ঢাকা, ১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

অটিজম বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন

ডা. এমএ হক, পিএইচডি
২৩ জুলাই ২০২৩, রবিবার
mzamin

এখন থেকে ২০ বছর আগে কোনো সন্তানের অটিজম ধরা পড়লে শিশু বিশেষজ্ঞগণ নিজ মুখে বলতেন না যে, আপনার ছেলে অটিজমে আক্রান্ত। সেটা অভিভাবককে লিখে জানাতেন। তখন পরিস্থিতি এতোটাই রক্ষণশীল ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। আজকাল কম বেশি সবাই অটিজমের লক্ষণগুলো জানে, তাদের চিকিৎসা, ব্যবস্থাপনা,  পরিচর্যা সম্পর্কেও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় যারা ‘ডিজঅ্যাবিলিটি নিয়ে কাজকরতেন তারাও অটিজম নিয়ে কাজ করতে চাইতেন না। মনে করা হতো, অটিজমের ম্যানেজমেন্ট আলাদা। কেউই এই শিশুদের দায়িত্ব নিতে চাইতো না। বর্তমানের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। অটিস্টিক শিশুদের নতুন নতুন স্কুল তৈরি হচ্ছে, তারা সেখানে লেখাপড়া শিখছে। এতোকিছুর পরেও সমাজ এদেরকে এখনও সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে, এদের অভিভাবকদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। 

তারা হীনমন্যতায় ভুগছেন। এর প্রভাব তাদের পরিবার ও কর্মস্থলের উপর পড়ছে। ফলে, দিন দিন সমাজ থেকে তাদের দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছেন না। এ সকল ব্যক্তির, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য এ বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন।

একটি শিশু যখন পিতা-মাতার কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসে তখন রাজ্যের সুখ যেন পিতা-মাতার অন্তরে নেমে আসে। একদিন দুইদিন করে সে বড় হতে থাকে। তাকে ঘিরে পিতা-মাতার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। দুই থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যে যখন বুঝতে পারেন তাদের সন্তান নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার তখন সন্তানকে ঘিরে সকল সুখ, সকল স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে নিঃশেষ হয়ে যায়। তখন এ সকল পরিবারের পাশে সমাজ বা রাষ্ট্র না দাঁড়ালে তাদের জীবন-যাত্রা স্থবির হয়ে যায়; তাদের জীবনে হতাশার কালো অন্ধকার নেমে আসে।

এমন এক সময় ছিল যখন সমাজের কোনো একজনের বিপদে সকলে মিলে পাশে দাঁড়াতো। তখন ওই পরিবারের দুঃখ কষ্ট অনেক হালকা হয়ে যেত। বর্তমান সময়েও আমরা যদি এ সকল পরিবারের পাশে দাঁড়াই তাহলে তাদের কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হবে। তারা আবার সমাজে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। এ রকম পরিবেশ সৃষ্টি হলে শত সমস্যার মধ্যেও সমাজের সকলে ভালো থাকতে পারবো; আমরা ফিরে পাবো একটি আনন্দময় সমাজ, আনন্দময় পরিবেশ।

অতএব, আসুন আমরা সকলে মিলে এ সকল শিশুর পাশে দাঁড়ায়। তাদেরকে প্রেরণা যোগায়। এদের সঠিক চিকিৎসা আছে আমরা যেন সে ব্যাপারে সঠিক পরামর্শ প্রদান করি। পার্কে, রেস্টুরেন্টে, কোনো অনুষ্ঠানে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা যেন এদেরকে বা এদের অভিভাবকের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করি, তাদেরকে অবহেলা না করি।  আমাদেরকে মনে রাখতে হবে একা ভালো থাকার নাম ভালো থাকা নয়। সমাজের সকলে মিলে ভালো থাকার নামই ভালো থাকা, সুখে থাকা। আমরা এ সকল পরিবার নিয়ে সমাজের সকলে মিলে সুখে থাকতে চায়।

লেখক: পিএইচডি; এম. ফিল; ডিএইচএমএস। চিকিৎসক ও গবেষক (ক্রনিক ডিজিজ অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার)।
চেম্বার: ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট এন্ড রিসার্স সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর ১৪৪ গ্রীন রোড, পান্থপথ, ঢাকা।
মোবাইল: ০১৭১২-৪৫০ ৩১০।

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status