ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত বা ঘা হলে...

অধ্যাপক ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার

শরীরের কোনো কোনো চামড়ার ঘা, যা শুকাচ্ছে না বা শুকাতে অনেক দেরি হচ্ছে অথবা শুকানোর পর আবার ক্ষত হচ্ছে, এসব ক্ষতকে ক্রণিক বা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত বলে। নানা কারণে এমন দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত হতে পারে। এসব ক্ষত সারাতে হলে বিশেষ যত্ন বা চিকিৎসা নিতে হয়।

দীর্ঘ সময় অচল থাকার কারণে এবং সব সময় চাপের কারণে রক্ত চলাচল কম হওয়ার ফলে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন, আগুন বা রাসায়নিক পদার্থ লেগে গভীরভাবে পুড়ে গেলে, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো ধরনের রক্তনালির রোগ থেকে, বিশেষ ধরনের জীবাণু দিয়ে ইনফেকশন হলে (মাইকোব্যাক্টেরিয়াম আলসারান্স) ত্বকে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত হতে পারে।

ক্ষত পূরণের স্বাভাবিক পদ্ধতি
স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো ক্ষত পূরণ হতে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ ও অবস্থা অতিক্রম করে। কোনো কারণে ওই ধাপগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হতে না পারলে ঘা বা ক্ষত শুকাতে পারে না। ধাপগুলো হলো-

ইনফ্লামেটরি স্টেজ
আঘাত বা ক্ষতস্থানে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে যায় এবং রক্তের অণুচক্রিকা এসে বাসা হয়ে ক্লট তৈরি করে ও রক্তপাত বন্ধ করে। রক্তপাত বন্ধ হওয়া নিশ্চিত হলে রক্তনালীগুলো খুলে যায় এবং রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়, ফলে ক্ষতস্থানটি লাল ও গরম হয়ে ওঠে। রক্তের শ্বেতকণিকা এসে কোনো জীবাণু থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। পরে ক্ষতস্থানটির চারদিকে কোষ বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষত পূরণের চেষ্টা করে।

ফাইব্রোব্লাস্টিক স্টেজ
কোলাজেন নামক প্রোটিন তন্তু, যা চামড়াকে দৃঢ়তা প্রদান করে, তা বৃদ্ধি পায় ও ক্ষতস্থানে জমা হতে থাকে। এটি নবগঠিত চামড়াকে চারদিক থেকে টান দেয় ও কুঁচকে গিয়ে জোড়া লাগাতে সাহায্য করে। নতুন রক্তনালী তৈরি হয় এবং ক্ষতস্থানের কোষগুলোকে রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

ম্যাচুরেশন স্টেজ
শরীর প্রতিনিয়ত ওই স্থানে কোলাজেন ও ফাইব্রোব্লাস্ট পাঠাতে থাকে, যা ক্ষুদ্র ক্ষত পূরণ করা ও ক্ষতকে দৃঢ় করতে সাহায্য করে। পরিপূর্ণ হতে অনেক ক্ষেত্রে কয়েক মাস বা বছরও লেগে যেতে পারে। তাই ক্ষত পূরণ হওয়ার পরও সম্পূর্ণ ঠিক হতে সময় দিতে হবে ও যত্ন নিতে হবে।

রোগ নির্ণয় চিকিৎসা
ক্ষত না শুকানো বা শুকাতে দেরি হওয়ার মূল কারণটি বের করে তার চিকিৎসা না করলে ক্ষত সারানো সম্ভব না। তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন ক্ষতস্থান, তার রক্তনালী ও স্নায়ুর শারীরিক পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। মূলত রোগীর রক্ত, প্রস্রাব পরীক্ষা ও ক্ষতস্থানের বায়োপসি করতে হয়। এ ছাড়া ক্ষতস্থানের রস বা কোষ নিয়ে ল্যাবরেটরিতে জীবাণু নির্ণয় করা জরুরি।

 

লেখক: চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার: কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার
ফার্মগেট, গ্রীন রোড, ঢাকা।
ফোন: ০১৭১১-৪৪০৫৫৮

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status