শেষের পাতা
গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন, নইলে বিপদ অপেক্ষা করছে
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার
সরকারের পতনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। গতকাল রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এলডিপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। সমাবেশে সরকারের উদ্দেশ্যে এলডিপি প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বীর বিক্রম বলেছেন সময় থাকতে সচেতন হোন। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে জনগণকে রেহাই দিন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন। নইলে সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে। জনগণের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে সঠিক উত্তর ও পন্থা পেয়ে যাবেন। ক্ষমতায় টিকে থাকার লোভ বিপদের কারণ হতে পারে। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে।
এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছুদিন পূর্বেও আমি বলেছিলাম ঋণখেলাপিরা অর্থনীতি ধ্বংস করবে। এখন দেখি ঋণখেলাপি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মধ্যবিত্ত ও গরিবের টাকা লুণ্ঠন করছে। দেশে এখন লুটপাটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। অর্থ সংকটের কারণে গত ৭ মাসে এডিবি বাস্তবায়ন মাত্র ২৮ শতাংশ। শূন্য অগ্রগতি নিয়ে বছর পার ২৩৬ প্রকল্পের যা বিগত ৭ বছরে সর্বনিম্ন। সরকারের মোট ঋণ সাড়ে ১৩ লাখ কোটি টাকা। এরমধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪,৯৫,৭৯৪ কোটি টাকা। ব্যাংক ঋণ ৪,১৯,৬২৭ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ৩,৬৫,৫৩৬ কোটি টাকা। জিপিএফ থেকে ৬২,৭৪০ কোটি টাকা, বিগত অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয়- ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয় হবে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সুদে বিপুল অর্থ ব্যয়ের কারণে রাজস্ব হ্রাস পাচ্ছে। আমদানি-রপ্তানি হ্রাস পাচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়ন ২৬ শতাংশ হয়েছে। এ সবকিছু বিবেচনা করলে বোঝা যায় অর্থনৈতিক অবস্থা সুখকর নয়।
কর্নেল অলি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সর্বনিম্ন পর্যায়ে। দুর্নীতি অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। আমরা কী এই ধরনের স্বাধীন দেশ কায়েম করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। যুবসমাজকে কোনো সদুত্তর দিতে পারি না। তাদের জন্য আমরা কী দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছি। কী ধরনের দেশ তাদের আমরা দিয়ে যাচ্ছি- ক্ষণিকের জন্য রেষারেষি ভুলে গিয়ে আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার সুফল জনগণের জন্য নিশ্চিত করি।
সভাপতির বক্তব্যে এলডিপি মহাসচিব ডক্টর রেদোয়ান আহমদ বলেন, পৃথিবীর কোনো স্বৈরশাসক টিকে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগও পারবে না। আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না। গত ১৪ বছর ধরে তারা দুর্নীতি ও চাপাবাজি করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আগামীতে এই সরকার আর টিকতে পারবে না। এলডিপি মহাসচিব ডক্টর রেদোয়ান আহমদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এলডিপি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, এডভোকেট এসএম মোরশেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপিকা মোছা. কারিমা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আবুল হাসেম, প্রচার সম্পাদক এডভোকেট নিলু, ঢাকা মহানগর পশ্চিম এলডিপি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাদাত হোসেন মানিক, উত্তর এলডিপি’র সাধারণ সম্পাদক অবাক হোসেন রনি, ঢাকা মহানগর পূর্বের সাধারণ সম্পাদক অসিম ঘোষ, গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহান, গণতান্ত্রিক শ্রমিক দলের সভাপতি মামুন, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খালিদ বিন জসিম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট নূরে আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান মাহবুব, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি খোকন, এলডিপি’র সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজগর বাবুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।