ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মত-মতান্তর

'পাঠ্যক্রমে সুপরিকল্পিতভাবে দুর্নীতিবিরোধী বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন'

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

(১ বছর আগে) ২৫ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৫:১৮ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

mzamin

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয় শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার তার কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপনা পেশাজীবন শেষে অবসরে যাচ্ছেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ও তৎপরতার নানা দিক, বিশেষ করে গণতন্ত্র, নির্বাচন, দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে তার সাথে  কথা বলেন প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ। তার মতামতের চুম্বক অংশ পত্রস্থ হলো। 

আমার দীর্ঘ ৪০ বছরের শিক্ষকতা জীবন আমি ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গেই পার করেছি। আমার অভিজ্ঞতা তাদেরকে ঘিরেই। আমি এ দীর্ঘ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে কাটিয়েছি। আপনারা জানেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয় রাজনৈতিকভাবে। আমি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বর্ণধারী রাজনীতিতে কখনোই জড়িত ছিলাম না এবং এখনো জড়িত নই, সে কারণে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ পাই নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদে বা পদে (যেমন, অনুষদের ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেট, প্রক্টর, প্রভোস্টসহ আরও নানা রকম পদ) কাজ করলে একজন শিক্ষকের অনেক অভিজ্ঞতা হয়। আমার সে অভিজ্ঞতা নেই। আমার যে সামান্য অভিজ্ঞতা তা ক্লাসরুম ঘিরে।

বিজ্ঞাপন
এ ৪০ বছর আমি শ্রেণীকক্ষে বেশি সময় ব্যয় করেছি। সে কারণে শিক্ষার্থীরাই আমার শিক্ষকতা জীবনে প্রধান নায়ক। তাদেরকে ঘিরেই আমার চিন্তা-ভাবনা আবর্তিত হয়েছে। আমি তাদেরকে ভালোবেসেছি। তাদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে পড়াতে চেষ্টা করেছি। আমি নিশ্চিত, শিক্ষার্থীরা যদি আমার ক্লাস করে থাকেন তাহলে তারা আমাকে মনে রাখবেন। তাদের অনেকে বড় বড় পদে দায়িত্বপালন করেন। তার পরেও ব্যস্ততার মধ্যে যখন তারা দূর দূরান্ত থেকে আমাকে স্মরণ করেন, ফোন করে আমার সঙ্গে কথা বলেন, তখন আমার খুবই ভালো লাগে।

প্রায় চল্লিশ বছরের একাডেমিক কাজকর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যায় না। এ সময় আমি কানাডার ওয়াটারলু এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  যথাক্রমে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি করা ছাড়া বাকি সময়টাতে বিভিন্ন গবেষণা কাজ করেছি। বাইশটি বই লিখেছি, দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান গবেষণা জার্ণালে আমার লেখা গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদিত গ্রন্থে অধ্যায় লিখেছি, টিআইবি থেকে আমার লেখা মনোগ্রাফ এবং বই প্রকাশিত হয়েছে। কনফারেন্স পেপার লিখেছি। আগ্রহীরা গুগল স্কলার একাউন্ট বা সিইউ ওয়েবসাইটে আমার প্রোফাইল ভিজিট করে সে সব কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন। টিভি টকশোতে অংশগ্রহণ করেছি। পত্র-পত্রিকায় লিখেছি। আমার কতিপয় বইয়ের অনেক সংস্করণ বেরিয়েছে। তবে সংকীর্ণ কারণে অনেক প্রকাশক অন্যদের কাছে স্বীকার করলেও আমার কাছে এ সত্য স্বীকার করেন না।  

জাতীয় বড় দৈনিকগুলোয় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অবিরতভাবে প্রায় ২৬ বছর কলাম লিখেছি এবং এখনও লিখে যাচ্ছি। তবে পত্রিকার কলামগুলো আমি একটু গবেষণার ভঙ্গিমায় তথ্যসৃদ্ধ করে লিখে থাকি। যে জন্য আমি মনে করি, সমঝদার পাঠকগণ আমার কলাম মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন। আমার লেখা সব প্রকাশিত কলাম আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করি। আমার সৌভাগ্য, ওইসব কলাম পড়ে খ্যাতিমান একাডেমিকগণ মন্তব্য করেন। এই তো মাত্র কয়েকদিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত আমার একটি কলামে অস্ট্রেলিয়ার কুইনসল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. আদিল খান এবং কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ড. আহমেদ শফিকুল হকের মতো খ্যাতিমান একাডেমিক ব্যক্তিত্বগণ ইতিবাচক মন্তব্য লিখেছেন। জাতীয় দৈনিকগুলোয় প্রকাশিত আমার লেখা নিয়ে আমি অনেক পজিটিভ ফিডব্যাক পাই, যা আমাকে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি দিয়েছে। 

আমি নিজে খুব সাধারণ মানের লেখক হলেও কতিপয় বড় মাপের সমাজবিজ্ঞানীর সঙ্গে যৌথভাবে আমার গবেষণা কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এদের একজন হলেন কানাডার ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক প্রফেসর ড. আহমেদ শফিকুল হক। আরেকজন হলেন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইংল্যন্ডের লোক প্রশাসন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. হাবীব জাফরুল্লাহ। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি বিষয়ে গবেষণা করার জন্য টিআইবি সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ দেয়ায় আমি প্রয়াত প্রফেসর মোজাফফর আহমেদ এবং ড. ইফতেখারুজ্জামানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। 

বাংলাদেশে সম্মানিত ও যোগ্য লেখকের সংখ্যা কম নয়। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ লেখকই স্রোতের অনুকূলে নৌকা বাইতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। উজানে নাও বাওয়া লেখকের সংখ্যা কম। অনেকে কলম ধরার আগে কি লিখলে কে খুশি হবেন, বা কোনো পদক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে কি না, এমন চিন্তা করে লেখা শুরু করেন। এরা যত বড় মাপের লেখকই হোন না কেন, আমার কাছে এ সব স্বাধীনতা বিসর্জন দেওয়া লেখকের মূল্য নেই। আমি বরাবর স্বাধীনভাবে লিখেছি। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গায় সক্রিয় থেকে লিখেছি। এ জন্যই আমি আমার লেখায় নির্বাচন, দুর্নীতি প্রভৃতি বিষয়কে অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ আমি মনে করি, যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশে গণতন্ত্রই যদি ভূলুন্ঠিত হয়ে পড়ে তাহলে লেখক হিসেবে আমার দায়িত্ব সে অসুস্থতা নিরাময়ে কলম ধরা। আমি সব সময় মনে রেখেছি, যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা প্রাণ দিলাম, সে গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা হল নির্বাচন। আর নির্বাচন যদি দুর্নীতি ও কারচুপিযুক্ত হয়ে পড়ে তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাহত হয়। সে জন্য আমি নির্বাচন ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আমার লেখায় অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছি। আমার লেখা বই ও প্রবন্ধগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণাই নির্বাচনকেন্দ্রিক বিষয়ের ওপর। এ জন্য আমি যে পিএইচডি থিসিস লিখেছি তাও নির্বাচনী দুর্নীতি বিষয়ের ওপর। এ থিসিসটি গ্রন্থাকারে প্রথমে যুক্তরাজ্য থেকে অ্যাশগেট পাবলিশিং লিমিটেড ২০০১ সালে এবং পরে একই দেশ থেকে ২০১৮ সালে রাউটলেজ প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত তথ্যমতে পাশ্চাত্যের সমাজবিজ্ঞান সাহিত্যে গ্রন্থটি সমাদৃত হয়েছে।

গণতন্ত্রকে কার্যকরী করতে হলে সুশাসনের প্রয়োজন হয়। আর দুর্নীতি হল সুশাসনের শত্রু। দুর্নীতি গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করে দেয়। এ জন্য আমি আমার লেখনীতে সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম এবং এখনও আছি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভিন্ন সময় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিলে আমি আমার লেখনীতে তার কঠোর সমালোচনা করেছি। দুঃখের বিষয়, সুবিধাবাদি লেখকগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার না হওয়ায় প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি আজ ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়েছে। আমি আমার সীমিত শক্তি দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার লেখায় সমালোচনা অব্যাহত রেখেছি। শিক্ষার্থীদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্রিয় করার জন্য আমি প্রায় ১৬-১৭ বছর আগে ‘পলিটিক্স অ্যান্ড করাপশন’ শিরোনামে একটি কোর্স ডিজাইন করেছি যা আমি দীর্ঘদিন থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে ৪র্থ বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে পড়িয়েছি। পরে ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভিন্ন শিরোনামে দুর্নীতির ওপর কোর্স চালু করা হয়েছে। এ কোর্সটি পড়াবার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের বর্ধিত দুর্নীতি যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে আমার বিভাগে সম্প্রতি এই জনপ্রিয় কোর্সটির শিরোনাম এবং কন্টেন্ট আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি আমাকে পীড়িত করেছে। আমি মনে করি, রাজনৈতিক প্রশ্রয় অব্যাহত থাকলে লেখক হিসেবে যুদ্ধ করে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গায় সক্রিয় থেকে আমি সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছি। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শ দিয়েছি। 

আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনকারী একমাত্র দেশ। আমরা কেন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? তরুণ প্রজন্ম অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়। তাদের অনেকে ভাবেন, আমরা মনে হয় উন্নয়নের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। এ কথা একেবারেই ঠিক নয়। আমরা আমাদের আত্মসম্মানের জন্য, রাজনৈতিক অধিকারের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের সম্মানিত ভোটারগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে যে রায় দিয়েছিলেন সে রায়কে ভূলুন্ঠিত করা হচ্ছিল। আমরা তার প্রতিবাদে অস্ত্র ধরেছিলাম। দুঃখের বিষয়, বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আমাদের সর্বশেষ যে দুটি সংসদ নির্বাচন হয়েছে তা যুগপৎ দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আমি এ দুটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনকে একটি টকশোতে ‘নাউজুবিল্লাহ মার্কা নির্বাচন’ হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার পর্যবেক্ষণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারাধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচন বাদ দিলে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে এবং দুর্নীতিকারীরা প্রশ্রয়ও পেয়েছে। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্নীতির ক্ষেত্রে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ফলে একটি নির্বাচনে যে পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে, পরের নির্বাচনে দুর্নীতি হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। বড় বড় অনেক দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত কমিটি করে চাপা দেয়া বহুল প্রচলিত চর্চায় পরিণত হয়েছে। গত নির্বাচনের পর সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। তবে এ নীতি কাগুজে নীতিতে পরিণত হয়ে রয়েছে। দুর্নীতিকারীদের ওপর এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বড় বড় দুর্নীতিকারীদের শাস্তির বদলে অনেকক্ষেত্রে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কাউকে কাউকে বদলি করে দেয়া হচ্ছে। ফলে পরোক্ষ রাজনৈতিক প্রশ্রয় পেয়ে দুর্নীতিকারীগণ অধিকতর বেপরোয়াভাবে দুর্নীতিতে জড়িত হচ্ছেন। আমার মতে, ছাত্রসমাজের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করার জন্য স্কুল কলেজের পাঠ্যক্রমে সুপরিকল্পিতভাবে দুর্নীতিবিরোধী বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। 

আমি শিক্ষাঙ্গণের একজন সামান্য কর্মী। আমার দৃষ্টিতে উচ্চশিক্ষা বিশেষ করে বড় চারটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা এখন ধ্বংসের কার্ণিশে উপনীত হয়েছে। আমি এর অন্যতম কারণ হিসেবে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তির চর্চাকে দায়ী করি । এ রাজনীতিই শিক্ষকদের সকল শিক্ষার্থীর প্রতি সমান আচরণের মহান অহঙ্কারকে দূর্বল করে দেয়। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক আইডেন্টিটিকে মাটিচাপা দিয়ে তার রাজনৈতিক পরিচিতিকে উপস্থাপন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভাবমূর্তিকে ম্লান করে এর রাজনৈতিক ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করে। এই বড় চারটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ/আইন কতৃক। আমার মতে, হয় এ আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনা করা উচিত, না হয় এ আইন যুগোপযোগী করা উচিত। ক্ষেত্র বিশেষে আইন মানবো, আর ক্ষেত্র বিশেষে মানবো না, এমন কর্মকান্ড তো সমর্থন করা যায় না। সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত তিন সদস্যের প্যানেল থেকে এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মাননীয় চ্যান্সেলরের ভিসি নিয়োগ দেবার কথা। কিন্তু বাস্তবে কদাচিৎ তেমনটি হতে দেখা যায়। সরকারের গুডবুকে অবস্থানকারী অধ্যাপকদের মধ্যে যিনি বেশি তদবির করতে পারেন, ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাকেই ভিসি নিয়োগ করা হয়। আমি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচাবার প্রাথমিক চেষ্টা হিসেবে ভিসি নিয়োগ এবং শিক্ষক কর্মকর্তা নিয়োগে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিতে চাই। আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসিকে এ বলে পরামর্শ দেব, বিশ্ববিদ্যালয় একটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক চরিত্র ম্লান করে এর একাডেমিক চরিত্র ফিরিয়ে দিন।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ ও লালন করতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র ছিল তাকে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। উন্নয়নের জিকির তুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অবদমিত করা যাবে না। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে তো উন্নয়নের কথা লেখা ছিল না। সেখানে লেখা ছিল মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, সাম্য, প্রভৃতি বিষয়গুলো। আমরা এখন এ সব থেকে অনেকটাই সরে এসেছি। আমরা ধনী দরিদ্রের বৈষম্য কমাতে পারি নি। মানবিক মর্যাদা বাড়াতে পারি নি। ক্রসফায়ার ও গুমের সংস্কৃতি আমাদের মানবিক মর্যাদাকে ভূলুন্ঠিত করে। সমাজে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষাঙ্গণেও সুশাসন নেই। আমরা যদি শিক্ষাঙ্গণে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারতাম তাহলে অন্য অঙ্গনে এমনিতেই কিছুটা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেত। কারণ, পুলিশ অফিসার, কাস্টম অফিসার বা যে কোনো ক্যাডারের বিসিএস অফিসার হোক না কেন, তাদের সবাই তো শিক্ষাঙ্গণ থেকে ডিগ্রি নিয়ে যাচ্ছেন। তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখে যান ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, হল দখল, সিট দখল, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি, ক্যাম্পাসে লাশ পড়া, জলকামানের উপস্থিতি প্রভৃতি বিষয় তাহলে তারা পরবর্তীতে কর্মজীবনে কিভাবে শৃঙ্খলা চর্চা করবেন? এ থেকে উত্তরণ ঘটাতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনীতির চর্চা কমিয়ে একাডেমিক চর্চা বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের দ্বিমুখী ভূমিকা পালন শোভনীয় নয়। সরকারের মন্ত্রীরা সব সময় মুখে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের রাজনীতি করা উচিত নয়। তাদের লেখাপড়া ও গবেষণা করা উচিত। কিন্তু বাস্তবে যখন ডেপুটেশনে বড় পদে সরকার কোনো অধ্যাপককে নিয়োগ দেন তখন একাডেমিক উৎকর্ষতার বিষয় আমলে না নিয়ে অধিকাংশক্ষেত্রেই সরকারঘনিষ্ঠ নতজানু স্তাবক অধ্যাপকদেরই নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সরকারের এ দ্বিমুখী নীতি থেকে বের হয়ে আসা উচিত।  

রাজনীতিবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে আমার সামান্য লেখালেখির বেশির ভাগই রাজনীতি সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর। প্রশাসন ও ধর্মের ওপরও কিছু লেখালেখি করেছি। তবে এর বাইরেও আমি কবিতা ও গান লিখেছি। লিখেছি প্রবন্ধ, ছোটগল্প ও নাটক। এগুলো অনেকটাই শখের বশে লেখা। এ সব ক্ষেত্রে আমার তেমন সফলতা নেই। তবে ২০২১ সালে আমার দুটি প্রবন্ধের বই প্রকাশ করেছে অধ্যয়ন পরিষদ। এ বই দুটিতে আমি প্রবন্ধগ্রন্থ নিয়ে নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পেরেছি। সাম্প্রতিক দেশকাল পত্রিকায় নুরুল ইমাম খান এ গ্রন্থ দুটির রিভিউ করতে যেয়ে গ্রন্থদুটিকে ‘লালিত্যময় প্রবন্ধগ্রন্থ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আমার বিভিন্ন লেখায় গতানুগতিকতা পরিহার করে আমি নতুনত্ব যোগ করতে চেষ্টা করেছি। অনেক ক্ষেত্রেই আমি এ প্রচেষ্টায় সফল হয়েছি। এ নতুনত্ব বিষয়বস্তু নির্বাচনে, উপস্থাপনায় এবং বর্ণনা বিশ্লেষণে। আমার সর্বশেষ গ্রন্থ 'শিক্ষকতা পেশা ব্যতিক্রমী নেশা',  যা এ বছর জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইটির প্রথম প্রকাশলগ্নের তিন মাসের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ গ্রন্থেও আমি নতুনত্বের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। সনাতনী আত্মজীবনী না লিখে আমি একজন বর্ণহীন সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের দৈনন্দিন শিক্ষাজীবনের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছি। সনাতনী আত্মজীবনীর জিরো থেকে হিরো হবার গল্প এড়িয়ে আমি আমার শিক্ষাজীবনের ঘটনাবলী, সাফল্য এবং ব্যর্থতার কথাগুলো সাদামাটাভাবে লিখেছি। আমার বিভিন্ন লেখায় আমি কখনো একাডেমিক ভঙ্গিমায় সত্য প্রকাশে ভয় পাইনি। এ বিষয়টি পাঠকরা উপভোগ করেছেন। আমার শেষ বইটির পাঠকদের কাছ থেকে যে প্রশংসনীয় ফিডব্যাক পেয়েছি এবং এখনও পাচ্ছি তা আমাকে আশান্বিত করেছে।    

আমি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অত্যন্ত সাধারণ শিক্ষক। লেখালেখির কারণে হয়তো কিছু লোক আমাকে চিনেন। তা না হলে রাজধানীতে না থাকায় আমি একজন অপরিচিত ব্যক্তি। আমি যা কিছু লিখেছি তা খুবই কম। পেশাজীবনের শেষ প্রান্তে এসে কিছু বৈষয়িক কাজে জড়িত হয়ে যাওয়ায় আমার লেখালেখির গতিশীলতা হ্রাস পেয়েছে। আমি মনে করি না যে, আমি আমার সৃজনের জগতকে পরিপূর্ণ করতে পেরেছি। আমি এও মনে করি না যে, আমি জাতীয় পর্যায়ে বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান রাখতে পারছি। আমি নিজের সম্পর্কে যা ভাবি তা হল, দেশ ও জাতির জন্য যা ভাল মনে করি তা আমার বলা উচিত। এ কাজে কে খুশি হলেন, বা কে নারাজ হলেন আমি তার ধার ধারি না। সরকার আমার পরামর্শ না শুনলে আমার মন খারাপ হয় না। তবে আমি বিশ্বাস করি, অনেক সময় দেরি করে হলেও সরকার আমার পরামর্শ আমলে নেন। আমি মনে করি, আমার কাজ আমি করে যাবো। সরকারের কাজ সরকার করবেন। ব্যক্তিজীবনে আমি বিবেক নির্দেশিত হয়ে চলি। আমার পারিবারিক সদস্যগণ আমার মঙ্গল চান। তারা মাঝেমধ্যে আমার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাকে সতর্কতার সঙ্গে লিখতে পরামর্শ দেন। আমি সে পরামর্শ আমলে নেই না। কলমের গায়ে আমি নিয়ন্ত্রণের শিকল জড়াতে কখনো রাজি হই না। স্বাধীনভাবেই লিখি। কিছু কিছু লেখা ঝুকিপূর্ণ হলেও আমি সে ঝুঁকি গ্রহণ করি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আহুত সংলাপে নিমন্ত্রিত হয়ে প্রদত্ত আমার বক্তব্য ইন্টারনেটে বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়েছে। লাখ লাখ দর্শকশ্রোতা আমার বক্তব্যকে খুবই পছন্দ করেছেন কমিশনে আমিসহ ৩০জন নিমন্ত্রিতদের মধ্য থেকে আমরা মাত্র ১৩জন অংশগ্রহণ করেছিলাম। সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, এমন সংলাপে লোক দেখানোর জন্য কয়েকজন বাদে কমিশনের গুডবুকে থাকা ব্যক্তিত্বরাই সাধারণত আমন্ত্রিত হন। তাদের অনেকেরই এজেন্ডা থাকে। কমিশনের প্রজেক্ট পাবার এজেন্ডা, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবার এজেন্ডা প্রভৃতি। সে জন্য তাদের কেউ কেউ এমনভাবে বক্তব্য দেন যাতে করে যুগপৎ সরকার ও কমিশন খুশি হন। আমার মধ্যে এমন কিছু ছিল না। আমি এবারই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে এমন সংলাপে দাওয়াত পাই। আমি সেখানে মন খুলে কথা বলেছি। দেশের জন্য, নাগরিক সমাজের জন্য, গণতন্ত্র ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যা বলা প্রয়োজন মনে করেছি তাই বলে এসেছি। আমাকে বলতে দেয়া হয়েছে। বাধা দেওয়া হয়নি। এ জন্য এ বক্তব্যের শ্রোতাগণ আমার বক্তব্যকে তাদের মনের কথা বিবেচনা করেছেন। লাখ লাখ মানুষ আমার বক্তব্যকে সমর্থন দিয়ে ইউটিউবে আমার প্রশংসা করেছেন। এ জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কমিশন আমার বক্তব্য প্রদানে বাধা সৃষ্টি না করে যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, তেমনি আমার সঙ্গে যথাযথ আচরণ না করায় অনেকের কাছে নিন্দিত হয়েছেন। ৩০ জন আমন্ত্রিতদের মধ্যে কেবলমাত্র আমি ছিলাম ঢাকার বাইরে থেকে আমন্ত্রিত। আমি তাদের আমন্ত্রণে চট্টগ্রাম থেকে সংলাপে অংশগ্রহণ করতে ঢাকায় গিয়েছিলাম। অথচ তাদের অর্থের কোনো অভাব না থাকলেও আমার জন্য তারা কোনো টিএ ডিএর ব্যবস্থা করেননি। আমি ভদ্রতা দিয়ে এর জবাব দিয়েছি। আমার নিজের লেখা নির্বাচনের ওপর সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি বই সিইসিকে সংলাপ শেষে সৌজন্য উপহার হিসেবে দিয়ে এসেছি। নাগরিক সমাজের মধ্যে দেশপ্রেম থাকায় তারা আমার বক্তব্যকে পছন্দ করেছেন। এমন বক্তব্য প্রদান আমার জন্য নতুন কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফোরামে সুযোগ পেলে এবং ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সামনেও আমি এভাবেই নির্ভীকচিত্তে স্বাধীনভাবে কথা বলি।  

তরুণরাই আমাকে আশাবাদি হবার স্বপ্ন দেখান। তাদের কথা ভেবে আমি উজ্জীবিত হই। সমাজ ও দেশের মঙ্গল করার ক্ষেত্রে তারাই চেঞ্জ মেকার। কিছু করলে তারাই করতে পারেন। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাফল্যের মধ্য দিয়ে তরুণরা আমাদের সামনে সে উজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। সংবিধান মেরামত ও গণতন্ত্র উদ্ধারেও তারা চাইলে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। তরুণ শিক্ষার্থীগণ আমার লেখা পড়ে উদ্ব‍ুদ্ধ হওয়ায় আমার খুবই ভালো লাগে। শিক্ষার্থীগণ আমার কোনো লেখা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করলে আমি খুশি হই। আমি বিশ্বাস করি, বর্তমানে আমাদের যে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী সঙ্কট চলছে, বাধাহীন পরিবেশ পেলে তরুণরা তার সমাধানে অবদানমূলক ভূমিকা রাখতে পারবেন। আবার এ কথাও মানতে হয়, বাধা দিয়ে তরুণদের উদ্যমকে দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এক সময় তারা জেগে উঠবেই। তারুণ্যের শক্তির ওপর আমার যুগপৎ শ্রদ্ধা ও আস্থা আছে। তরুণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেকটা বন্ধুর মতো। তারা আমার সাথে মন খুলে গল্প করেন। আমার সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা বিনিময় করেন। এজন্য আমি তরুণ মনোভাবনা সম্পর্কে অবহিত। আমার কেন যেন মনে হয়, দেশের দীর্ঘমেয়াদি অমঙ্গল হতে দেখলে তারা তা বরদাশত করতে চাইবেন না। আমি তরুণদেরকে তাদের সব ভালো কাজে উৎসাহ প্রদান করি।

সাম্প্রতিক চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন বিপদে সময় কাটাবার জন্য আমি কয়েকটি মিনি গল্প লিখে প্রকাশ করি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত না বলে আমার ওই সময়ের লেখা এবং ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় প্রকাশিত মাত্র ১২০ শব্দের ‘মন খারাপ’ নামের গল্পটি তুলে ধরছি। আমার বিশ্বাস, এটি পড়লে সম্মানিত পাঠকগণ আমার গল্পের আকৃতি, বিষয়বস্তু, মেসেজ, ভাব, ও উপস্থাপনা ভঙ্গিমা বিষয়ে ধারণা পাবেন।   

মন খারাপ খারাপ

“জনপ্রতিনিধি হবার চলমান প্রক্রিয়ায় জব্বার সাহেব ইউপি চেয়ারম্যান হন। ভোটারদের সমর্থন লাগেনি। এলাকার দাপুটে কর্মীরাই তাকে চেয়ারম্যান বানিয়েছে। করোনার আবির্ভাবের পর স্বভাব বদলে তিনি জনসেবায় ব্যকুল। বাড়িবাড়ি গিয়ে খোঁজ নেন। সবাইকে দেন সুপরামর্শ। চেয়ারম্যানের এমন জনদরদী রূপ অভূতপূর্ব। করোনা পরীক্ষার জন্য তার এলাকার ২৫ জনের নমুনা সংগৃহীত হয়েছে। দু’চারটি রিপোর্ট পজিটিভ হলে এলাকা ‘লক ডাউন’ হবে। আসবে গরীবের ত্রাণ। এ চিন্তায় জব্বার চেয়ারম্যানের ঘুম হয় না। ত্রাণ বিতরণের পূর্ব-প্রস্তুতিতে তিনি মহাব্যস্ত। ত্রাণসামগ্রী রাখার জায়গা থাকা সত্বেও নিজ বাগানবাড়ির গোপন গোডাউন খালি করিয়েছেন। তিনটে বক্সখাটের পেট থেকে বালিশ আর লেপ সরিয়ে ফেলেছেন। ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি সুসম্পন্ন হবার পরদিন রিপোর্ট এলো। সবগুলো নেগেটিভ। এলাকা নিরাপদ। কেবল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমন সুখবরে সবাই খুশি হলেও জব্বার চেয়ারম্যান বিমর্ষ হয়ে পড়লেন।”

মত-মতান্তর থেকে আরও পড়ুন

   

মত-মতান্তর সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status