প্রথম পাতা
কলকাতায় লোডশেডিং নেই, জেলাতেও শব্দটি প্রায় অপরিচিত
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে
৮ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার
সময়টা ছিল সত্তর-এর দশক। প্রথমে যুক্তফ্রন্ট ও পরে বামফ্রন্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায়। বাম সরকারের উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে অক্সফোর্ড ডিকশোনারিতে দুটি শব্দ যুক্ত হয়- ঘেরাও আর লোডশেডিং। সত্তর-এর দশকে প্রতিটি অফিসে অফিসে চলতো ঘেরাও। আর সন্ধ্যা হলেই হঠাৎ আলো নিভে যেত, পাখা বন্ধ হয়ে যেত, বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকতো কলকাতা আর পশ্চিমবঙ্গ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুঃসহ গরমে শহর থেকে জেলা পর্যন্ত ছিল অতিষ্ঠ। আলোবিহীন অবস্থায় থাকতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। নব্বইয়ের দশকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও লোডশেডিং আবার ফিরে আসে দু’হাজার তিন সালে। বলা হয়ে থাকে বাম সরকারের দু’হাজার এগারোয় পতনের অন্যতম একটি কারণ ছিল এই লোডশেডিং। দু’ থেকে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকাটা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছিল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথম নজরটি দেন বিদ্যুৎ উৎপাদনে। বিভিন্ন হাইড্রো পাওয়ার স্টেশনগুলোকে তিনি সচল করে তোলেন এবং পাওয়ার জেনারেশনে মনোযোগী হন। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ সংস্থার জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, রাজ্যে এখন বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ব্যতীত জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ডবলু বি এস ই সি ডি এল কে এখন আর বিদ্যুতের জন্য ভিন রাজ্যের পাওয়ার গ্রিডের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে হয় না। বরং অন্য রাজ্য তাকিয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে। কলকাতায় বিদ্যুতের চাহিদা সব থেকে বেশি।
মমতা প্রাইভেট সংস্থা ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই করপোরেশন বা সিইএসসিকে দায়িত্ব দিয়ে দেন কলকাতার বিদ্যুৎ বণ্টন ও রক্ষণাবেক্ষণের। মনোপলি এই ব্যবসায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় সঞ্জীব গোয়েঙ্কার নেতৃত্বে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে চলেছে এই সংস্থা। সিইএসসি’র এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়- পাওয়ার জেনারেশন এবং উন্নত মানের রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের কোম্পানির ব্রত। এই দুয়ের যোগের নিটফল- এই প্রচণ্ড দাবদাহতেও মানুষ নিশ্চিন্ত- আর যাই হোক, লোডশেডিং আর হবে না।