প্রথম পাতা
মানবাধিকার কমিশনের সভায় বক্তারা
ক্ষমতাবানরাই বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ জানুয়ারি ২০২৩, বুধবারবাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়েই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ক্ষমতাবানরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন। যাদের যত ক্ষমতা তারা তত বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। মানবাধিকার কমিশন যেন এই ক্ষমতাবানদের ব্যাপারে ভীত না হয়। যেন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষ আস্থা না হারায়। গতকাল রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় গণমানুষের প্রত্যাশা: গণমাধ্যম ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সমন্বিত প্রয়াস’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। নবগঠিত ষষ্ঠ মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম ও করণীয় বিষয়ে জানাতে গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে কমিশন। সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রচলিত চিন্তাধারার বাইরে গিয়ে কাজ করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমিশন, এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও বিরাগভাজন হয়েছি। আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো সংস্থা হিসেবে আর থাকতে চাই না।
পাশাপাশি নতুন কমিশনের কর্মকৌশল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও কমিশনের কার্যক্রমে সরকারের প্রভাব সম্পর্কেও জানতে চান। সব শুনে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এক মাসের বেশি সময়ে প্রায় দুইশ’ অভিযোগ আমরা নিয়েছি। বেশ কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করেছি। চট্টগ্রামে একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানো হয়েছিল, সেটা আগের মতো করা হয়েছে। এটা আমাদের সুপারিশে হয়েছে। ভারতের মানবাধিকার কমিশনের জরিমানা আদায়ের কথা উল্লেখ করে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, এটুকু সেবা মানবাধিকার কমিশন দিতে পারে। এটা শুরু করতে গিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবেও বিরাগভাজন হয়েছি। কিন্তু তাতে আমরা কিছু মনে করেনি। সমপ্রতি একটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে হয়েছে। প্রথমে এ নিয়ে একটা কষ্টদায়ক অনুভূতি তাদের ভেতর জেগেছিল। আমরা বলেছি- এটা হতেই হবে। এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত তারা বলেছে, টাকা দেয়ার কোনো খাত তাদের নেই। তখন আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে খাত সৃষ্টি করতে তাদের বলেছি। সেই টাকা আমরা সংক্ষুব্ধের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ব্যাপারে আমরা সচেতন। আপনাদের দাবির সঙ্গে আমরাও একমত। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপারে কমিশন সচেতন। সরকারের পক্ষ থেকে এ আইন সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
আমরা এজন্য অপেক্ষা করছি। প্রয়োজনে আমরা এ বিষয়ে কথা বলবো। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সারা বিশ্বেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সাংবাদিকরা মানুষের জন্য কাজ করছেন। মাত্র ১৩ ভাগ মানুষ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ভোগ করেন। তারপরও আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে যাবো। অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। ক্ষমতাবানরা নিজের স্বার্থে অন্যের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেন। যে কাউকে মেরে নিজে এগিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বজুড়েই বৈষম্য আছে। এর আগে কমিশনের নির্বাক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন দেয়ার সময় আমরা মানবাধিকার কমিশনের অস্তিত্ব খুঁজে পাই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে রেখেছে। এ বিষয়েও মানবাধিকার কমিশনের পদক্ষেপ আমরা জানতে চাই। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাগর-রুনি হত্যা মামলায় ৯৫ বার সময় নিয়েও তদন্ত শেষ করতে পারে না আমাদের সংস্থাগুলো। এখানে মানবাধিকার কমিশন কী করেছে। কমিশন সুপারিশ করলো, সুপারিশের ফলোআপ হলো না। তাহলে মানুষ কমিশনের ওপর আস্থা রাখবে কী করে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনবি সম্পাদক ফরিদ হোসেন, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাজী আরফান আশিক, সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ঊর্ধ্বতনরা।
পাঠকের মতামত
নির্বাচনে হারার ভয়ে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিতে ভয় পায় আওয়ামী লীগ...
জনাব আজিজুল হক সাহেব কে বলছি, আওয়ামী লীগের এজেন্ট হলে কি দোষ, আর বিএনপি জামায়াত এর এজেন্ট হলে বুঝি বেহেস্তে যাওয়া যায়? আপনাদের পুরবের ইতিহাস একটু ঘেটে দেখেন। পচা নরদমার দুরগন্ধ ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।
গা'য়ে বেশি জোর যার সেই করে অত্যাচার। মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সবাই তো আওয়ামী এজেন্ট, ওরা জনগণের পক্ষে কি বলবে?
এই তথাকথিত ক্ষমতাবানরা কোন কৃষক, শ্রমিক বা কোন অশিক্ষিত লোক নয়। অথচ এই তথাকথিত শিক্ষিত লোকেরাই বর্তমানে দেশের প্রধান শত্রু। দেশের রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধা এই গোষ্ঠী ভোগ করে। ভোট চুরি থেকে আরম্ভ করে যত অপকর্ম যথাঃ ব্যাংকের টাকা চুরি, টেন্ডারবাজী, বিদেশে অর্থ পাচার, ঘুষ, দূর্নীতি, ওভার ও আন্ডার ইনভয়েস করে বিদেশে অর্থ পাচার, কানাডা /দুবাই /আমেরিকা ইত্যাদি জায়গায় অর্থ পাচার করে বাড়ি বানানো অর্থাৎ একটা মানুষের যত অপকর্ম করার সুযোগ আছে তা সবই করে থাকে এই তথাকথিত শিক্ষীত গোষ্ঠী। এখন সময় এসেছে সাধারণ মানুষের এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার। ধন্যবাদ।
ধ্রুব সত্য ।