ভারত
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ১০ লাখ থেকে বেড়ে সাড়ে ১২ লাখ
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
(১ বছর আগে) ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, বুধবার, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৫:৫৭ অপরাহ্ন
কক্সবাজার থেকে কুতুপালংয়ের দূরত্ব প্রায় তিরিশ কিলোমিটার। পথ দুর্গম হলেও রাস্তা মসৃণ। এই তিরিশ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে আমাদের ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগলো। কথাগুলো বলছিলেন কিংশুক প্রামাণিক। কিংশুক কলকাতা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে কলকাতার যে সাংবাদিকরা ঢাকায় গিয়েছিলেন সেই দলের সদস্য ছিলেন কিংশুক। বলছিলেন, কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প দেখার অভিজ্ঞতার কথা। মিয়ানমার সরকার এই রোহিঙ্গাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করে বুলেটের নির্মম আঘাতে।
রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুত হয়। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তখন বাংলাদেশ বুঝতে পারেনি যে আন্তর্জাতিক স্তরে আর কোনও হাত এগিয়ে আসবে না রোহিঙ্গাদের সাহায্য করার জন্য।
সেই থেকে ছ বছর রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের এই কুতুপালংয়ে ক্যাম্প করে আছে। দশ লাখ থেকে বেড়ে সংখ্যাটি সাড়ে ১২ লাখ হয়েছে।
সম্প্রতি এই উদ্বাস্তুদের জন্য ভারত সরকারের সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ। তাদের আশা, এই সাহায্য তারা পাবে।
শেখ হাসিনা সরকার এতদিন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করেছে। এখন দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়ছে।
হাসিনা সরকার তাই চান আন্তর্জাতিক সাহায্য। আর হয়তো সেই কারণেই আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের এই রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভ্রমণ!
কী দেখলেন তারা? কিংশুক জানালেন, জায়গাটি মালভূমি অঞ্চল। পাহাড়ি, এবড়োথেবড়ো। রোহিঙ্গারা ছয় বছরে এই জীবনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। অনেকেই স্থানীয় ভাষা শিখে নিয়েছেন। কিংশুক দেখেছেন, কক্সবাজারের অনেক হোটেলে রুমবয় এর কাজ করছে রোহিঙ্গা যুবকরা।
কর্মহীনতা এদের একটি বড় সমস্যা। স্বাভাবিকভাবেই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে অনেক রোহিঙ্গাই। জুয়া-সাট্টার ঠেক গড়ে উঠেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্প অবস্থানগত কারণে জঙ্গিদের হাইড আউট হিসেবে আদর্শ জায়গা। জঙ্গি - সন্ত্রাসবাদীরা কুতুপালংকে বেছে নিয়েছে আশংকা বাংলাদেশ সরকারের।
এজহার হোসেন নামের এক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা সুযোগ হয়েছিল ভারতীয় সাংবাদিকদের। এজহার বলেন, বাংলাদেশের কাছে তারা কৃতজ্ঞ দেশের ভিটেমাটি ছেড়ে আসার পর জায়গা পাওয়ার জন্য। কিন্তু, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চিত রোহিঙ্গারা কাজ চান। কর্মবিমুখিতা অনেক সমস্যা তৈরি করছে। এজহারের বিশ্বাস কাজ এই অবস্থা দূর করতে পারে।
বাংলাদেশ, ভারতও ভূমিপুত্রদেরই কর্মসংস্থানে অপারগ। তাদের পক্ষে কী সম্ভব এই উদ্বাস্তুদের কর্মসংস্থান? কিংশুকরা মনে করেন, সময়ই এই প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।