শেষের পাতা
কিশোরীকে দল বেঁধে ধর্ষণ ও শিশুকে নির্যাতন, আটক ৫
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে
৩ অক্টোবর ২০২২, সোমবার
আশুলিয়ায় কৌশলে এক কিশোরীকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আশরাফুল এবং ইমনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই কিশোরীর সঙ্গে থাকা আরেক শিশুকেও অন্য একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত শনিবার গভীর রাতে আশুলিয়ার পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মণ্ডল। শুক্রবার রাতে পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকায় অভিযুক্ত মো. আশরাফুলের বাড়িতে ভুক্তভোগী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাড়ির মালিক আশরাফুল এবং ঘটনার মূল অভিযুক্ত মো. ইমনসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, আমার বোন আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করে। আমাদের দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। বৃহস্পতিবার আমি বোনের বাসায় বেড়াতে আসি। ওইদিন রাতে বাসার পাশে মোবাইলের দোকানে টাকা তুলতে গেলে কৌশলে স্থানীয় ইমন নামের একটি ছেলে আমার নম্বরটি জেনে নেয়। এর আগেও বোনের বাসায় বেড়াতে এসে তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। এরপর শনিবার রাতে ইমন আমাকে ফোন করে বাসার সামনে আসতে বলে। তার কথামতো পাশের বাড়ির একটি মেয়ে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে আমি বাড়ির সামনে আসলে আমাদেরকে কৌশলে পাশেই ইমনের বন্ধু আশরাফুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই ইমনসহ ৩ জন ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে চলে যায়। একই সময় আমার সঙ্গের শিশুটিকে অপর কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করে তাদের এক সহযোগী। পরে আমাদের চিৎকারে ওই বাসার এক ভাড়াটিয়া এসে তালা ভেঙে দুইজনকে উদ্ধার করেন। ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, আমি বাসাবাড়িতে ময়লা ফেলার কাজ করি তাই অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে থাকতে হয়। মেয়েটা দাদির বাসায় থেকে পাশেই একটা মাদ্রাসায় পড়ে।
গতকাল এলাকার লোকজন আমারে ডাইকা ঘটনাটি জানালে মেয়েকে জিজ্ঞেস করি। তখন সে জানায় তাকে ঘরে আটকাইয়া মারধর করছে এবং পায়জামা খুলছে। ভুক্তভোগী শিশুটির প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শনিবার বিকালে বাচ্চাটা আমার বাসার গেটের সামনে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করার সময় কাঁদতেছিল। আমি কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, তাকে একজন ঘরে আটকে মারধর করেছে এবং তার সঙ্গে থাকা আরেকটা মেয়েকেও আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে রাতেই ৯৯৯-এ কল করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বাড়ির মালিক আশরাফুল ও ইমনসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী নাসের বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরীকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা সে আমাদের বলেছে। তবে শিশুটি রাতে তাকে মারধরের কথা বললেও সকালে ধর্ষণের চেষ্টার কথা বলছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের অভিযোগে রাতেই আটক ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।