ঢাকা, ২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২৯ শাবান ১৪৪৪ হিঃ

অনলাইন

অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া আনোয়ারার বর্ণনা- ‘হঠাৎ গাড়িটি লাফিয়ে রাস্তা থেকে নিচে পড়ে যাচ্ছিল’

হায়দার আলী, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে

(৩ দিন আগে) ১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ১২:১১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

mzamin

হঠাৎ গাড়িটি লাফিয়ে রাস্তা থেকে নিচে পড়ে যাচ্ছিল। কি যে হলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভাইঙা পড়তাছে। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাহকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেলো। এভাবেই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করছিলেন এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া আনোয়ারা বেগম। বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে আসা ঢাকাগামীযাত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) এবং তার শিশুপুত্র সাজ্জাদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভয়াবহতা দেখে আঁতকে উঠলেন এবং সন্তানকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি বেশ দ্রুতগতিতে চলছিল। কিছুক্ষণ পরেই পদ্মাসেতু।

বিজ্ঞাপন
এমন আলোচনা করছিল যাত্রীরা। হঠাৎ করেই গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিল। ওই সময়ে শুধু সন্তানকে জড়িয়ে রেখেছিলেন তিনি।

আনোয়ারা বেগম বলেন, বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে ভোর ৬টায় গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমন্ডি বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহূর্তে মনে হয় জ্ঞান ছিল না। গাড়ির মধ্য থেকে কে বা কারা বের করে আনছে তা মনে নাই! স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে এখনো।

আনোয়ারা বেগমের শিশুপুত্র সাজ্জাদকে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমি কিছুই বুঝতে পারি নাই। মায়ের কোলের মধ্যে ছিলাম।

বাগেরহাটের মোল্লারহাট থেকে আসা গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম মোল্লারহাটের গারফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী। তিনি সকালে শিশুপুত্র সাজ্জাদকে নিয়ে বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু এবং ৩০ জনের মতো গুরুতর আহত হয়েছে। তবে শিশুপুত্রকে নিয়ে সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছেন তিনি। পুরো ঘটনায় বিহ্বল অবস্থায় রয়েছেন। বারবার আল্লাহকে ডাকছেন এবং আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাচ্ছেন তিনি। খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, রোববার সকাল ৮টার দিকে শিবচরের এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী লেনে ইমাদ পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে উল্টে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। হাসপাতালে মারা যান আরও ৪ জন। হতাহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়ে। দুর্ঘটনার পর হাইওয়ে পুলিশ, শিবচর থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের টিম উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।
 

পাঠকের মতামত

দুই একবার এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় মনে হয়েছে বাসে যাচ্ছি না বিমানে যাচ্ছি। এত গতিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা উচিত।

আতাউর রহমান ভূইয়া
২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ৫:৪০ পূর্বাহ্ন

অদক্ষ চালকদের কারণেই এতো বড়ো দূর্ঘটনা। এতোগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেলো। সারা দেশের চালকদের যোগ্যতা যাচাই করাসহ তাদেরকে নিয়ে ঘনো ঘনো আলোচনা সভা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এছাড়া, অদক্ষ ও নেশাগ্রস্ত চালকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

আক্তারুজ্জামান বাচ্চ
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ৫:০৭ পূর্বাহ্ন

এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের গতিসীমা বেঁধে দেওয়া আছে কিনা। থাকলে নির্ধারিত গতিসীমা অমান্য করে কি না তা দেখার মতো ব্যবস্থাপনা আছে কি না। এসব ব্যবস্থাপনা করা কি খুবই দুরহ? নির্ধারিত গতিসীমা অমান্য করলে মামলা রুজু করে কোর্টে পাঠানোর নিয়ম করা।

এম্রান
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ৪:২০ পূর্বাহ্ন

সামান্য কয়েক কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে আপাততঃ নরমালওয়ে হিসাবে ব্যবহৃত হোক। এত স্পিডে গাড়ী চালানোর কোন অর্থ হয় না। যখন সম্পূর্ণভাবে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হবে সে পরযন্ত সবাই অপেক্ষা করলেই ভাল। এত মৃত্যু কোন ভাবেই সহ্য করা সম্ভব নয়। মূহুর্তের মধ্যে ১৮ জন বিদায় নিলেন। আহত কত এখনও জানা যায় নি। হায়রে এক্সপ্রেসওয়ে।

Anwarul Azam
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ২:২৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে সবই আজকাল এক্সপ্রেস। মানুষে মানুষে সম্পর্ক এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনা বা মৃত্যু ও আজকাল আমাদের বেশী ভাবায় না। তার তদন্তও এক্সপ্রেস। ( শুধু সাগর রুলীর ব্যপারে তদন্ত আজীবন)। ভোটও এক্সপ্রেস। দিনশুরু হওয়ার আগেই ব্যালট নৌকার ছাপ নিয়ে বাকসে ঢুকে পরে শুধু মাত্র উননয়নের গনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে গণিত হয়না। দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি এক্সপ্রেস গতিতে ১৯৭৪কে মনে করিয়ে দিচ্ছে। আমরা যাব কোথায়। হিজরতের যোগ্যতাও বারিয়ে ফেলছি।

Siddq
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন

নিয়ন্ত্রণ হীন গতিতে গাড়ি চালানো বাংলাদেশের চালকরা বাহাদুরি মনে করে । এর একটা প্রমাণ বাংলাদেশ থেকে নবাগত ইমিগ্র্যান্ট কানাডিয়ান ড্রাইভার লাইসেন্স পেলে গতিসীমা অমান্য করে । দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হয় । বাংলাদেশে মোটরসাইকেল এর গতিসীমা নির্ধারণ করার পর সরকার কে আগামী নির্বাচনের ভীতি প্রদর্শন মূলক মন্তব্য পড়ে আমি আশ্চর্য না হয়ে পারিনি । এই হল বাঙালি মনোভাব। উড়ে চলার বাহাদুরি ।

কাজি
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন

Totally speechless.

MD SOHRAB HOSSAIN
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status