বাংলারজমিন
দোয়ারাবাজারে চেলা নদীতে তীব্র ভাঙন
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
৫ জুলাই ২০২৫, শনিবার
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্ত নদী চেলা এখন এক মৃত্যুকূপের নাম। মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর লাগাতার বৃষ্টিতে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে বসতঘর, ফসলি জমি ও গ্রামের একমাত্র সড়ক। নরসিংপুর ইউনিয়নের মন্তাজনগর, নাছিমপুর ও রহিমের পাড়া ভাঙনের মূল ঘূর্ণিপাকে পড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য চোখের সামনে ভিটেমাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে, অথচ প্রতিকার নেই। পূর্ব চাইরগাঁও ও সারপিনপাড়ায় প্রায় ৫০ বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে কিংবা অস্থায়ী ঝুপড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পাথর শ্রমিক শাহজাহান মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘নদী আমাদের সবকিছু গিলে খেয়েছে, পাশে কেউ নেই।’ চাইরগাঁও থেকে সারপিননগর পর্যন্ত এক কিলোমিটার পাকা সড়ক ইতিমধ্যেই নদীতে হারিয়ে গেছে, আরেক কিলোমিটার এখন ঝুঁকির মুখে। ফলে অন্তত ২০টি গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদর ও সুনামগঞ্জ জেলার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নরসিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ভাঙনের কারণে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শমসের আলী মন্টু জানিয়েছেন, সিলেট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইতিমধ্যে ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এলাকাবাসীর গভীর শঙ্কা এই ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ও কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সীমান্তবর্তী চেলা নদী তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।