অনলাইন
কেন তারা আপনাকে সরাতে চাইবে? বিবিসিকে শেখ হাসিনা যা বলেছেন
অনলাইন ডেস্ক
(৪ মাস আগে) ১৬ মে ২০২৩, মঙ্গলবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:১০ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় দেশে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে।
শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির ইয়ালদা হাকিমকে এ একান্ত সাক্ষাৎকার দেন।
প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলা ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ, বিচার বর্হিভূত হ্ত্যা, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। বিবিসি বাংলা সাক্ষাৎকারটির বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অটোক্রেসি বা একনায়কতন্ত্রের যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করা হয়, সেটি নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘’গত ১৪ বছর ধরেই শুধুমাত্র দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।”
বিবিসি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশের একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন?
এই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’যে বাহিনীর ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সকল প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? এটা আমার কাছেও বিরাট এক প্রশ্ন।‘’
শেখ হাসিনার কাছে ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, তাহলে কেন তারা এটা করেছে বলে তিনি মনে করেন?
তিনি বলছেন, ‘’আমি জানি না, হয়তো তারা আমার কাজ অব্যাহত থাকুক তা চায় না, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বাংলাদেশে বন্দুকযুদ্ধের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন বিবিসির ইয়ালদা হাকিম।
নিষেধাজ্ঞা জারির আগে ২০১৮ সালে ৪৬৬ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৩৮৮ মানুষ এভাবে নিহত হয়েছে আর ২০২০ সালে নিহত হয়েছে ১৮৮ জন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর এই সংখ্যা মাত্র ১৫ জনে নেমে এসেছে।
এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’যেসব নাম্বার তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি। কারণ আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম, সেগুলো তারা পাঠিয়ে দিক, আমরা তদন্ত করে দেখবো।‘’
জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচেভেলের একটি তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, এই র্যাবের দুইজন ব্যক্তি গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেছেন যে, এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে।
এই তথ্য তুলে ধরা হলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’আমি জানি না তারা কীভাবে এটা করেছে, কিন্তু আমেরিকায় কি ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল, শপিং মল, রেস্তোরায় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে।‘’
‘’আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।‘’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘’আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়, কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?"
শেখ হাসিনা নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, ‘’এই খুনিরা দায়মুক্তি পেয়েছিল। আমি এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি, আমার বিচার পাওয়ার কোন অধিকার ছিল না। সেই সময় তারা কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং একজন হত্যাকারী আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি, তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। তারা করেনি। কেন তারা শুনছে না, আমি জানি না।‘’
বাংলাদেশের পার্লামেন্টে গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়। এই বক্তব্যের পক্ষে কী প্রমাণ আছে? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় শেখ হাসিনার কাছে।
তিনি বলছেন, ‘’আমার কাছে একটা বড় প্রশ্ন হলো, কেন তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করলো? যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবেলার জন্য কাজ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তখন তারা লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যারা ভুক্তভোগী, তাদের পক্ষে নয়।‘’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘ, সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে- এই তথ্য শেখ হাসিনাকে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘’আমি জানি ১২টি প্রতিষ্ঠান মিলে এসব বক্তব্য দিয়েছে, কিন্তু তারা প্রমাণ করতে পারেনি। আমি জানি না কী আন্তর্জাতিক খেলা চলছে।‘’
কেন তারা আপনাকে সরাতে চাইবে? ইয়ালদা হাকিমের এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘’তারা আমার পিতাকে হত্যা করেছে। যারা আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, এমনকি ১০ বছরের ভাইকে হত্যা করেছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসুক।‘’
পাঠকের মতামত
We want Election under a Care Taker Govt. with UN supervision and no to EVM. I thank USA for their support.
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি জনগনের ভোটের আশা করেন, তাহলে আপনি অবাদ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন,যদি জনগন আপনাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে জনগন আবার আপনাকে ক্ষমতায় বসাবে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে আপনার ভয় কিসের?
আপনার যদি এতো জন প্রিয়তা থাকে তবে কেন নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছেন না? বিশ্ববাসি তো দেখে আপনি নির্বাচন নামে কি করতেছেন । আমি তো গত দুই নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। ভোট আগেই দেওয়া শেষ।
Who dare to vote when party has own militia, police and court.
বিগত ১৪ বছরে যতগুলো জাতীয়, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার অধিকাংশই বিতর্কিত, রাতের আঁধারে, যোগসাজসের নির্বাচন হয়েছে বলে সারাদেশে খবর চাউর হয়েছে। এদেশের বাচ্চা ছেলে- মেয়েরাও জানে নির্বাচন মানেই একটা প্রহসন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ব্যতীত জাতীর কোন কল্যাণ বয়ে আনেনি বলেই বিরোধী ঘরনার সকলের ঐক্যমত্য বিশ্বাস। কাজেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনগনের নির্বাচিত সরকার বলে যে বক্তব্য প্রদান করেন তা সত্যের অপলাপ এব্ং জনগনের সাথে উপহাস বলে সকলে মনে করেন।
আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে গুম খুনের সুনির্দিষ্ট কারনে। আবার তারা কাউকে ক্ষমতা থেকে সরানোর কথাও বলেনি। তারা চায় সুষ্ঠু নির্বাচন। যেটা সকল বাংলাদেশীরও চাওয়া। কিন্তু যে ভোট ডাকাতি করতে চায় সেতো মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেই । এবং সেটাই স্বাভাবিক। পরিশেষে বলি একজন মানুষের কত বছর ক্ষমতায় থাকতে হবে?
আপনার যদি এতো জন প্রিয়তা থাকে তবে কেন নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছেন না? বিশ্ববাসি তো দেখে আপনি নির্বাচন নামে কি করতেছেন । আমি তো গত দুই নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। ভোট আগেই দেওয়া শেষ।
কমেন্টার শামিমকে বলছি ভালো কাজে সাহস দেখালে ভালো। তবে চোরের মায়ের বড় গলা ভালো না।
বাংলাদেশের বিতর্কীত প্রধানমন্ত্রী বলছেন তারা (আমেরিকা) প্রমাণ করতে পারেনি। গোটা দেশে গণতন্ত্রের নামসর্বস্বতার আড়ালে চরম স্বৈরতন্ত্র চালু রেখে সব অপকর্ম প্রশাসন দিয়ে দাবিয়ে রাখা, এটি দেশসহ গোটা বিশ্বই কমবেশী জানে। সব প্রশ্নের এক জবাব তার ও তার দলবাজদের সবসময় জমা রাখা। অতীতের সব গোজামিলের জবাব ছিল যুদ্ধপরাধীদের দায়। ১৫ আগষ্টের হত্যাকান্ড ঘটায়নি যুদ্ধপরাধী বা অন্য কেউ। ওটি ঘটায় তার নিজ দলের অনুসারী তবে তারা সবাই সচেতন মুক্তিযোদ্ধা। যাদের চোখের সামনের অবস্থান আজকার অবস্থানের স্বরুপে ছিল বলেই ঐ সময়কার আওয়ামী লীগের সচেতনা ওটি ঘটায়। ওরা হয়তো আজো ময়দানে থাকলে ওটি দ্বিতীয়বার ঘটাতো। শেখ হাসিনা সব সময় তার পরিজনের মরণ কান্না এনে জুড়ে দেন। ঠিক যুদ্ধপরাধীর কথা আগে বলতেন এখন ওটিই তার শত অপরাধের নিরাপত্তার ঢাল হিসাবে তিনি ব্যবহার করেন। যদিও তিনি যা বলেন তার সবটাই থাকে মিথ্যায় জড়ানো, তথ্যবহুল কথা নয়। প্রমান দেন বিচার করবো। আপনি অপরাধ করবেন আর পুলিশ লেলিয়ে প্রশাসনে সব সারবেন। আবার প্রমান চান বর্হিবিশেশ্বর কাছে। ঐ সব পগলাবুলি শুনে তাদের সন্ত্রাসী দলবাজরা খুশীতে তালিয়া বাজায়।
সহমত।
এ ভাবে জবাব দেবার সাহস আর বুকের পাটা ক'জনার আছে? মাথা দেওয়া হয়েছে উচু করে রাখার জন্য,সেটা আবার মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ - "শেখ হাসিনা"।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করে. বাংলাদেশের মানুষ যদি সত্যিই আপনাকে ভালবাসে, আপনার তো চিন্তার কোন ব্যাপার না, আপনি বিজয় হবেন, বিগত নির্বচন নিয়ে নানা মহলের প্রশ্ন আছে? আপনি বাংলাদেশকে গৃহযুদ্ধের হাত থেকে বাঁচান
As a citizen of Bangladesh, we want the voters to elect their representatives to the parliament. No need to talk again US. Just provide a neutral administration to conduct a free and fair election. US cannot change any regime if the voters of the country don’t want. We have very bad experience in elections under any party. The administration or the government during the election has to be neutral. When the current government doesn’t want neutral government during election, it is very clear that they want to influence the election in their favor.
বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের স্লোগান হচ্ছে জনগণের কথা বলা জনগণের সেবা করা আর সেই জন্য তাদের ক্ষমতায় যোতে হবে। জনগণের মঙ্গলের কখন কখন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হয় এটা কি রাজনৈতিক দল গুল জানে না? দেখা যাচ্ছে সবাই স্বার্থপর।
আমেরিকা চাইলেই কি পরিবর্তন সম্ভব! ভোট দেবার অধিকার দেশের জনগনের। অন্যদেশ কি চাইলো তাতে কিছু যায় আসে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে নির্বাচন ব্যবস্থা ধংস করেছে।ত্রিশ বছর বয়স ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা নেই।আমার ভাবতে লজ্জা লাগে। কিন্তু সরকারের লজ্জা হয় না।
সহমত
মন্তব্য করুন
অনলাইন থেকে আরও পড়ুন
অনলাইন সর্বাধিক পঠিত
ভিসা নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী/ ছেলের ভিসা বাতিল করলে করবে
এমপি বাহারের আবেদনে সাড়া মেলেনি/ ঘরের বউকে ঘরে তুলতে বললেন আদালত
এনডিটিভি'তে সাগরিকা সিনহা/ শেখ হাসিনার ধারণা, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]