বাংলারজমিন
মাইডাস ফাইন্যান্সের নানা অনিয়ম তুলে ধরলেন সাবেক কর্মকর্তা
স্টাফ রিপোর্টার
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবারপুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস ফাইন্যান্স লিমিটেডের নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শামীম আহমেদ। তিনি প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ বিতরণে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ করেন। শামীম আহমেদ মাইডাস ফাইন্যান্সের সাবেক প্রশাসন, মানবসম্পদ ও এস্টেট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমানকে পিকে হালদারের বিশ্বস্ত অনুচর উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দুঃশাসন অব্যবস্থাপনা ও অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগ আনেন শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমান এমডি সিন্ডিকেট গঠন, অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ লেনদেন, কেনাকাটায় দুর্নীতি, অবৈধ নিয়োগ ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছেন। এ ছাড়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল আযম ও পর্ষদ সদস্য সামছুল আলমের বিরুদ্ধে নিজ নামে ঋণ অনুমোদন, জাল-জালিয়াতি, দুর্নীতির প্রমাণ নষ্ট করতে ঘুষ প্রদান, নারী কেলেঙ্কারি, বেতন-ভাতা ম্যানিপুলেশন, মাদক কারবার ও কোম্পানির গাড়ি-বাড়ি দখলসহ বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। এ ছাড়া বর্তমান কোম্পানির সচিব তানভীর হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা কূটকৌশলের অভিযোগ আনেন শামীম আহমেদ। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তার মধ্যে অন্যতম মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড। নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে এ প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রক্রিয়ায় হাজার হাজার আমানতকারী ও বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘ ১৫ বছর চাকরিকালে এসব অনিয়মের সাক্ষী ছিলাম। এ বিষয়ে দুদকে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মাইডাস ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ প্রায় ৫০ শতাংশ দাবি করে শামীম আহমেদ বলেন, সাতটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি পরিমাণ ৪২ থেকে ৯৬ শতাংশ। এরমধ্যে মাইডাস ফাইন্যান্সের খেলাপি প্রায় ৫০ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায় জুন শেষে প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ১৯ শতাংশ। কিন্তু এ তথ্য তিনি অস্বচ্ছ বলে দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, এসব অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হোল্ডার, বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের জানানো নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে। এসব অপকর্মে জড়িতদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। তাই বিষয়টি জনসম্মুখে আনতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আশির দশকে এনজিও হিসেবে কাজ শুরু করে মাইডাস। এরপর ১৯৯৫ সালে মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড নামে যাত্রা শুরু করে। ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।