শেষের পাতা
ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন মেম্বাররা
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবারঅবশেষে ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল জলিল, নুরুন্নবী মেম্বারের ছেলে আলম মিয়াসহ কয়েকজন মেম্বার। গত ২১শে সেপ্টেম্বর ‘বিশ হাজার টাকার চেকে ঘুষ দশ হাজার টাকা’ শিরোনামে মানবজমিনে সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার গভীর রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ঘুষের টাকা ফেরত দেন। এ সময় মেম্বাররা জোরপূর্বক ৩০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে ভুক্তভোগীদের স্বাক্ষর নেন। এদিকে, ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে গতকাল সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা। সাঘাটার ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন অভিযোগের বিষয়টি মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, নদীগর্ভে ঘর হারানোদের জন্য আগস্ট মাসে আর্থিক বরাদ্দ আসে। পরিবারের ধরন অনুযায়ী ২০ হাজার, ২৫ হাজার এবং ৩০ হাজার টাকা ঘর হারানোদের জন্য বরাদ্দ হয়। সাঘাটা উপজেলার নদীভাঙন কবলিত ভরতখালী এবং হলদিয়া ইউনিয়নের ৮৭টি পরিবার প্রায় ৪২ লাখ টাকার চেক বরাদ্দ পায়। চেক বিতরণে সরকারি সব নিয়ম মানতে ভুক্তভোগীদের নয়ছয় বুঝিয়ে তাদের দিয়েই লোক দেখানো চেক গ্রহণ করাসহ প্রশাসনকে দেখানোর জন্য ফটোসেশন করা হয়। পরে চেকগুলো আবার জমা নেন জনপ্রতিনিধি এবং তাদের নিযুক্ত দালালরা।
বিষয়টি নিয়ে মানবজমিন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংবাদ প্রকাশের পর গত ২৪শে সেপ্টেম্বর গভীর রাতে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল জলিল ও নুরুন্নবী মেম্বারের ছেলে আলম মিয়াসহ আরও কয়েকজন মেম্বার ভুক্তভোগীদের বাড়িতে ঘুষের টাকা ফেরত দেয়। এ সময় মেম্বাররা বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের উদ্যেশ্যে জোরপূর্বক ৩০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেয়ার পর ভুক্তভোগীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। গতকাল ভুক্তভোগীরা সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে আলাদা আলাদা অভিযোগ দাখিল করেন। ভরতখালী ইউনিয়নের কুকরার হাট (পোড়াগ্রাম) এলাকার তালেব উদ্দিন, মজনু মিয়া, আশরাফ আলী, মমিনুল ইসলাম, জহুরুল ইসলামসহ আরও অনেকে এসব অভিযোগ দাখিল করেছেন। ফাঁকা স্ট্যাম্পে কেন স্বাক্ষর নেয়া হলো জানতে ভরতখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করে কেটে দেন। পরে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, অভিযোগুলো গরুত্বসহকারে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।