ঢাকা, ৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মত-মতান্তর

দেরি হওয়ার আগে বুঝুন ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিন

ব্যারিস্টার নাজির আহমদ

(২ মাস আগে) ২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৬:০৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

mzamin

গোঁয়ার্তুমি ও একগুঁয়েমি ছাড়ুন, আলোচনায় বসুন। ১/১১ -এর পর জেলখানায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একসঙ্গে বসে আড্ডা দিতে পারলে ও একে অন্যের খাবার খেতে পারলে জেলখানার বাহিরে বসে আলোচনা করতে সমস্যা কি? কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করবেন না, করলে আপনারাই হবেন ভিকটিম। ইতিহাস তার জ্বলন্ত প্রমাণ। 

সমস্যা সমাধানে সংবিধান মোটেই কোনো বাধা নয়। সংবিধানে ছিল না বা সংবিধানের বাহিরেও অতীতে সমস্যার সমাধান হয়েছে এমন নজির একাধিক আছে বাংলাদেশে। সংবিধান কোরআন বা বাইবেল নয় যে তা পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না বা যাবে না। খোদ ব্যক্তির জন্য একাধিকবার সংবিধান সংশোধন হয়েছে এই বাংলাদেশে! সংবিধানে ছিল না এমন অবস্থায় ১৯৯১ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে ওই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে বড় দু’দল মিলে (যেহেতু কোনো দলেরই দুই-তৃতীয়াংশ ছিল না সংবিধান সংশোধনের জন্য) ১৯৯১ সালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনের নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। একইভাবে দু’বছরের সেনা সমর্থিত ১/১১ সরকার ও তাদের কার্যাবলী পরবর্তীতে বৈধতা দেয়া হয়েছে। সুতরাং সংবিধানের দোহাই দিবেন না। 

নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল বা দলগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করবে ক্ষমতায় থাকার জন্য এবং বিরোধী দল বা দলগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক এবং এতে দোষের কিছুই নেই। তবে সেই আপ্রাণ চেষ্টা হতে হবে আইনের গণ্ডির ভেতরে।

বিজ্ঞাপন
 কিন্তু গুরুতর দোষের বিষয় হলো- সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না করা বা না হতে দেয়া। সংবিধান মতে দেশের মালিক বা সকল ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ। সুতরাং দেশের মালিকদের তাদের মূল্যবান রায়টা অবাধে সুযোগ করে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিন, যেমনটি অন্তত: করেছিল পাকিস্তান ১৯৭০ সালে কঠিন শোষণের পরও এবং হাল আমলে করেছে তুরস্ক টান টান উত্তেজনা ও প্রতিযোগিতার মধ্যেও।

জনগণ যদি চায় এবং তাদের ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি তো বটেই এমনকি দিলীপ বড়ুয়ার সাম্যবাদী দলও যদি ক্ষমতায় যায় কারও কিছু বলার নাই। এটাই হলো প্রকৃত গণতন্ত্র। কিসের বড়াই করেন সংশ্লিষ্টরা?  ক্ষমতাসীনরা এই সুযোগটা কি করে দিতে পারেন না? স্বাধীন বাংলাদেশে দেশের মালিকদের এটা চাওয়া কি খুব বেশি কিছু চাওয়া?
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। সিমটমগুলো ভালো মনে হচ্ছে না। আস্তে আস্তে পেইন শুরু হলেই না ডেলিভারি পেইন শুরু হয়। ১/১১ এর আগে এমন অনেক ছোটখাটো ঘটনা ও ২৮শে অক্টোবর রাস্তায় মানুষ পিটিয়ে মেরে নৃত্য করার ঘটনা ছিল ১/১১ এর উপলক্ষ বা প্রেক্ষাপট। হাল আমলের ঘটনাগুলো বিশেষ করে হিরো আলমের ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘ, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ১৪টি দেশের যৌথ বিবৃতি নতুন কিছুর ঈঙ্গিত বহন করছে।

অনেক খেলারাম খেলে যাচ্ছে। দেরি হওয়ার আগে বুঝুন ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিন। নতুবা দারুণভাবে পস্তাতে হবে এবং আফসোস করতে হবে, যেমনভাবে পস্তাতে হয়েছে ও আফসোস করতে হয়েছে রাজনীতিবিদদের একাধিকবার বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে। রাজনৈতিক ভুল অনেক সময় শোধরানো যায় না।

নাজির আহমদ: বিশিষ্ট আইনজীবী, লেখক, বিশ্লেষক এবং ইংল্যান্ডের প্র্যাকটিসিং ব্যারিস্টার।

পাঠকের মতামত

সংলাপ যারা করতে সক্ষম নয়, প্রতারণা যাদের সম্বল তাদের উপদেশ না দেয়াই ভালো। অবৈধের জন্য কোন ক্ষমা নেই। গভীর রাতের ভোট কি বৈধ? অতীত তার দুর্দান্ত প্রমাণ। তারপরও ঐ ছলবাজের, নেড়াকে বেলতলাতে ডাকা কি ঠিক? দুই দুইবার তত্ত্বাবধায়ক আসার কথা আইনে স্পষ্ট নির্দেশ থাকার পরও ওটি হতে দেয়নি যে, তার ঐ দুর্বৃত্তায়নের কারণেই তার পদত্যাগ জরুরী। সংকীর্ণ স্বার্থে যে সংবিধান বদল করে, ইজ্জত থাকলে ইতমধ্যে পদত্যাগ করতো অবশ্যই। তাকে আগে সমগ্র জাতি সরতে বলেন, জাতির শুদ্ধাচার জরুরী। ন্যায় বিচারে ন্যায় কথায় অটল থাকেন। যারা আসল কুরআন ঠেলে রেখে ইচ্ছেমত আইন বদল করে কপট স্বার্থে তাদের কাছেই বদল করা সংবিধান কুরআন শরিফ, বাইবেল শরিফ। মিঠে কথায় এভাবে চিড়ে ভিজবে না। দুষ্ট সহজে সুবোধ হয় না। মানুষ খেকো বাঘ মানুষ পেলেই কলিজায় কামড় দেয়। এটি বার বার দেয়, চিরাচরিত নিয়ম নতুন নয়। অপরাধ পোষা সমাজেই দুর্বৃত্তায়নের চাষ হয়। বার বার হয়।

Nazma Mustafa
১৬ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৩:৩৮ অপরাহ্ন

গণ্ডমূর্খ গুলোর গন্ডারের চামড়ার সঙ্গে মিশে গোঁয়ার্তুমি ও একগুঁয়েমি। নিজেরা ও মরবে এবং দেশকে ধ্বংস করে তারপর পালাবে!

বন্ধু খান
২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ১০:০৫ অপরাহ্ন

ব্যক্তি, পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় - সব জায়গায় স্বচ্ছতা ও শুদ্ধতার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দরকার। তবে দেশের নাবিক হিসেবে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি প্রভাব রাখে নাগরিক জীবনে। আমরা শুদ্ধ সরকার চাই। ন্যায় ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই। সত্যিকারের স্বাধীনতা চাই।

মোঃ মাহফুজুর রহমান
২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

আলোচনার বিকল্প নাই। আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। এই শেখ হাসিনার সরকার ১৪-১৮ এর মতো যদি এবার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাহলে জনগণের গণ আন্দোলনের মাধ্যমে খুব বাজে ভাবে পতন হবে এই সরকার।

মোঃ ইব্রাহীম খলিল
২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৯:৪৭ পূর্বাহ্ন

নাগরিক দের ও ভূমিকা থাকা উচিত। কে কোন দলের সাপোর্টার সেটা বড় কথা নয় বড় কথা হলো দেশ। আমেরিকা sanctions দিয়েছে এটা লজ্জার। আসুন দেশের স্বার্থে আমরা আমাদের যার যা ভূমিকা পালন করী। প্রমান করি আমরা সুশৃংখল জাতী। জেদ ত্যাগ করূন। আলোচনায় বসুন।

Dominos
২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন

   

মত-মতান্তর সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status