ঢাকা, ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ও কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৬ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার
mzamin

গত বছর মার্চের চেয়ে এবার তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় কম হয়েছে। এ বছর মার্চে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় হয়েছে ৩.৮৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.০৪ শতাংশ কম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অবিক্রীত পোশাকের মজুত থাকায় তৈরি পোশাকের অর্ডার কম পাচ্ছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এই খাত থেকে বাংলাদেশের সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। তৈরি পোশাকের অর্ডার কমে যাওয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট আরও তীব্র হতে পারে।
প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাবরের মতো মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে তৈরি পোশাকের অংশই বেশি। সদ্য সমাপ্ত মার্চে মোট ৩.৮৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। তবে এ মাসে পোশাক রপ্তানিও আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১.০৪ শতাংশ পিছিয়ে আছে।
অপরদিকে মার্চে মোট ১.৮১ বিলিয়ন ডলার ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ খাতে রপ্তানি কমেছে ৩.৬১ শতাংশ। আর ২.০৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে নিট পোশাক খাত; আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ১.৩২ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন
একক মাসে কমলেও নয় মাসের হিসাবে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের ৩১.৪৩ বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৩৫.২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে পোশাক খাত এখনো ১২.১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে।
রপ্তানিকারকরা জানান, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান আমদানিকারক দেশগুলোর অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের কারখানায় আগামী মৌসুমের অর্ডার কমেছে। বাস্তবতা এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। গত নভেম্বর থেকে তৈরি পোশাকের অর্ডার কমতে শুরু করেছে। এই প্রবণতা এখনো অব্যাহত আছে।
আরেক রপ্তানিকারক বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বেশি দামের পোশাক সরবরাহ করছে তাদের ব্যবসার অবস্থা ভালো। কিন্তু কম দামের ও সাধারণ মানের পোশাক উৎপাদনকারীদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে গার্মেন্টস পণ্যের অর্ডার কমছে। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারী ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল গণমাধ্যমে বলেন, মার্চে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে আমরা লক্ষ্যমাত্রা থেকে কিছুটা পিছিয়েছি। এটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছিলাম যে, মার্চে প্রবৃদ্ধি কমতে পারে। তিনি বলেন, চলমান অর্থনৈতিক মন্দা বা অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি। এ ছাড়া অন্যান্য সমস্যার জন্য বিক্রি কমে গেছে। ক্রয় কমে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণেই আমাদের সামগ্রিক রপ্তানি আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। আমাদের ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি, সব কিছু মিলেই এই রপ্তানি হয়েছে। কাজেই সামনের দিনগুলোতেও এই বিষয়টি সতর্ক থেকে আমাদের পরিস্থিতি উত্তরণে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি অর্ডার আসে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সুতরাং এসব অঞ্চলে মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তাদের ওপর আরও চাপ বাড়াবে, যা বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস আইটেমের চাহিদা কমাবে।
ইউরো জোনের মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারিতে ৮.৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের মাসে ছিল ৮.৬ শতাংশ। সিএনবিসি জানায়, এটি অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের ৮.২ শতাংশের থেকে বেশি। ফ্রান্স এবং স্পেনের মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারিতে অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যসূচক গত মাসে ০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
উদ্যোক্তারা বলেন, করোনার সময় বকেয়া পাওনা ফেরত পাওয়ায় রপ্তানি বাড়ছে। কাঁচামাল, পরিবহন খরচ ও ইউটিলিটি খরচ বাড়ার কারণে ক্রেতারা বেশি দাম দিচ্ছেন। রপ্তানকারকরা আশা করছেন, জুলাইয়ে আবার অর্ডার বাড়বে। কারণ আমদানিকারকরা মজুতে থাকা পোশাক বিক্রি শেষ করবেন এবং পরবর্তী শীত মৌসুমের জন্য রপ্তানি শুরু হবে।
এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চার মাস ধরে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি থাকলেও সদ্যসমাপ্ত মার্চে নেতিবাচক ধারায় ফিরেছে রপ্তানি। মার্চে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে উদ্যোক্তারা আয় করেছেন ৪৬৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এ আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ শতাংশ ও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪৯ শতাংশ কম।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

রাস্তায় রাস্তায় ট্যাংক/ হামাস-ইসরাইল তীব্র লড়াই

সমমনাদের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠক/ যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতকে নেয়ার পরামর্শ

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status