অনলাইন
মালয়েশিয়া সরকারকে চার্লস সান্তিয়াগো
বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতিপূর্ণ সিন্ডিকেট বন্ধের আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার, কুয়ালালামপুর
(৮ ঘন্টা আগে) ৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ৮:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০২ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নিয়োগে প্রচলিত সিন্ডিকেট-নির্ভর পদ্ধতি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য ও আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস-এর সহ-সভাপতি চার্লস সান্তিয়াগো।
দেশটির ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে, চার্লস সান্তিয়াগোর উদৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বর্তমান শ্রমিক নিয়োগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশি শ্রমিকদেরকে মালয়েশিয়ায় কাজ পেতে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত দিতে হচ্ছে, যার ফলে তারা আগেই বিপুল ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ছেন। এই সিন্ডিকেট ব্যবস্থার পেছনে রয়েছে একটি দুর্বল সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), যাতে কোনো জরিমানা বা লাইসেন্স বাতিলের মতো শাস্তির বিধান নেই।
চার্লস সান্তিয়াগো আরো বলেছেন, “আমরা যদি বাধ্যতামূলক এবং স্বচ্ছ একটি দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তি না করি, তাহলে এই সিন্ডিকেটগুলো শ্রমিক পাচার অব্যাহত রাখবে, মালয়েশিয়ার শিল্প খাত আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশটি আরও কলঙ্কিত হবে। শ্রমিকরা প্রায় দাসত্বের মতো পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে অথচ তাদের জন্য কোনো আইনি সুরক্ষা বা প্রতিকার নেই। সরকারকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে এই দুর্নীতিপূর্ণ ব্যবস্থা ভেঙে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে থাকবে প্রকৃত শাস্তি, স্বচ্ছতা এবং শ্রমিকদের জন্য শূন্য খরচের নিশ্চয়তা।”
এদিকে মালয়েশিয়া কিনি ও ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে পৃথক আরেক সংবাদে জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলও একই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, মালয়েশিয়া যদি বর্তমান চুক্তি সংশোধনে রাজি না হয়, তাহলে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো স্থগিত করতে পারে।
দেশটির গণমাধ্যমগুলো আরো বলছে, ড. আসিফ নজরুল অভিযোগ করে বলেছেন, “আগের সরকার যে চুক্তিটি করেছিল, সেখানে নির্দিষ্ট কিছু এজেন্সিকে সিন্ডিকেট গঠন করে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে এসে দেখছি—সবাই এই সিন্ডিকেট ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে। আমাদের সামনে দুটি পথ—একটি হলো মালয়েশিয়ার শর্ত মেনে ২৫, ৫০ কিংবা ১০০ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো, অথবা পুরোপুরি পাঠানো বন্ধ করা।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারিত কিছু রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়াকে সরবরাহ করা হয়। এই চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সে অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যে মালয়েশিয়া ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ করতে পারে বলে জানা গেছে। তবে সিন্ডিকেট-ভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে, তা নিয়ে বড় ধরণের দ্বিপাক্ষিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।