ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কলকাতা কথকতা

চলুন যাই কলকাতায় ঈদের খাদ্যসড়ক জাকারিয়া স্ট্রিটে

বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা

(১ বছর আগে) ২১ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ৮:২৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

mzamin

কলকাতার সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনকে পিছনে রেখে ধূলিধূসরিত পথ পেরিয়ে চিৎপুর।  ট্রাফিক জর্জরিত মুটে আর মালবাহী ট্রাকের দৌরাত্ম্য  পেরিয়ে চিৎপুর মোড়ের কাছে নাখোদা মসজিদ। নাখোদা মসজিদকে ঘিরে আছে কলকাতার ঈদের খাদ্যসড়ক  জাকারিয়া স্ট্রিট। হাজি নূর মোহাম্মদ জাকারিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর নামে এই রাস্তা। গুজরাটের কচ্ছের মেমন সম্প্রদায়ের প্রতিভূ ছিলেন এই জাকারিয়া। নাখোদা মসজিদ মেমন সম্প্রদায়েরই বানানো। শনিবার ঈদ, তাই শুক্রবার রাতেই নাখোদা মসজিদের সামনে অস্থায়ী খাবারের দোকানের ছাউনি পড়ে গেছে। সেঁকা মাংসের সুগন্ধ, কাবাবের মন পসন্দ বাস ঘ্রাণেন্দ্রিয়কে সচেতন করে তুলছে। 

জাকারিয়া স্ট্রিটের কাবাব যে খায়নি তার ইহকাল না-কি বৃথা। সঙ্গী সাংবাদিক জাফর আলি খান বললেন, ঈদে আর রমজানে জাকারিয়া স্ট্রিটে না এলে তার পেটের ভাত হজম হয় না। স্থায়ী রেঁস্তোরা গুলিও সেজেছে অপরূপ সাজে।

বিজ্ঞাপন
নাখোদা মসজিদে আলোর মালা সব মিলিয়ে উৎসবের পরিবেশ। জাকারিয়া স্ট্রিটে ঢুকলাম ফিয়ার্স লেন টপকে। প্রথমেই আদামস কাবাব শপ। দেড়শ বছর ধরে এরা বিক্রি করছেন, সুতি কাবাব আর বটি কাবাব। গরুর মাংসের এই কাবাব অত্যন্ত লোভনীয়। একটি মোড় নিয়ে কলুটলার দিক দিয়ে এবার ঢোকা গেল অল বাইক রেঁস্তোরায়। এদের চিকেন শিক কাবাব, চিকেন মালাই কাবাব বিখ্যাত। করোনার জন্য দু’বছর ব্যবসা মার খেয়েছে। 

এবার ঈদের আগের সন্ধ্যায় ভিড় একদম থিক থিক করছে। দিলসাদ লাজীজ কাবাবের ঠেক এর পাশেই। জাফরের সঙ্গে দিলসাদ চাচার ভালো পরিচয় আছে। 

বললেন - এবার ঈদের খাওয়া-দাওয়া জমে গেছে। দিলসাদ থেকে একটু এগিয়েই খান গলি। তার মধ্যে যে এমন ঐশ্বর্য কে জানতো? খান গলির তাসকিনে মিললো জাকারিয়া স্ট্রিটের ঈদ নিজস্বী- মুর্গ চানগেজি। মুরগির বক্ষ কিংবা লেগ পিস ৫০ ডিগ্রি আঁচে সেঁকে পরিবেশন করা হয়। নাখোদার সামনে অস্থায়ী সামিয়ানার দোকানগুলিতেও দেদার বিকচ্ছে এই পদ। সঙ্গে শশা পেঁয়াজের সালাদ। শেষপাতে লস্যি কিংবা ফালুদা। অসাধারণ বলতেই হয় - ইয়ে হামিনস্ত, ইয়ে হামিনস্ত, ইয়ে হামিনস্ত, স্বর্গ যদি কোথাও থাকে তা এখানেই, এখানেই, এখানেই।

পাশের দিল্লি সিক্স রেঁস্তোরায় স্মোকি চিকেন। তার পাশে সুফিয়ায় রমজান ডালিম। না, হালিম এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। মাংসের টুকরো, বিফের মগজ আর ডাল দিয়ে তৈরি এই ডালিম হালিমের পিসতুতো ভাই। এখানে মেলে জলেবি, গুজিয়া এবং চিড়ার মন্ড। একটু দূরেই বোম্বে হোটেল। যারা বিফ ভালোবাসেন তাদের যেতেই হবে বোম্বে হোটেলে। এদের বিফ বটি কাবাব, বিফ চাপ আর পরোটা খুব বিখ্যাত। এত সমস্ত গুরুপাক খাওয়ার পর একটু মিষ্টি মুখ না করলে হয়! মিষ্টি প্রেমীদের জন্য আছে হাজী আলাউদ্দিন সুইটস। এদের বিখ্যাত বাতেশা হালুয়া। ৩২ রকমের ড্রাই ফ্রুট দিয়ে এই হালুয়া তৈরি হয়। 

এছাড়াও আছে মেওয়া লাড্ডু, গুলাব জামুন আর আখরোটের হালুভ। তবে, কেতাদুরস্ত রেঁস্তোরার বাইরে নাখোদা মসজিদের সামনে অস্থায়ী সামিয়ানার নীচে দেখলাম ভিড় বেশি।  সেমাইয়ের পায়েস আর কাঠের তিন চাকার গাড়িতে বিক্রি হওয়া হালিমের বেশ কদর। কলকাতার খাদ্য সড়ক জাকারিয়া স্ট্রিট যখন ছেড়ে আসছি তখন আঁতর, সেঁকা মাংস আর নানা ধরনের পরোটার গন্ধে ‘ম’ ‘ম’ করছে খাদ্য সড়ক। মাইক্রোফোনে শুরু হলো ঈদের গান। আকাশে চাঁদ দেখা গেছে। ঈদের মহোৎসব শুরু হয়ে গেল!   

কলকাতা কথকতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

কলকাতা কথকতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status