এদের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন মেডিকেলে চান্স পায়। জাকিয়া ফারইভা ইভানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ডা. ইভানা ২০০৬-০৭ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ৬০তম স্থান অর্জন করেন। মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূল হোতা ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধানের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চান্স পান। গ্রেপ্তারকৃত সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী রংপুর মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ডা. অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পায়। জাকারিয়া আশরাফ ও মৈত্রী সাহা ২০১৫-১৬ সেশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এই দুই অভিযুক্ত ডা. অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চান্স পান। তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।