দেশ বিদেশ
বেইলী রোডের ইফতারি বাজার
দাম বেশি, ক্রেতাদের অসন্তোষ
মো. আল-আমিন
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবারপুরান ঢাকার চকবাজারের পর ইফতারের জন্য বিখ্যাত রাজধানীর বেইলী রোড। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোডের দোকানগুলোতে ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতেই বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। তবে নানা ধরনের ইফতারের ঘ্রাণে ক্রেতারা বিমোহিত হলেও দাম নিয়ে রয়েছে অসন্তোষ। তারা বলছে, গত বছরের চেয়ে ইফতার সামগ্রীর দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এক হাজার টাকা দিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের জন্য ইফতার সামগ্রী কেনা যাচ্ছে না। বিষয়টি স্বীকার করছেন বিক্রেতারাও। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে প্রতিটি ইফতার সামগ্রীর দাম বেড়েছে বলে জানান তারা। পল্টন থেকে বেইলি রোডের নবাবী ভোজে ইফতার সামগ্রী কিনতে এসেছেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি মানবজমিনকে বলেন, প্রতিবছর এখান থেকে ইফতার সামগ্রী কেনা হয়।
এদিকে বেইলি রোডের নিউ চিন চিন চাইনিজ ইফতার বাজারে দেখা গেছে, এখানে বেগুনি ২০ টাকা, কাঠি কাবাব ১৫০ টাকা, চিকেন চপ, ইরানি চপ, মার্টন চপ, মাটন রোল ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ডিম চপ ৫০ টাকা, সামী কাবাব ৮০, নারিকেল, বিফ, পনির ও মাটন সমুচা ৫০ টাকা। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। পাকুরা ১৫ টাকা, ঘিয়ে ভাজা শাহী জিলাপি ৩শ’, বুরিন্দা ৩৫০ টাকা, রেশমি জিলাপি ৫৫০ টাকা, এ ছাড়া ৩শ’, ৫শ’, ৮শ’ ও ১৩শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বড় হাঁড়ির হালিম। এখানকার আরেকটি দোকান নবাবী ভোজ। এই দোকানে ইফতার সামগ্রীর দাম আরও বেশি। এখানে প্রতি কেজি শাহী জিলাপির বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। এক কেজি ছোলার দাম ৩শ’ টাকা, বুরিন্দা ৪শ’ টাকা, স্পেশাল চিকেন রোল ১শ’ টাকা, চিকেন সাসলিক ১৮০ টাকা, ফালুদা ৩শ’ টাকা, লাচ্চি ২৫০ টাকা, ফিরনি ৬০ ও ২৫০ টাকা, লাবাং ১২০ টাকা, গরুর তেহারি ২৮৫ টাকা, চিকেন ঝাল ফ্রাই ১৪শ’ টাকা, বোনলেস বিফ ভুনা ১৬শ’ টাকা, মাটন ভুনা ১৮শ’ টাকা, চিকেন রোস্ট ১৮৫ টাকা, মাটন লেগ পিস ৬শ’ টাকা এবং চিকেন রেশমি কাবাব ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জ্যাগেরী রেস্টুরেন্ট এর ইফতার বাজারে প্রতি কেজি ছোলাবুট বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায়। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ছোলা বাটোরা ৪৬০ টাকা, চিকেন তন্দুরি ১৯০ টাকা, চিকেন আচারি কাবাব ৩৫০ টাকা, হারিয়ালি কাবাব ৩৫০ টাকা, চিকেন রেশমি কাবাব ৩৪০ টাকা, চিকেন টিক্কা কাবাব ৩৪০ টাকা, ছোট ফালুদা ২৪০ টাকা, ডিম চাপ ৪০ টাকা, চিকেন কাটলেট ১২০ টাকা, বিফ জালি কাবাব ৫০ টাকা, আলুর চপ, বেগুনী ও পিয়াজু ১৫ টাকা, প্রতি পিস পান পিঠা ৪৫ টাকা, রস ফুল পিঠা ৪০ টাকা, শাহী মালাই ৬০ টাকা, তিল পানির পিঠা ৩৫ পাটিসাপটা টাকা, পাটিশাপটা পিঠা ৪৫ টাকা এবং ক্ষির কুলিপিঠা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ওদিকে ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর সকল নিত্যপণ্যের দাম বিগত যেকোনো সময়ের থেকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে। নবাবী ভোজের বিক্রেতা আরিফ জানান, গত বছরের তুলনায় গরু ও খাসির মাংসের তৈরি ইফতারি পণ্য ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মুরগি ও অন্যান্য ইফতারি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সব ধরনের মাংসের দাম অনেক বেড়েছে। এক কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ২৭০ টাকা। অন্যদিকে গরুর মাংস কিনতে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ৮শ’ টাকা। ছাগলের মাংসের দামও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। এ ছাড়া বেসন, আটা, চিনি, তেল, মাছ, ছোলাসহ সবকিছু গত বছরের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এজন্য আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।