প্রথম পাতা
আন্দোলনকারীদের উল্লাস, আনন্দ মিছিল
স্টাফ রিপোর্টার
১১ মে ২০২৫, রবিবারগণহত্যার বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের পর শাহবাগ এলাকায় অবস্থান নেয়া আন্দোলনকারীরা উচ্ছ্বাস করেন। সরকারি এই সিদ্ধান্তের পর টানা দুইদিন চলা অবস্থান কর্মসূচি রূপ নেয় আনন্দ মিছিলে। আন্দোলনকারীরা শাহবাগ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় এলাকায় মিছিল করে বিভিন্ন সেøাগান দেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল হয়েছে। ওদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ সরকারি সিদ্ধান্ত জানানোর পর দলের নেতাকর্মীদের সড়কে অবস্থান ধরে রাখতে বলেন। পরে তারা করণীয় নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন। রাত একটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহবাগে কয়েকশ’ আন্দোলনকারীকে অবস্থান করতে দেখা যায়।
ওদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ ৩ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় গতকালও দিনভর অবরুদ্ধ ছিল। টানা অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসূচি থেকে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা দ্রুত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দেন। গণজমায়েতে বক্তারা বলেন, যারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় না তারা ফ্যাসিবাদী। আওয়ামী লীগ একটি খুনি দল। তাদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। হাজারো ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার। এই খুনের দায়েই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচিতে গতকাল বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সকাল থেকেই শাহবাগ মোড়ের চারপাশের সড়কগুলো অবরোধ থাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। তবে এম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার যানবাহন চলাচলে ছাড় দেয়া হয়। ছাত্র-জনতার অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়ের প্রতিটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বিকাল গড়াতেই লোকে লোকারণ্য হয় পুরো শাহবাগ মোড় চত্বর। বিকাল ৩টার পর থেকেই এলাকা জুড়ে ছোট-বড় মিছিল আসতে শুরু করে। মিছিলগুলো টিএসসি, মৎস্য ভবন ও নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন দিক থেকে শাহবাগমুখী হয়। গণজমায়েতে অংশ নেয় এনসিপি, ইসলামী ছাত্রশিবির, হেফাজতে ইসলাম, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এদিন রাত ১০টা থেকে এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে যমুনার সামনে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত ১টার দিকে মিছিল নিয়ে যমুনার সামনে যান এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পাঁচটি পিকআপ ভ্যান একত্র করে সমাবেশের জন্য যমুনার পাশে ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশের ফোয়ারার সামনে ‘জমায়েত মঞ্চ’ তৈরি করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে রাতভর অবস্থান এবং মিন্টো রোডের মোড়ে মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভের পর গত শুক্রবার বিকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা।