প্রথম পাতা
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার মালিক বিএনপি না
স্টাফ রিপোর্টার
১০ মে ২০২৫, শনিবার
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন ও সরকার নিতে পারে। বিএনপি এই সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক না। গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কার্টার সেন্টারের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে মহাসচিবের সঙ্গে মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন। ওদিকে কার্টার সেন্টারের ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র এসোসিয়েট ডিরেক্টর জোনাথন স্টোনস্ট্রিটের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টির দাবির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, দেখুন এই প্রশ্নের উত্তরে সহজ যে কথা, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি হবে না সেটা তো বিএনপি’র বক্তব্যের বিষয় নয়। এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বলছে, তারা তাদের বক্তব্যে বলেছে। কাজেই বিএনপি হিসেবে তো আমরা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক নই। আমাদের মহাসচিব ইতিমধ্যে বলেছেন যে, জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয় এটা। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা নির্বাচন করবে কি না করবে। এটা হচ্ছে আমাদের বক্তব্য।
তিনি বলেন, আসলে আমি নিজেরও একটি বক্তব্য যোগ করতে চাই, সেটা হচ্ছে, আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না বা তাদেরকে গ্রহণ করা হবে কি হবে না কিংবা তাদের নিষিদ্ধ করা হবে কি হবে না। আমি যদি বলি, এই প্রশ্নটা আওয়ামী লীগকে কেন জিজ্ঞাসা করেন না? তারা কি আসলেই নির্বাচন করতে চায়, তারা কি আসলেই গণতন্ত্র চায়? সেটা তো আওয়ামী লীগকে বলতে হবে।
বিএনপি’র এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আজকে পর্যন্ত ৯ মাস চলে গিয়েছে, একজন আওয়ামী লীগারকে আজকে পর্যন্ত দেখাতে পারবেন যে, তারা বলেছে, তারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এদেশের মানুষের ওপরে জুলুম করেছে, ফ্যাসিস্ট কায়দায় এদেশকে তছনছ করে দিয়েছে, লুটপাট করে নিয়েছে, তারা ভুল করেছে, তারা ক্ষমা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। তারা আজকে বাংলাদেশের মানুষের মতামত নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগের একটি লোকও কী তা বলেছে? বলেনি তো। কাজেই প্রশ্নটি আসলে আমাদের জিজ্ঞাসা করার কোনো প্রয়োজন নেই। এর উত্তর বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ জানে।
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি হচ্ছে, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্রায়ন। নির্দিষ্টভাবে তারা যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন সেটা হচ্ছে নির্বাচনে তারা হয়তো মনিটরিং করতে আসতে পারেন। যদি সেটা হয় সেটা কীভাবে সম্ভব হতে পারে এবং সেটা কখন, মূলত এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ড. মঈন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নিতে হবে তার কোনো যুক্তিকতা নেই। নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে করা সম্ভব, এখন তো ইতিমধ্যে ৯ মাস হয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আলোচনায় আসবে, আমরা যদি নাও করি মানুষ চুপ করে থাকবে না। আলোচনা হয়েছে কতো দ্রুত এটা করা যায় এবং বিএনপি কখন এই নির্বাচনটি প্রত্যাশা করছে।
তিনি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে কিন্তু এটা ১৮ কোটি মানুষের জন্য সুখকর হবে না। সেজন্য একটি কথা আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে, জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি, সেই সত্যিকার প্রতিনিধি যেটা নির্ধারিত হতে পারে একমাত্র একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নির্বাচনটি যত শিগগিরই হয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি, সেটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে, সেই কথাটি আমরা তাদের বলেছি।