বাংলারজমিন
আপত্তিকর অবস্থায় আটক দুই লাখ টাকায় রফাদফা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটকের ঘটনা ঘটেছে। পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে রফাদফা করার অভিযোগ উঠেছে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের গাড়াজান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, তাকে জোর করে তালাকের কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি স্বাক্ষর দেইনি বলে মাতব্বররা মারধরের হুমকি দেন। পরে তাদের ভয়ে তালাকের কাগজে স্বাক্ষর করি। আমাকে কোনো টাকা-পয়সা দেয়া হয়নি। তিনি তার সন্তানকে নিয়ে স্বামীর সংসার করার দাবি জানান। স্থানীয়রা জানায়, ভুক্তভোগী প্রবাসীর অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন একই এলাকার শহিদ ফরাজির ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষক মতিয়ার হোসেন। গত সোমবার রাতে বাড়ির লোকজন তাদের আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক করে। স্বামী প্রবাসে থাকার সুবাদে মাঝেমধ্যেই ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল তার। এ খবর স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশে মাদ্রাসা শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে ঘটনার শাস্তি ও দায় মুক্তি হিসেবে দুই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে তাকে ছেড়ে দেন মাতব্বররা। এদিকে, টাকার বিনিময়ে নারীর ইজ্জত বিক্রির মতো ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সালিশের এমন রায় নৈতিক অবক্ষয়ের উদাহরণ হিসেবেও দেখছেন। স্থানীয় হারুন অর রশিদ ও হযরত আলী বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য সোবহান মহুরি সালিশে এ সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি দুই লাখ টাকায় এ ঘটনা শেষ করে দেন। প্রবাসীর ছোট ভাই জানান, যেহেতু একটা দুর্ঘটনা ঘটেই গেছে তাই আমার চাচা-জেঠাসহ এলাকার লোকজন সালিশ করে ২ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করেন। মেয়েটি আমার ভাইকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। অভিযুক্তের পিতা জানান, আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমার ছেলেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। আমি মাতব্বরদের কথামতো ১ লাখ টাকা সোবহান মহুরির কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাকি টাকা সপ্তাহ খানেক পর দিবো। সালিশের নেতৃত্বদানকারী সোবহান মহুরি টাকা লেনদেনের বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানান ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। ওই অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক পূর্বেও আরও এমনা ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও তিনি জানান। ফুলবাড়ীয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।