শেষের পাতা
শিশু আয়াতের খুনিকে পুলিশ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণধোলাইয়ের চেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৯ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবারচট্টগ্রামে আলোচিত শিশু আয়াতের হত্যাকারী আবিরকে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণধোলাই দেয়ার চেষ্টা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে কৌশলে সেখান থেকে ছাড়িয়ে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে রাখেন। হাজতখানায় তাকে হ্যালমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে রাখা হয়। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দু-দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার দুপুরে আবিরকে আবার রিমান্ড আবেদন করতে আদালতে তোলা হয়। তাকে আদালতে তোলার খবরে সেখানে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ জমায়েত হয়। আবিরকে বহনকারী পুলিশের ভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গণে আসতেই ঘিরে ধরে বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা গাড়ি থেকে আবিরকে টেনেহিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করে। তবে সেখানে উপস্থিত পুলিশের কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি। জনতা আবিরকে বহনকারী পিবিআইয়ের গাড়ি ২০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাজতখানায় নিয়ে আসেন।
এদিকে সোমবার দুপুরে আবিরকে আদালতের এজলাসে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুনানিকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেনের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। রিমান্ডেও আবির পূর্বের মতোই লাশ ৬ টুকরা করে দুটি বস্তায় ভরে সাগরপাড়ের বেড়িবাঁধে ফেলে দেয়ার বর্ণনা দেন।
জানা যায়, দুই দিন রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই আবিরকে নিয়ে পতেঙ্গা সাগরপাড় ও আশপাশে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু লাশ কিংবা লাশের খণ্ডিতাংশ কোনো কিছুই মেলেনি। তবে তার বাসা থেকে একটি ডায়েরি জব্দ করা হয়েছে। সেই ডায়েরিতে প্রেম-বিরহ, নারী বিদ্বেষ, বড়লোক হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা, কোরিয়ান সঙ্গীত দল বিটিএসপ্রেমী মেয়েদের নিয়ে কটাক্ষ করে নানান লেখা রয়েছে। তবে পুলিশ বলছে ওই লেখা তার হাতের কিনা তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মনোজ কুমার দে মানবজমিনকে জানান, আবির রিমান্ডেও আলীনা ইসলাম আয়াতকে অপহরণের পর মরদেহ কেটে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার কথা বলেছে। নতুন করে তেমন কোনো তথ্য দেয়নি। আমরা তার দেয়া তথ্যানুযায়ী লাশের খণ্ডিত অংশগুলো খুঁজতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। তবে কোনো দেহাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। আমরা লাশ উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।