অনলাইন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন
যে আশঙ্কা ভোটারদের মনে
মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে
(১ মাস আগে) ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১:১৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে রাত পোহালেই ভোট। সংসদ নির্বাচন এলেই উজ্জীবিত থাকেন ভোটাররা। বিরাজ করে ঈদের আনন্দ। এখানে এবার কোনটাই নেই। ভোটের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা হারিয়ে গেছে আরো আগেই। প্রতীক বরাদ্দ থেকে শুরু করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার। হেভিওয়েট প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো। স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ নিখোঁজ। জেলা উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতারা সভা করে জনপ্রতিনিধিদের ঘাড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব। আর ফিঙ্গারিংয়ের পর কলারছড়িতে ভোট দেয়ার দায়িত্ব স্থানীয় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে প্রস্তুত জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারাও। নির্বাচনের মালামাল কর্মকর্তা কর্মচারীকে বহন করার যানবাহনও প্রস্তুত। আজ সকাল থেকেই সকল প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে কেন্দ্রের মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয়। নির্বাচনের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উল্লেযোগ্য সংখ্যক পুলিশ দুইদিন আগে থেকেই অবস্থান করছেন সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলায়। তবে এই উপনির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের মাঝে কোন আনন্দ নেই। ভোটের বিষয়ে তেমন একটা আগ্রহও দেখাচ্ছেন না তারা। মোট ১৪ প্রার্থী থেকে এখন পর্যন্ত যে ৪ জন প্রার্থী আছেন তাদের মধ্যে অনেকের ভেতরে স্বস্তি নেই। একজন প্রার্থী কর্মী-সমর্থকরা সব জায়গায় সরব। অন্যরা কোন রকমে সময় পার করছেন। মৃধার সরে দাঁড়ানো আর আবু আসিফের নিখোঁজের বিষয়টিও ভাবনায় ফেলে দিয়েছে ভোটারদের। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের উপজেলা ও জেলার নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তারের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছেন। সভা-সমাবেশে বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে ভোট চাইছেন। নির্বাচনের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট কাস্ট করার বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি প্রকাশ্যে বলছেন। আগেই বলছেন জিতে যাবে। আবার তৃণমূলের সকল জনপ্রতিনিধিদের ডেকে এনে সভা করে বলে দিচ্ছেন, টিআর কাবিখা ভোগী ও সামজিক নিরাপত্তার বেষ্টনীর সুবিধাভোগীরা কথা শুনতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব হচ্ছে ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত করা। আর ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীর কাজ হচ্ছে কলারছড়ি মার্কার ভোটটি নিশ্চিত করা। আবার অনেক কর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে না গেলে জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল হয়ে যাওয়ার অভিযোগও ওঠছে। এমন সব ঘোষণা দাগ কাটছে ভোটারদের মনে। তাই এই উপনির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় ভোটারদের মাঝে কোন উত্তাপ বা উচ্ছাস কোনটিই নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরাইল সদরের ৪-৫ জন ভোটার বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না পারার সম্ভাবনাই বেশি। আমরা ভোট দিলেও সাত্তার পাস। না দিলেও সাত্তারই পাস। তাই ভোট নিয়ে খুব একটা ভাবছি না।’
পাঠকের মতামত
দুই ঈদ উৎসবের পরে বাংলাদেশে যে দিনটি মানুষ আনন্দ উৎসবে পার করতো সেটি হচ্ছে নির্বাচনের দিন। আমাদের মা-চাচিদের দেখেছি ভোটের দিন সকাল সকাল রান্না-বান্না শেষ করে, ভোট কেন্দ্র যেতে। ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে ফলাফল ঘোষনা পর্যন্ত ছিল আনন্দ মুখর। কোথাও কোথাও কিছু অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটলেও তা ছিল সামান্য। আজ আওয়ামীলীগ ক্ষমতার জন্য বাংলাদেশে নির্বাচনি ব্যবস্থাটা একেবারে শেষ করে দিছে।
ভোট নির্বাচন কিছু ই না । আমার মনে যেভাবে অতীতে হয়েছে, কারসাজি তা পরিবর্তন হবে না । দল বদল হলেও একই অবস্থা থাকবে । কারণ- ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার মানসিকতা জনমত দেখার আগ্রহ কোন দলের নাই জনগণের তোয়াক্কা করে না কোন দল । প্রজাতন্ত্র তাদের কাছে ব্যাখ্যা হল - ক্ষমতাসীন রাজা বাকি জনগণ প্রজা। দলীয় স্থানীয় নেতারা ঐ এলাকার মোড়ল বা জমিদার যাদের মাধ্যমে প্রজাদের দাবিয়ে রাখা।