অনলাইন
চার্জার ফ্যান খুঁজছেন তারা
ইমরান আলী
(১ বছর আগে) ৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ১:০৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৭ পূর্বাহ্ন

মঙ্গলবার দুপুর। মিরপুর-১০ থেকে মিরপুর-১। ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। কাছে গিয়ে দেখা গেল অন্য এক চিত্র। সবাই চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছেন। কিন্তু পাচ্ছেন না। দোকানির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতেও দেখা গেল কাউকে আবার।
সাভারের বিরুলিয়া থেকে এসেছেন শহিদুল ইসলাম। বললেন, সকাল থেকে অন্তত ১০টা দোকান ঘুরলাম। চার্জার ফ্যান পাচ্ছি না। যে দু-এক দোকানে পেলাম দাম দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। কোনো দোকানি ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান অল্প পরিমাণে বিক্রি করলেও দাম অনেক। এই ক্রেতার কথা স্বীকার করলেন মিরপুর-১ এর মুক্তবাংলা মার্কেটের নোয়াখালী ইলেক্ট্রনিক্সের কর্ণধার মিজানুর রহমান। বললেন, ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান সেভাবে পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি পাইকারি কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এজন্যই দাম বাড়তি রাখতে হচ্ছে।
কোন ফ্যানগুলোর দাম বেশি জানতে চাইলে বললেন, বিদেশ থেকে যেগুলো আসছে সেগুলো দাম বাড়তি। গত দু’দিনের ব্যবধানে কোনো কোনো চার্জার ফ্যানের দাম বেড়েছে আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। নবাবপুর, গুলিস্তান থেকে পাইকারি নিয়ে আসি। সেখানেও চাহিদামাফিক পাচ্ছি না। পঞ্চাশ পিস চার্জার ফ্যান কিনতে গিয়ে পাচ্ছি পাঁচ পিস।
শহিদুল ইসলামের মতো আরও কয়েকজন এসেছেন চার্জার ফ্যান কিনতে। মুক্তবাংলার বেশ কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানেও একই চিত্র দেখা গেল। এসএস ইলেকট্রনিক্সের বিক্রেতা সজিব জানালেন, অনেকেই এসে ঘুরে যাচ্ছেন। চার্জার ফ্যান দিতে পারছি না। গত এক সপ্তাহ ধরে চার্জার ফ্যানের ক্রেতা বেড়ে গেছে। তার দোকানের পাশেই মদিনা ইলেক্সট্রনিক্স। বিক্রেতা বললেন, ক্রেতারা এসে ভিড় করছেন। আমরাও নিরুপায়। যা আনছি তার বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেককেই নিরাশ করতে হচ্ছে। আরেক বিক্রেতা জানালেন, ক্রেতাদের সঙ্গে সন্ধ্যায় গণ্ডগোল পর্যন্ত হয়েছে। বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ করে চলে গিয়েছি রাত আটটার আগেই।
তিনি আরও বলেন, গরমে সেলিং ফ্যান থেকে শুরু করে সব চার্জার ফ্যানের চাহিদাই বাড়ে। কিন্তু এবার লোডশেডিং এতই বেশি যে, বাধ্য হয়ে চার্জার ফ্যান তুলেছিলাম । কিন্তু এগুলোরও দাম অনেক বেড়েছে।
এক নারী ক্রেতাকে দেখা গেল মোবাইলের চার্জ দিয়ে চলে এমন ছোট্ট একটি ফ্যান কিনতে। বললেন, গরমে টিকতে পারছি না। বিদ্যুৎ থাকছে না বাসায়। বাধ্য হয়ে এটা কিনেছি। বাচ্চাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে।
মিরপুর -১ এ ইলেক্ট্রনিকসের পুরনো নষ্ট পণ্য ঠিক করে এমন কয়েকটি দোকানে গিয়ে দেখা গেল বেশ ভিড়। অনেকেই এসেছেন চার্জার ফ্যান ঠিক করতে ।
এক ক্রেতা বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরেও সেকেন্ডহ্যান্ড চার্জার ফ্যান কিনতে পারলেন না। হতাশার সুরে বললেন, এই গরমে বিদ্যুত ছাড়া টেকা যাচ্ছে না। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং। পরিবারের সবাই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ওদিকে এই প্রতিবেদক বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের দোকানে গিয়ে দেখলেন চার্জার ফ্যান নেই। তারা বলছেন, দুদিন আগে সব শেষ হয়ে গেছে। ফের কবে আসবে তা বলতে পারছি না। লোডশেডিং এর কারণে এবার চার্জার ফ্যান কিনতে আসছে সবাই।