মত-মতান্তর
কোনো কালিমা তাকে স্পর্শ করেনি
জিল্লুর রহমান
১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শনিবার
ড. আকবর আলি খান মারা গেছেন গত রাতে। হঠাৎ এই খবরে আমি এতটাই শোকাহত ও স্তম্ভিত যে কিছু বলতে বা লিখতে ইচ্ছা করছিল না। ভীষণ শরীর খারাপ নিয়েও মার্চ মাসে এসেছিলেন সিজিএস- এর অনুষ্ঠানে। বলেছিলেন আমাকে আর না করা সম্ভব হচ্ছিল না তার পক্ষে। চমৎকার বক্তৃতা করলেন, সব গণমাধ্যম সেটি ফলাও করে প্রচার করলো। এর আগেও সিজিএস- এর একাধিক অনুষ্ঠানে এসেছেন। তৃতীয় মাত্রায় অংশ নিয়েছেন বেশ কয়েকবার। বাংলা আর বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন হৃদয় উজাড় করে। মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলেই হয়তো। সাহসের কমতি ছিল নাতো বটেই, লোভও কাবু করতে পারেনি। আর তাইতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বেচ্ছায়। যে ক’জন হাতে গোনা মানুষ সাহস করে কথা বলতেন তিনি ছিলেন তাদের একজন। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল আমাদের, বাংলাদেশের। দেশে-বিদেশে লেখাপড়া করেছেন। চাকরি করেছেন দেশের ভেতরে-বাইরে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠা আর সততার সঙ্গে। কোনো কালিমা তাকে কখনো স্পর্শ করেনি, কারও কোনো অভিযোগ তাকে ছুঁতে পারেনি।

শিক্ষকতা করেছেন। মেধাবী এই মানুষটি লেখালেখি করেছেন দু’হাতে, বাংলায় এবং ইংরেজীতে; পরিশ্রমী গবেষক ছিলেন। প্রিয় স্ত্রী আর কন্যার শোক তাকে ক্রমাগত একাকী করেছে, কিন্তু থামাতে পারেনি। নিয়ন্ত্রণহীন অসুস্থতা তাকে কখনোই দমাতে পারেনি। অনেকগুলো উল্লেখযোগ্য বই তিনি লিখে গিয়েছেন, যেগুলো থেকে যাবে আজীবন, তার না থাকার মধ্যেও। ড. খান, আমি বিশ্বাস করি, আপনি ভালো থাকবেন ওপাড়ে। কোটি মানুষের ভালোবাসা আপনার সঙ্গে আছে। আপনার অভাব আমরা সবসময় অনুভব করবো সত্যি, কিন্তু আপনি আমদের জন্য যা রেখে গেছেন সেও অনেক, খুব কম মানুষই তা পারে। আপনার কর্ম আমাদের সাহস, শক্তি এবং এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে সকল সময়। আপনার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমাদের সমবেদনা। আল্লাহ আপনার সহায় হোন। শান্তিতে ঘুমান আপনি।