বিশ্বজমিন
গাজায় সাহায্যপ্রার্থী নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ
মানবজমিন ডেস্ক
(১০ ঘন্টা আগে) ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

ইসরাইলি সেনারা গাজায় খাদ্য সাহায্যের জন্য অপেক্ষমাণ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালিয়েছে। এই কাজটি তারা তাদের কমান্ডারদের সরাসরি আদেশে করেছে। এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে ইসরাইলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎস। খবরে বলা হয়, কয়েকজন ইসরাইলি সেনা সরাসরি জানিয়েছেন, ভিড়ের মধ্যে থাকা মানুষজন কোনো হুমকি সৃষ্টি না করলেও তাদের লক্ষ্য করে মেশিনগান ও গ্রেনেড ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একজন সেনা বলেন, আমরা ট্যাংক থেকে গুলি চালিয়েছি, গ্রেনেড ছুঁড়েছি। একবার কুয়াশার মধ্যে একদল বেসামরিক নাগরিককে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
অন্য এক সেনা বলেন, আমরা যে এলাকায় ছিলাম, সেখানে প্রতিদিন ১ থেকে ৫ জন পর্যন্ত নিহত হতো। পুরো জায়গাটা যেন হত্যার ময়দান। ইসরাইলি সেনাবাহিনী এ ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আইন বা সেনাবাহিনীর নির্দেশের ব্যত্যয় হলে তা তদন্ত করা হবে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা আমাদের বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাতজ এই প্রতিবেদনকে আইডিএফের বিরুদ্ধে রক্তমাখা অপবাদ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে হারেৎস জানিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক আদালতের ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং অ্যাসেসমেন্ট মেকানিজম’ ইতিমধ্যে যুদ্ধাপরাধের সম্ভাব্য ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫৪৯ জন নিহত এবং ৪,০৬৬ জন আহত হয়েছেন। জিএইচএফের বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ বহু সংস্থা সমালোচনা করছে। কারণ এই কেন্দ্রগুলো এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) এই কেন্দ্রগুলোকে মানবিক সাহায্যের ছদ্মবেশে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।
জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হামদা সালহুত বলেন, গাজার মানুষ বলছে এই সাহায্য কেন্দ্রগুলো এখন মৃত্যুর ফাঁদ। পছন্দ মাত্র দুটো— না খেয়ে মরো, অথবা খাবার নিতে গিয়ে গুলিতে মরো। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এ ধরনের একটি রিপোর্ট ছাড়াও এটা বোঝা যায় যে গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যখন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হয়, তখন জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
পাঠকের মতামত
যেন বড়শি দিয়ে মাছ শিকার।