ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মত-মতান্তর

ফ্রাইডে জার্নাল

সাহিত্যে নোবেলজয়ী নর্মান্ডি উপকূলের মেয়ে

ড. মাহফুজ পারভেজ

(১ বছর আগে) ৭ অক্টোবর ২০২২, শুক্রবার, ৫:৫৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

mzamin

১. ফরাসি ভাষার আলাদা সিনট্যাক্স ও উচ্চারণশৈলী ইংরেজি ভাষা জগতের চেয়ে আলাদা। ঔপনিবেশিকতার সূত্রে ইংরেজি জানা লোকজনের মধ্যে সে কারণেই ফরাসি নামের উচ্চারণের বিভিন্নতা লক্ষণীয়। ২০২২ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ফ্রান্সের এমন একজন পেলেন, যার নাম স্বদেশের বাইরে বহুল পরিচিত নয়। ফলে Annie Ernaux নামটি লেখা হলো অ্যানি আর্নোউ, এন্যি এখন্যু, অ্যানি অ্যারনো, অ্যানি এরনাক্স, অ্যানি এরনাওঁ, অ্যানি এনৌ ইত্যাদি। এমন হওয়ার কারণ, ফরাসি ভাষার আলাদা ধ্বনি বিশিষ্টতা। তাছাড়া বিদেশি শব্দ ও উচ্চারণ একদম সঠিক অনুবাদ করাও দুষ্কর।  ফরাসি বিশেষজ্ঞ চিন্ময় গুহ জানালেন, বাংলায় নামটির কাছাকাছি ও সঠিক উচ্চারণ হবে 'আনি এরনো'।

২. ফরাসি দেশে আনি'র নির্বাচনে অধিকাংশ পাঠক খুশি। কারণ তাঁর ৩০ টিরও বেশি বই, যার মধ্যে অনেকগুলো কয়েক দশক ধরে ফ্রান্সের স্কুল পাঠ্য। আধুনিক ফ্রান্সের সামাজিক জীবনের সবচেয়ে সূক্ষ্ম, অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ জানালাগুলো খুলে দিয়েছেন তিনি। যদিও এই ভদ্রমহিলা ফরাসি দেশের মূল ভূখণ্ডের মানুষ নন। তাঁর জন্ম দেশটির প্রান্তিক এলাকা আটলান্টিক তীরবর্তী নর্মান্ডি উপকূলে।

বিজ্ঞাপন
তিনিই এখন ষোড়শ তম ফরাসি লেখকের সর্বশেষ জন, যাঁরা নোবেল পেয়েছেন।  

৩. ফ্রান্সের নর্মান্ডি ছোট্ট এলাকা হয়েও বিশ্ব ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য। ৭৫ বছর আগে নাৎসি জার্মানদের হাত থেকে ফ্রান্সকে মুক্ত করার জন্য মিত্র শক্তির অবতরণ হয়েছিল সেখানে এবং বীরোচিত প্রতিরোধ যুদ্ধের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দিয়েছিল যুদ্ধের গতি। যুদ্ধে বীরত্বের জন্য পাওয়া মেডেল কোটের বুকে লাগিয়ে হাজার হাজার 'ওয়ার ভেটেরান' নর্মান্ডিতে আয়োজিত 'ডি-ডে' অনুষ্ঠানে  আসেন প্রতিবছর। সেই নর্মান্ডিতে আনি এরনো জন্মগ্রহণ করেন মহাযুদ্ধের আবহে ১৯৪০ সালে। আটলাণ্টিক বিধৌত ছোট শহর নরমান্ডি হচ্ছে তাঁর পৈত্রিক নিবাস। তাঁর পিতা এখানেই একটি কফিশপ চালাতেন। উপকূলের সাধারণ মানুষ ও সওদাগররা তাঁকে তাদের মতই ওয়ার্কিং ক্লাসের একজন মেয়ে বলে। 

৪. উপকূলীয় অঞ্চলের শ্রমজীবী পরিবারের মেয়ে হয়েও আনি বিখ্যাত রুয়েঁ এবং বোর্দো বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য নিয়ে পাঠগ্রহণ করেন। পরে পরিণত বয়সে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন তিনি। তাঁর লিখন মূলত আত্মজৈবনিক, স্মৃতিকথন ও নারীজগতের বয়ান। প্রথম জীবনে কিছু আখ্যানধর্মী লেখা লিখলেও পরে তিনি সরে আসেন স্মৃতিকথায়। এক নারীর বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাওয়া পৃথিবী এবং পরিপার্শ্ব তাঁর লেখায় বার বার ছায়াপাত করছে। ব্যক্তির সঙ্গে নৈর্ব্যক্তিক সমাজ এবং বৃহত্তর জাতীয় পরিসরের গল্পে তিনি তাঁর নিজের গর্ভপাতের প্রসঙ্গ যেমন এনেছেন, তেমনি মাতৃবিয়োগ, অ্যালঝাইমার্স বা ক্যানসারের কথাও লিখেছেন। স্মৃতিকে মুছে নিয়ে নয়, সঙ্গে নিয়ে যে জীবন তিনি যাপন করেছেন, অকপটে বর্ণনা করেছেন সেইসব ইতিবৃত্ত।

৫. তাঁর বই "আ উওম্যান’স স্টোরি, আ ম্যান’স প্লেস", "সিম্পল প্লেস" বা "আই রিমেন ইন ডার্কনেস" পাঠকের সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে। "প্যাসন সিম্পল" গ্রন্থে এক পূর্ব ইউরোপীয় পুরুষের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক বহুমাত্রিক বর্ণালির ভালবাসাকে উপস্থাপন করেছে। "দ্য ইয়ারস" বা “বছরগুলো” তাঁর একটি কালেক্টিভ আত্মজীবনী। আত্মজীবনী হলেও গ্রন্থে 'আমি'র বদলে তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছেন 'সে' পরিচয়ে। তিনি নিজেকে দেখেছেন প্রবাহমান সময়ের একটি অংশ হিসবে। পুরো এক সময়কালেরই অখণ্ড ও ধারাবাহিক আত্মজীবনী যেন বইটি। বইটির প্রতিটি অক্ষরে মরে যাওয়া অতীতের আত্মারা স্মৃতিমন্দিরের বেঁচে থাকে। এবং শুধু বেঁচেই থাকে না, আছড়ও কাটে জীবন্ত অভিঘাতে। স্মৃতির বলয় থেকে বলয়ে উত্তীর্ণ এমন অদ্ভুত সুন্দর গল্প বিশ্বসাহিত্যে অভিনব।

৬. নোবেল সাহিত্য পুরস্কার দেওয়ার সময় সুইডিশ অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে তাঁর সাহস এবং ধৈর্যের সঙ্গে শিকড়ের সন্ধান, ব্যক্তিগত স্মৃতির সঙ্গে তাঁর মিলন-বিরহের সম্পর্ককে লিখনে তুলে আনার জন্য। তাঁর গল্পগুলো হলো একজন ব্যক্তিমানুষের সঙ্গে বছরে পর বছর ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা আর চড়াই–উতরাইয়ের এক বিবরণ, যা নিজেকে ‘আমরা’ ও ‘তাদের’ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। আমার বইয়ে বর্ণিত ঘটনাগুলো ব্যক্তির, সমাজের, ইতিহাসের, সমাজবিজ্ঞানের ভাগীদার। তাঁর লেখা পড়তে পড়তে পাঠকের মনে এই প্রশ্ন জাগে যে, আমরা কি আসলেই আমাদের যাপিত বছরগুলোকে চেনার জন্য কোনো স্যুভেনির রেখে এসেছি? কিংবা কোনো চিহ্ন? কোনো দাগ? পেরিয়ে আসা যে পরিসরে আমরা আর থাকবো না সেখান থেকে আমরা কি কিছু বাঁচানোর প্রচেষ্টা করছি? 

৭. সবকিছু বিবেচনা করে সাহিত্য বিশারদদের মনে হয়েছিল, সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার এবার সালমান রুশদীর কপালেই আছে। যদিও কেউ কেউ ধারণা করেছিলেন, নোবেল এবার ফ্রান্সে যাবে। সেখানে মিশেল ওয়েলেবেক, আনি, পিয়ের মিশোঁ, হেলেন সিক্সুর মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। তবে আনি' আত্মজৈবনিক উপন্যাস 'লা প্লেস' পাঠ করে অনেকেরই মনে হয়েছিল, ইনি নোবেল পেতে পারেন। ফ্রান্সের একটি ছোট্ট শহরে নিজের বেড়ে ওঠার গল্প বলেছেন তিনি 'লা প্লেসে'। জীবনের উন্মেষ ও বিকাশকালের এই গল্পে তিনি তার পিতার সঙ্গে সম্পর্কের বয়ান করেছেন। বলেছেন বয়োসন্ধি থেকে নারী হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা, ছোট শহর থেকে সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে বড় শহরে মিশে যাওয়ার বাস্তবতা। 'ডি-ডে' অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অসম সাহসী বীর যোদ্ধাদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসলেও নর্মান্ডি উপকূলের মেয়েটি নোবেল হাতে তাঁদের স্মৃতির প্রদীপকে আরও প্রোজ্জ্বল করেছেন। যে সাহস এবং নিখুঁত তীক্ষ্ণতার মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত স্মৃতির শিকড়, বিচ্ছিন্নতা এবং সংযমের কথা উন্মোচন করেন, সেজন্য সম্মানিত হলেন তিনি। শ্রেণি এবং লিঙ্গের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সহজ ভাষায় উপন্যাস রচনার জন্য পরিচিতি তিনি তাঁর প্রধান হাতিয়ার বলে মনে করেন। এই হাতিয়ারই তাঁরে সাহিত্যের রণাঙ্গনে বিজয়ী করেছে।

৮. 'স্মৃতির শিকড়ের সাহসী ও সহজবোধ্য উন্মোচন'-এর স্বীকৃতি পেয়েছেন আনি। প্রজন্মগুলোর সঙ্গে ঘটা প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে আছেন তিনি। আত্মজীবনী লেখার যে চিরাচরিত ঐতিহ্য, তাকে অতীতকালের বন্দিদশা থেকে বর্তমানের চলমানতায় প্রতিষ্ঠাপিত করে পুনর্জন্ম দিয়েছেন তিনি। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর প্রথম আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস, ‘লেস আরমোইরেস ভিদেস’ (Les Armoires vides)। এর দশ বছর পর, ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর দ্বিতীয় আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ‘লা প্লাস’ (La Place)। এই উপন্যাসের জন্য তিনি রেনোদো পুরস্কার জিতেন। সাহিত্যজীবনের একেবারে শুরু থেকেই তিনি কথাসাহিত্য থেকে সরে এসেছিলেন আত্মজীবনীমূলক রচনায়। ঐতিহাসিক এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা একত্রিত করে রচনা করা শুরু করেন একের পর এক আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। 'লা প্লাস’ ছিল বাবার সাথে তাঁর সম্পর্ক এবং ফ্রান্সের এক ছোট শহরে বড় হয়ে ওঠা এবং যৌবনে বাবা-মায়ের থেকে দূরে সরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বিষয়ে। এছাড়া, তাঁর কিশোর বয়স, তাঁর বিয়ে, এক পূর্ব ইউরোপীয় পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, তাঁর গর্ভপাত, আলঝাইমার রোগ, মায়ের মৃত্যু, তাঁর স্তন ক্যান্সারের মতো বিষয়কে তিনি নিজের লেখার বিষয় করেছেন। ২০০৮ সালে ঐতিহাসিক স্মৃতিকথা নিয়ে তিনি লিখেছিলেন ‘লেস অ্যানিস’। সাহিত্য সমালোচকদের একাংশের মতে এটিই তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা। অথচ সারা জীবন আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস লেখা আনি, এই উপন্যাসে প্রথমবার নিজেকে প্রথম পুরুষে উল্লেখ করেন। ‘আমি-আমি’ করে লেখার পরিবর্তে ‘তিনি’ করে লেখেন তিনি। এই উপন্যাসে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরের বিংশ শতাব্দীর ফরাসি সমাজের চেহারা তুলে ধরেছিলেন এক মহিলার গল্পের মধ্য দিয়ে। এই উপন্যাস অনেকগুলো পুরস্কার জিতেছিল। ফ্রান্স ও ইউরোপের বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি ২০১৮ সালে তিনি হেমিংওয়ে পুরস্কার জিতেছিলেন, ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারও পেয়েছিলেন। আনি'র মতো জীবন ও সাহিত্যের এমন ঘনিষ্ঠ মেলবন্ধন রচনা এবং শৈল্পিক রূপান্তর ঘটনোর সৃজনশীল কৃতিত্ব সাহিত্যের ইতিহাসে সত্যিই বিরল।

৯. আনি'র ঠিক আগে ২০২১ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তানজানিয়ায় জন্মগ্রহণকারী যুক্তরাজ্যের লেখক আবদুলরাজাক গুরনাহ। তার আগের বছর নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন মার্কিন কবি লুইস গ্লাক। আনি'র নামের গুঞ্জন আগেও নোবেল কমিটিতে শোনা গিয়েছিল একাধিক বার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাছাই করা হয়নি। ২০২২ সালে অবশেষে তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলেন। ১৯০১ সালে প্রথমবার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত আনি ১৭তম মহিলা আর ১৬তম ফরাসি যিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মান পেলেন। স্টকহোমে আগামী ১০ ডিসেম্বর তাঁর হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। একটি স্মারক ও সঙ্গে ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রনর (৯ লক্ষ ১১ হাজার ৪০০ ডলার) অর্থরাশি পাচ্ছেন তিনি। নোবেল কমিটির তরফে বলা হয়েছে, "আনি বলেছেন যে, লেখালেখি হল রাজনৈতিক কাজ। সমাজে যে বৈষম্য আছে, তা আমার নজরে নিয়ে আসবে লেখালেখি।" সেজন্যই তিনি আরও বলেছেন যে, ভাষাকে ছুরির মতো ব্যবহার করেন তিনি, যা কল্পনার পর্দা ছিঁড়ে ফেলবে। নোবেল কমিটির মতে, "লেখালেখির শক্তির স্বতন্ত্রতায় বিশ্বাস করেন তিনি। তাঁর লেখালেখি কখনও আপস করেনি এবং একেবারে সাধারণ ভাষায় লেখা হয়েছে - একেবারে স্বচ্ছ ভাষায়, যদিও বিষয়গুলো জটিল ও স্পর্শাতীত।" সবাই স্বীকার করছেন যে, ব্যক্তিগত ও ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর পেছনে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে পড়ে থাকা প্রপঞ্চগুলোকে তুলে এনে তিনি যেভাবে আখ্যান ও ইতিবৃত্তের কাঠামো বদলে দিয়েছেন, তা যুগান্তকারী।  

১০. ডি-ডেকে ঘিরে আনি'র জন্মস্থল নর্মান্ডিতে জড়ো হন বিশ্বের নেতারা। করোনার আগে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন, রানি এলিজাবেথ থেকে শুরু করে অন্যরা। নর্মান্ডি অভিযানে যাঁরা নিহত হয়েছেন এবং যাঁরা বেঁচে গেছেন তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলা হয়, "তাঁরা সব ভয়কে তুচ্ছ করে মানুষের মুক্তির জন্য আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। তাঁদের ত্যাগ, তাঁদের কাহিনী আগামী দিনের ইতিহাসে স্বর্ণের অক্ষরে লেখা থাকবে।" সেই বীরদের প্রতিই শ্রদ্ধা জানানো হয়, যাঁরা ছিলেন আমেরিকান, বৃটিশ, কানাডিয়ান, বেলজিয়ান, পোলিশ ও অন্যান্য দেশের যোদ্ধা এবং যাঁরা ফ্রান্সকে মুক্ত করতে গিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন।  ৭৫ বছর আগে নর্মান্ডি উপকূলে ডি-ডে ল্যান্ডিং ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের 'টার্নিং পয়েন্ট', যখন ব্রিটিশ, আমেরিকান, কানাডিয়ান সেনা সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার জার্মান নাৎসি বাহিনীর ওপর আক্রমণ করেছিলেন। ডি-ডে ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির শুরু। মিলিটারি জার্গনে বা পরিভাষায় 'ডি-ডে' হলো এমন একটি দিন, যেদিন 'কমব্যাট অ্যাটাক' বা 'অপারেশন' শুরু করা হয়। সবচেয়ে বিখ্যাত 'ডি-ডে' হলো ১৯৪৪ সালের ৬ জুন- 'দ্য ডে অব নর্মান্ডি ল্যান্ডিং'- নাৎসি দখল থেকে মূল ইউরোপকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মিত্রশক্তির সাঁড়াশি আক্রমণ। এটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ 'সিবর্ন' বা 'সমুদ্রবাহী আক্রমণ'। মিত্রবাহিনীর এক লাখ ৫৬ হাজার সদস্য ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে নর্মান্ডিতে পৌঁছেছিলেন। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার হয় নিহত নয়তো আহত হয়েছিলেন প্রথম দিনেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপ্রতিরোধ্য জার্মান বাহিনীকে প্রচুর আত্মদানের বিনিয়মে পরাজিত করে হটিয়ে দিতে পারার সাফল্য ছিল ঐতিহাসিক। ৭৫ বছর পর ‘স্মৃতির শিকড়ের সাহসী উন্মোচন’ করে নর্মান্ডি উপকূলের মেয়ে আনি এরনো সাহিত্যে নোবেল পেয়ে অর্জন করলেন আরেক ঐতিহাসিক বিজয়।

 

মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন

   

মত-মতান্তর সর্বাধিক পঠিত

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সবদলই সরকার সমর্থিত / ভোটের মাঠে নেই সরকারি দলের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো বিরোধীদল

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status