ঢাকা, ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

প্রকল্পের মেয়াদ শেষ, একজন শিক্ষার্থীও পায়নি ইউনিক আইডি

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ অক্টোবর ২০২২, বুধবার

শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি কার্ড দিতে ৪ বছরের জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জুলাইয়ে। ৩৫৩ কোটি ২০ লাখ ৪২ হাজার টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও একজন শিক্ষার্থীও হাতে পায়নি এই কার্ড। ষোষণা দেয়া হয়েছিল, মুজিববর্ষে এক কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে যাবে এই ইউনিক আইডি কার্ড।

শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে সরকার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একক পরিচয়পত্র বা ইউনিক আইডি কার্ড দেবার উদ্যোগ হাতে নেয়। এই আইডি কার্ডে ব্যবহৃত নম্বর শুধুমাত্র ওই শিক্ষার্থীরই থাকবে। ভবিষ্যতে এই আইডি কার্ডের নম্বরই হবে ওই শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর। নতুন করে সংগ্রহ করতে হবে না তথ্য। এই ডিজিটাল কার্ডে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (ব্যানবেইস)। এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস) প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা ৪ পৃষ্ঠার তথ্য সংগ্রহের ফরম। যাতে আছে শিক্ষার্থীর নাম, জন্মনিবন্ধন নম্বর, জন্মস্থান, রক্তের গ্রুপ, জেন্ডার, জাতীয়তা, ধর্ম, অধ্যয়নরত শ্রেণি, রোল নম্বর, বৈবাহিক অবস্থা, প্রতিবন্ধিতা (ডিজঅ্যাবিলিটি), রক্তের গ্রুপ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কিনা, মা-বাবার নাম ইত্যাদি। এই কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থী কতোদূর লেখাপড়া করলেন, কী কী নাগরিক সুবিধা পেলেন, বেকার আছেন কিনা এসবের পাশাপাশি বৃত্তি-উপবৃত্তি, স্কুল ফি, বই সংগ্রহ, রেজিস্ট্রেশন, বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল ইত্যাদি তথ্য জানা যাবে। 

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই আইডি প্রস্তুতকরণে কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও শেষ করা সম্ভব হয়নি। এর প্রধান কারণ করোনার সময় স্থবিরতা ও শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন। করোনার সময় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহে ধীরগতি দেখা যায়। এ ছাড়াও অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন না থাকা, নাম ভুল। সেইসঙ্গে জন্মনিবন্ধনে দীর্ঘসূত্রীতার কারণে এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। ব্যানবেইস থেকে এ পর্যন্ত একাধিকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে জন্মনিবন্ধন কর্তৃপক্ষকে। আবার ব্যানবেইস’রও আছে গরিমশির অভিযোগ।

তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আশার বাণী শোনাচ্ছে ব্যানবেইস। আইইআইএমএস’র উপ-প্রকল্প পরিচালক ড. মো. নাসির উদ্দিন গনি বলেন, প্রায় এক কোটি ডাটা এট্রি আমাদের শেষ হয়ে গেছে। গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থীর প্রোফাইলে ইউনিক আইডি যুক্ত হয়েছে। আমরা প্রতিদিন দুই লাখ করে তথ্য পাঠাই এন্ট্রির জন্য। এরমধ্যে আমরা এক লাখ ৭০/৮০ হাজার করে ইউনিক আইডি পাচ্ছি। আমরা আশা করছি- এ মাসের মধ্যে এক কোটি ইউনিক আইডি শিক্ষার্থীদের প্রোফাইলে যুক্ত হবে। 

তিনি আরও বলেন, আশা করা যায় ডিসেম্বর থেকে আইডি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া শুরু করা যাবে। আমরা নভেম্বরের মধ্যে সব ইউনিক আইডি পেয়ে যাবো। কিছু কিছু বাচ্চার নামে গড়মিল আছে, বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল আছে। এগুলো সমাধান করে আমাদের ডিসেম্বরে দেয়ার লক্ষ্য আছে। জন্মনিবন্ধনের যে জটিলতা ছিল তা আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। নভেম্বরের মধ্যে সব ইউনিক আইডি পেয়ে যাবো। এরপর আইডি কার্ড ছাপানোর জন্য টেন্ডার আহ্বান করবো।  

আবার ১২ লাখ ২৬ হাজার খুদে শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহে বেঁধে দেয়া সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল। পূর্বে প্রাক-প্রাথমিকের ১৫ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর তথ্য গত ১৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ৩ লাখ ৪৪ হাজার খুদে শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি করা হয়েছে, যা মোট শিক্ষার্থীর ২২ শতাংশ। অর্থাৎ বাকি ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থীরই তথ্য সংগ্রহ বাকি।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status