দেশ বিদেশ
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ক্লিয়ারেন্স না দিলে হামিদ কী করে বিদেশ গেলেন, প্রশ্ন রিজভীর
স্টাফ রিপোর্টার
১২ মে ২০২৫, সোমবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ক্লিয়ারেন্স না দিলে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ কি করে বিদেশে যেতে পারেন বলে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের উদ্যোগে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা উদ্বোধনকালে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সবচাইতে বড় সন্দেহ হচ্ছে যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি খুনের মামলার আসামি, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেলেন। আপনার (অন্তর্বর্তী সরকার) গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, এনএসআই ক্লিয়ারেন্স না দিলে কী করে উনি যেতে পারেন? তিনি এমন প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য যার বিচার হওয়া উচিত, তিনি কী করে বিদেশে চলে গেলেন। আমাদের হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল, এগুলো রক্ষা করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে মানুষ আন্দোলন করছে। কিন্তু তিনি তার এলাকা কিশোরগঞ্জে বিশাল হাওরের মধ্যে বিশাল রাস্তা বানিয়েছেন তার বাড়ি যাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, উনি (আবদুল হামিদ) তো ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি ছিলেন। উনি তো শেখ হাসিনার কথায় চলতেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনার যে মাইন্ড এবং মানসিকতা উনারও সেই মানসিকতা। দু’জনের মধ্যে তো পার্থক্য হবে না। সেই ব্যক্তি কীভাবে চলে গেলেন? তার তো লাল পাসপোর্ট আছে, এটা কি সরকার জানতো না? তার লাল পাসপোর্ট বাতিল করা হয়নি কেন? এটা তো সরকার জানতো, এটা কি এনএসআই ডিজিএফআই জানতো না? তাহলে তিনি কী করে যেতে পারলেন?
রিজভী বলেন, আমরা শুনেছি, একজন খুব শক্তিশালী উপদেষ্টা রয়েছেন, যিনি সমস্ত স্বরাষ্ট্র ব্যবস্থাটা তিনি দেখেন- তার নাম খোদা বখস চৌধুরী, তিনি নাকি খুব পাওয়ারফুল? আবার এটাও শুনি তিনি নাকি বিএনপিকে খুব একটা পছন্দ করেন না। নিজের মতো করে সব গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এত শক্তিশালী উপদেষ্টা থাকার পরও আজকে এই ধরনের পরিস্থিতি কেন হচ্ছে? আজকে সাতক্ষীরা-কুড়িগ্রাম-খাগড়াছড়ি-মৌলভীবাজার, এই সমস্ত সীমান্ত দিয়ে ভারত লোক ঢুকাচ্ছে, বাংলাদেশে পুশইন করছে। এসব বিষয়ে সরকার তো একটা কথাও বলেনি, কোথায় খোদা বখস? কোথায় সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর?
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কোথায় সরকার? তারা তো পুশইন বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এগুলো তো বিরাট এক অন্যায়। কোথা থেকে এই রাষ্ট্রীয় অপরাধগুলো করা হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী দেশের লোক জোর করে ঢুকিয়ে দিতে চান? বাংলাদেশে আমাদের কী অত্যন্ত দুর্বল জাতি মনে করছেন আপনারা? মুক্তিযুদ্ধ করা একটা জাতি, ৩০ লাখ মানুষ জীবন দেয়া একটা জাতি, দেড় হাজার শিশু-বাচ্চা-তরুণের জীবন দেয়া একটা জাতি- সেই জাতিকে পার্শ্ববর্তী দেশ তার ইচ্ছামতো লোক ঢুকাবেন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে, আর আপনারা নিশ্চুপ টুঁ-শব্দ করছেন না। এর কারণ কি? তাহলে তো শেখ হাসিনা যেমন করেছেন আপনারাও তাই করছেন!
তিনি আরও বলেন, আমাদের সীমান্তে লোক হত্যা করলে শেখ হাসিনা একটা প্রতিবাদও করতেন না, টুঁ-শব্দ করতেন না। আপনারাও কেন আজকে একেবারে নিশ্চুপ নিরুত্তর? এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তো সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছে, তারপরও কোন সাহসে পার্শ্ববর্তী দেশ জোর করে তাদের লোক আমাদের সীমান্ত দিয়ে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এসময় বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের নেতা সুশীল বড়ুয়া, পার্থ প্রতিম বড়ুয়া অপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।