বাংলারজমিন
সাভারে বে-ট্যানারির শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার
সাভারের হরিণধরা এলাকায় অবস্থিত চামড়া শিল্প নগরীর বে-ট্যানারির শ্রমিকরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল সকাল থেকেই কারখানাটির বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত ৮০ জন শ্রমিক বে-ট্যানারি ইউনিট ২ লিমিটেড কারখানার সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, তারা গত দুই বছর যাবৎ বে-ট্যানারিতে কাজ করে আসছেন। এখানে তাদেরকে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। এ ছাড়াও তাদেরকে সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা সরকার ঘোষিত কোনো ছুটি দেয়া হতো না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে তারা ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সোমবার সকাল থেকেই হঠাৎ করে কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্মরত শ্রমিকদেরকে কারখানার মূল ফটকে আটকে দেয়। পরে তারা বাধ্য হয়ে কারখানাটির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। বে-ট্যানারির ফিনিশিং শাখার শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটিতে নানা সমস্যা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কিছুদিন হলো আমরা ট্রেড ইউনিয়নের আওতাভুক্ত হয়েছি। এ ঘটনায় কারখানা কর্র্তৃপক্ষ আমাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করে নতুন করে কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর পাঁয়তারা করছে। ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সামিয়া ট্যানারি শ্রমিক প্রতিনিধি মো. মামুন বলেন, বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদেরকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে থাকে। আমাদের ট্যানারিতে একটা হাসপাতাল নেই, খেলার মাঠ নেই, মসজিদ নেই। তারপরও শ্রমিকরা সব কষ্ট সহ্য করে কাজ করে যাচ্ছে। আজকে বে-ট্যানারি কর্র্তৃপক্ষ কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই অন্যায়ভাবে ৮০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। বিষয়টি শুনতে পেয়ে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। আমরা প্রয়োজনে সকল শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে দাবি আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো। বে-ট্যানারির হিসাব ও অর্থ শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মাহাবুব আলম খান বলেন, এলডব্লিউজি সনদের জন্য আমাদের কারখানাটিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিইটিপি নির্মাণের কাজ চলছে। এই মুহূর্তে আমাদের কাঁচা চামড়া ব্যবস্থাপনা শাখাটি আগামী ৬ মাসের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে কারখানাটির ফিনিশিং শাখা চালু রয়েছে। ফিনিশিং শাখার ৩২ জন শ্রমিককে কাজ করতে বলা হয়েছে এবং ৩৫ জন শ্রমিককে আলোচনার মাধ্যমে তাদের পাওনাদি বুঝিয়ে দেয়া হবে। বিষয়টি শ্রমিকদের জানানোর পর সকল শ্রমিক একযোগে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। আমরা তো আর শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে পারবো না। কারণ এমনিতেই করোনা এবং বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার কারণে আমাদের অবস্থা ভালো না। শিল্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. কোরবান আলী বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাদের দাবির বিষয় নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হবে। এ ছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রস্তুত আছি বলেও জানান তিনি।