দেশ বিদেশ
রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দিতে পারবেন ট্রাইব্যুনাল, আজ জমা হচ্ছে হাসিনা মামলার প্রতিবেদন
স্টাফ রিপোর্টার
১২ মে ২০২৫, সোমবাররাজনৈতিক দলের বিচার করার ক্ষমতা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংগঠন বলতে কোনো রাজনৈতিক দল অথবা সেই দলের অধীনস্ত সংশ্লিষ্ট বা সহযোগী কোনো সত্তা অথবা এমন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বোঝায়, যা ওই দল বা সত্তার কার্যকলাপ প্রচার, সমর্থন, অনুমোদন, সহায়তার মাধ্যমে জড়িত থাকে বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই আইনের বা তৎকালীন প্রযোজ্য অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক, যদি ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রতীয়মান হয় যেকোনো সংগঠন এই আইনের ৩ ধারার উপধারা (২) অনুযায়ী উল্লিখিত অপরাধ করেছে, তাহলে তাদের শাস্তির বিধান এই ধারায় সংযুক্ত করা হয়েছে।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যদি কেউ নির্দেশ দেয়, চেষ্টা করে, সহায়তা করে, প্ররোচিত করে বা উস্কানি দেয়, ষড়যন্ত্র করেছে, সহজতর করেছে বা সহযোগিতা করেছে, তাহলে ট্রাইব্যুনাল সেই সংগঠনের কার্যক্রম স'গিত বা নিষিদ্ধ করার, সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, নিবন্ধন বা লাইসেন্স স'গিত বা বাতিল করার আদেশ দিতে পারবে। এ ছাড়া, তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতাও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের এই সংশোধনীতে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ফারুক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান দমাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করতে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন সরকারের যথোপযোগী সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই আইনের দু’টি ধারায় এই সংশোধনের মধ্যদিয়ে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত রাজনৈতিক দল বা সংগঠন, তার অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীর বিচারের সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালকে।
প্রসিকিউটর ফারুক আরও বলেন, সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্র্যালয়ে জমা দেয়া হবে। প্রতিবেদনটি প্রসিকিউশন অফিস থেকে ফর্মাল চার্জ আকারে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হবে। পরে বিচার শুরু করতে আইন অনুযায়ী তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হবে। এ সময়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের প্রস'তি গ্রহণ করবেন। সুতরাং ঈদের পরেই শুরু হবে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া।
এদিকে, এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) সংশোধিত হয়েছে। ১৯৭৩ সালে এই আইন প্রণয়নের পর ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার আইনটি সংশোধন করে। ২০১৩ সালের সংশোধনীতে এ আইনে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচারের ব্যবস্থা করা হলেও শাস্তির বিধান ছিল না। আইনটি দ্বিতীয়বারের মতো এখন আনা সংশোধনীতে সংগঠনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।