প্রথম পাতা
বাংলাদেশের জন্ম এক্সিডেন্টলি নয় ডিজাইন অনুযায়ী হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবারপ্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, এদেশে অনেকেরই রাজনৈতিক বিশ্বাস এমন যে, বাংলাদেশের জন্ম এক্সিডেন্টলি হয়েছে, এটা কোনো ডিজাইন অনুযায়ী হয়নি। তারা বলে, ’৭০-এর নির্বাচনের পর ভূট্টো যদি বঙ্গবন্ধুকে সরকার গঠন করতে দিতেন এবং বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতেন তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাংলাদেশ চায়নি। সুতরাং, বাংলাদেশের জন্মটা একটা এক্সিডেন্ট। আরেকটা গ্রুপ আছে যার মধ্যে আমিও আছি, যারা বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশের জন্ম অবশ্যই ডিজাইন অনুসারে হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য লড়াই শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এনআরবি ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন, ইউএসএ এবং এনকেসফট করপোরেশন আয়োজিত এনআরবি প্রফেশনালস সামিট-২০২২ এ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রশ্ন করেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাংলাদেশ না চাইলে ছয়দফা, উনসত্তরের আন্দোলন কেন হলো? বর্তমান সরকারের সাফল্য ও উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি বিশেষ করে দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে অনাবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সালমান এফ রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জিডিপি ছিল ৮ বিলিয়ন ডলার। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ ছিল জিরো, কারণ পাকিস্তানিরা সব রিজার্ভ নিয়ে গিয়েছিল। ২০০৮ সালে জিডিপি ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলার। সুতরাং, ৩৫ বছরে জিডিপি ৮ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৯০ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল।
সালমান এফ রহমান বলেন, অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, গত ১৪ বছরে তোমাদের সাফল্যের মূল কারণ কি? কয়েকটি কারণ আছে। তবে, মূল কারণ ২/৩টি। প্রথমেই বলবো বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের কথা চিন্তা করে আমরা যখন রেন্টাল পাওয়ারের টেন্ডার ছাড়া বিশেষ আইন করলাম তখন ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছিল। তখনকার প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা বলেছিলেন, যারা এই ফাইল সই করছে, সবাইকে আমি ক্ষমতায় গেলে জেলে দেবো। সাফল্যের দ্বিতীয় কারণ হলো, নারীর ক্ষমতায়ন। এটা আগে শুরু হলেও বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আরও কাজ করা হয়েছে। আমি এটা অনেকবার বলেছি। আমি যখন কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের উপমুখ্য জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার (জন ফাইনার) সাথে হোয়াইট হাউসে বসেছিলাম, তখন তাকে এটা উল্লেখ করে বলেছিলাম, নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হলো কেস স্টাডি যে কিভাবে সারা দেশে এমন একটা সামাজিক পরিবর্তন হতে পারে। অথচ, সত্তর, আশির দশকে এখানে কন্যাশিশু জন্ম নিলে তাকে দায় মনে করা হতো।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এনআরবি ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন বাস্তবতা। বাংলাদেশে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পার হয়ে এখন টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের দিকে ধাবমান। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সকলের সম্মিলিত কার্যক্রম গ্রহণ করা সময়ের দাবি। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। একইসঙ্গে তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষির উন্নয়নেও এগিয়ে আসেন। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট গ্রিডের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এখন সময়ের দাবি।
উক্ত আয়োজনে ‘বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ’ এবং ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উন্নতি’ বিষয়ে ২টি পৃথক আলোচনা শেষে সরকারের কাছে আলোচকরা ২টি প্রস্তাব করেন। এগুলো হলো- অনাবাসী বাংলাদেশিদের আইডেন্টিটি কার্ড (এনআরবি) প্রদান ও অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি। আলোচনা শেষে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ উক্ত দুই প্রস্তাবনা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে কোডার্স ট্রাস্টের কো-ফাউন্ডার ও চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ, ফাইবার এট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী, নিউ জার্সির মনমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম এম মাতবরসহ বিভিন্ন প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।